Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজাকারের ছেলে আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মনোনীত!

বগুড়ার ধুনটে নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৬:১৩ পিএম

১৯৭১ সালে বেতন ও অস্ত্রপ্রাপ্ত গেজেটভুক্ত রাজাকারের ছেলেকে বগুড়ার ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করায় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এঘটনায় নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারাও।

দলীয় সূত্রে জানাগেছে, ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার এসএম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ১৯৭১ সালে বেতন ও অস্ত্রপ্রাপ্ত ধুনট উপজেলার রাজাকারদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা গেজেটভুক্ত করা হয়।

ওই রাজাকারের তালিকায় ৪৮ নম্বরে রয়েছেন ধুনট সদর ইউনিয়নের পাকুড়িহাটা গ্রামের মৃত কোরবান আলী ছেলে ইদ্রিস আলী। তার বিরুদ্ধে বিলচাপড়ি গ্রামে হত্যাকান্ড এবং বিলচাপড়ী, কালেরপাড়া, আনারপুর কচুগাড়ী, মালোপাড়া গ্রামে বিভিন্ন বাড়ীঘর পোড়ানো ও লুটপাট এবং থানায় গণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে সেই রাজাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে ধুনট সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী এসএম মাসুদ রানাকে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে। গত ২ ফেব্রæয়ারী ধুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় প্রয়াত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহেদুর রহমান আজাদের পদে এসএস মাসুদ রানাকে মনোনীত করা হয়।

বর্ধিত সভায় ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নূরুন্নবী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে রাজাকারের ছেলেকে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক নেতাকর্মী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, এসএম মাসুদ রানার বাবা ইদ্রিস আলী একজন গেজেটভুক্ত চিহ্নিত রাজাকার। তাই রাজাকারের ছেলেকে কিভাবে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে মনোনীত করা হলো ? অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী থাকাতে কেন তাকে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে এই নিয়ে অনেক নেতাকর্মী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারাও ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। নেতাকর্মীরা আরো জানান, এসএস মাসুদ রানা কোন দিন রাজনীতি না করলেও ২০১০ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ধুনট উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর অদৃশ্য শক্তির জোরে একজন রাজাকারের ছেলে হয়েও ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন তিনি। এরপর থেকে এসএম মাসুদ রানাকে রাজনীতির মাঠে দেখা না গেলেও হঠাৎ করেই তিনি ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন।

তবে এসএম মাসুদ রানা জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। সে ধুনট সদর ইউনিয়নের নির্বাচনে দাঁড়াবেন বলে তার বিরুদ্ধে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি গত ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে পরাজিত হয়। কিন্তু তখন অভিযোগ উঠলোনা কেন ? এবার অভিযোগ তুলেছে একটি চক্র। তিনি দাবি করেন বলেন, তার বাবা আওয়ামী লীগ কৃষকলীগের রাজনীতি করেছেন।

এবিষয়ে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন বলেন, এসএম মাসুদ রানা আওয়ামীলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। তার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করতে পারে। কিন্তু সে অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ