মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তুরস্ক এখন আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য, শিক্ষা, কূটনৈতিক, পরিকাঠামো, রাজনৈতিক, সামাজিক সম্পর্ক আরো গভীর করছে। তারা এখন নিজেদের ইউরেশিয়ান নয়, আফ্রো-ইউরেশিয়ান দেশ বলছে।
২০০২ সালে সাব-সাহারান আফ্রিকার সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল একশ কোটি ডলার। ২০১৯-এ তা হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। বিদেশে তুরস্কের সব চেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি হলো সোমালিয়া। তুরস্কের সেনা সেখানে সোমালিয়ার সেনাকে প্রশিক্ষণ দেয়। সুদান, নাইজার, চাদ, জিবুতি, গিনির মতো দেশগুলির পাশাপাশি সোমালিয়া তুরস্কের কাছ থেকে ঢালাও সাহায্য পেয়ে থাকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, তুরস্ক পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরো ভালো করাকে খুবই গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। গত ১০ বছরে আফ্রিকায় তুরস্কের কূটনীতিকদের সংখ্যা চারগুণ বাড়ানো হয়েছে। ২০০৯ সালে আফ্রিকার দেশগুলিতে মাত্র ১২টি দূতাবাস ছিল। ২০১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪২। আরো দুইটি দূতাবাস খোলা হচ্ছে।
বিশ বছর আগে এরদোগান ক্ষমতায় আসার পর থেকে তুরস্ক বিশ্বে আরো বড় শক্তি হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। তাই প্রতিবেশী দেশগুলোর বাইরে তাদের নজর পড়েছে। জেনোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তুরস্কের আফ্রিকা নীতি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ ফেডরিকো ডনেলি জানিয়েছেন, ‘২০০৪-০৫ সালে এরদোগান সরকার ঠিক করে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তুরস্ক নতুন করে অগ্রণী ভূমিকা নেবে।’ তুরস্কের দাবি ছিল, তারা বিশ্বের অবদমিত মানুষের হয়ে কথা বলছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বক্তব্য, বিশ্ব পাঁচ দেশের থেকে অনেক বড়। পাঁচ দেশ মানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য। এই নীতিকে সামনে রেখেই এগোচ্ছে এরদোগানের তুরস্ক।
দক্ষিণ আফ্রিকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত এলিফ উলগেন বলেছেন, “তুরস্ক বিশ্বের ভুলে যাওয়া গোষ্ঠীদের হয়ে কথা বলে। জতিসংঘে এরদোগান নির্ভয়ে অবদমিত মানুষ ও দেশের হয়ে কথা বলেছেন। তাই তুরস্কের নেতৃত্বের দিকে এই দেশগুলি তাকিয়ে আছে।”
আফ্রিকার দেগুলির কাছে তুরস্ক নিজেদের ভাইয়ের মতো এবং সাহায্যকারী দেশ হিসাবে তুলে ধরেছে। ইউরোপের দেশগুলির অতীত ইতিহাসের তুলনায় এটা একেবারে উল্টো মেরুর অবস্থান। ইউরোপের দেশগুলি আফ্রিকায় উপনিবেশ স্থাপন করেছিল। ডনেলির মতে, তুরস্কের একটা সুবিধা আছে। অতীতে তারা ঔপনিবেশিক শক্তি ছিল না। অটোমান সাম্রাজ্যের সময় আফ্রিকার অনেক দেশের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ভালো ছিল। পশ্চিমা দেশগুলির ক্ষেত্রে তা বলা যাচ্ছে না। তারা ছিল ঔপনিবেশিক শক্তি। কূটনীতিক উলগেনও জানিয়েছেন, তুরস্কের কোনো কলোনিয়াল-অতীত নেই। আর এই দেশগুলিকে উপনিবেশ হিসাবে থাকার স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়।
সোমালিয়াকে তুরস্ক একশ কোটি ডলার সাহায্য করেছে পরিকাঠামো বানানোর জন্য। তুরস্কের সব চেয়ে বড় দূতাবাস সোমালিয়াতেই। ২০২০ সালে সেনেগালের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময়ও এরদোগান বলেছেন, আফ্রিকার মানুষদের আমরা নিজেদের ভাই-বোন মনে করি। আমরা মানবিকভাবে তাদের কষ্টকে দেখি। তুরস্কের এই আফ্রিকা নীতির ফলে সেদেশের মানুষের মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে। তুরস্ক এখন যে নীতি নিয়েছে, তা কাজে এসেছে। ডিডাব্লিউর সোমালিয়ার সংবাদদাতা জানিয়েছেন, সোমালিয়ার মানুষদের তুরস্কের জনগণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তারা বলবেন, ওরা আমাদের ভাই ও বোন। ডনেলির মতে, আফ্রিকা সম্পর্কে তুরস্কের মানুষের ধারণাও বদলেছে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।