Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রায়াল শেষ না হতেই ভারতের ছত্তিশগড়ের এ কেমন কোভ্যাক্সিন প্রত্যাখ্যান!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:৩৩ পিএম

ভারতীয়দের আবিষ্কৃত করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভ্যাক্সিন’ ট্রায়াল শেষ না হওয়ায় প্রত্যাখ্যান করলো সেই দেশেরই একটি রাজ্য। ভারত বায়োটেকের তৈরি এই ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শেষের পর ফলাফল জনসম্মুখে প্রকাশের আগে সেটি না পাঠাতে অনুরোধ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে রাজ্যটি। ভ্যাকসিন বিতর্কে ঝড় তোলা সেই রাজ্যটির নাম ছত্তিশগড়। সেখানকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি.এস. সিং দেও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে গত এক মাসে তিনি কোভ্যাক্সিন পাঠানো বন্ধ করতে দুবার চিঠি পাঠিয়েছেন। -হিন্দুস্তান টাইমস

কিন্তু এরপরও ট্রায়াল শেষ না হওয়া সেই ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে। ছত্তিশগড়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভারত সরকারের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কোভ্যাক্সিন চাপিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন। বৃহস্পতিবার টি.এস. সিং স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল সমাপ্তি এবং এর পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশের আগে কোভ্যাক্সিন না পাঠাতে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের ওপর জোরপূর্বক কোভ্যাক্সিন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে…’ তিনি বলেন, প্রথমত, ভ্যাকসিন বাধ্যতামূলক নয়, এটা ঐচ্ছিক কর্মসূচি। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র প্রথমবার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন পাঠিয়েছিল, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা কোভিশিল্ডের সঙ্গে কিছু কোভাক্সিনও পাঠায়, যার বিরোধিতা করে আমি একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। এরপরও কেন্দ্র আরেক দফা কোভাক্সিন পাঠিয়েছে। একারণে আমি কিছুদিন আগে আবারো চিঠি পাঠিয়েছি।

কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শেষ না হওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার সেটি ব্যবহার করতে বলার মতো অবস্থানে নেই মন্তব্য করে এ নেতা আরো বলেন, ‘কোভ্যাক্সিন মুক্তভাবে নয়, প্রত্যেকে একটি ফরম পূরণের পরেই তা দেওয়া হচ্ছে। অথচ যখন আপনি কোভিশিল্ড নিচ্ছেন, তখন সরকার কোনো ফরম পূরণ করতে বলছে না। এ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, ওটার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল এখনো শেষ হয়নি।’ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমিত দেশ ভারত গত ৩ জানুয়ারি একসঙ্গে দুটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। এর একটি অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, অপরটি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। অক্সফোর্ডের অনুমতি সাপেক্ষে কোভিশিল্ড উৎপাদন করছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এটি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হলেও ভারতীয়দের আবিষ্কৃত কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। কারণ সেটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনো শেষ হয়নি, নেই সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যও।

বিভিন্ন মহলের দাবি, কোভ্যাক্সিনকে তড়িঘড়ি অনুমোদন দিয়ে একপ্রকারে বিপদ ডেকে আনছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে নানা কথা বলে মানুষকে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা। সর্বভারতীয় মেডিক্যাল সংস্থা এইমসের কর্মকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া বলেছিলেন, ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিতে প্রথমে শুধু কোভিশিল্ড ব্যবহার করা হবে। বিকল্প হিসেবে রাখা হয়েছে কোভ্যাক্সিন। কোভিশিল্ড ব্যবহারের মধ্যেই কোভ্যাক্সিনের আরো তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এর কিছুদিন পরেই ‘বন্ধুত্বের নিদর্শন’ হিসেবে মঙ্গোলিয়া, ওমান, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, বাহরাইন, মালদ্বীপ ও মরিশাসে কোভ্যাক্সিন পাঠানোর ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। এছাড়া ব্রাজিলের মতো কয়েকটি দেশ এই ভ্যাকসিন চেয়েছে বলেও জানিয়েছিল তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ