Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান সু চি’র : জাতিসংঘের জরুরি সভা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটির ক্ষমতা গ্রহণের পর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক বিজয় পাওয়ার পর অং সান সু চি›র দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে তাকে এবং অন্য নেতাদের আটক করেছে সেনাবাহিনী। গতকাল সু চি তাকে তাৎক্ষণিক মুক্তি এবং নভেম্বরের নির্বাচনে তার বিজয়কে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মিলিটারি জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

একটি বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর উচিত হবে না জনগণের মতামত বা গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করার চেষ্টা করা।’ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জরুরিভাবে পর্যালোচনা করে দেখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানেই গণতন্ত্র হামলার মুখে পড়বে, সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়াবে।’ এই ঘটনায় জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ দেশটির গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য একটি গুরুতর আঘাত।’ এই অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার করে কারারুদ্ধ করাকে ‘বেআইনি’ বলে বর্ণনা করেছেন। একই ধরণের নিন্দা করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও। যে দেশটি এর আগে মিয়ানমারের ওপর অন্য দেশের হস্তক্ষেপের বরাবর বিরোধিতা করে আসছে, সেই চীন দেশের ‘সব পক্ষকে নিজেদের বিরোধ মিটিয়ে ফেলার’ তাগিদ দিয়েছে। তবে কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্স মিয়ানমারের এই অভ্যুত্থানকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বলে বর্ণনা করেছে।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র শুরু হওয়ার পর প্রায় এক দশক আগে দেশটির ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী আরও একবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির অধিকাংশ স্থানে এখনও টেলিফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। দেশটির সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ শহর রেঙ্গুন থেকে বিবিসির সংবাদদাতারা জানান, বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং শহরটির আশেপাশের এলাকাগুলোর সাথে সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে।

বিবিসির বার্মিজ বিভাগের সংবাদদাতা নিয়েন চান আয়ে জানান, শহরটির আঞ্চলিক পার্লামেন্ট এবং আঞ্চলিক সরকারি অফিসগুলোর দখল নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। বেসামরিক কর্মকর্তাদের এসব দপ্তরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। দেশটির সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, স্টেট কাউন্সির অং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির কয়েকজন মন্ত্রী এবং রাখাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

গত বছর নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চি-র রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি বা এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। সেনাবাহিনী বলছেন, নির্বাচনে জালিয়াতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এক বছর যাবত তারা ক্ষমতায় থাকবে।
এদিকে, গ্রেফতারের পরে ২৪ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সু চি’র অবস্থান জানা সম্ভব হয়নি। সামরিক অধিগ্রহণের মাধ্যমে সম্পর্ণ গণতন্ত্রের পথে মিয়ানমারের অস্থায়ী অগ্রগতি লাইনচ্যুত হয়েছে। গতকাল সু চি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-এর এক প্রবীণ নেতা দাবি করেন যে, তিনি জানতে পেরেছেন সু চি’র স্বাস্থ্য ভাল আছে এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পরে তাকে যে অবস্থানে নেয়া হয়েছিল, সেখান থেকে তাকে সরানো হচ্ছে না।

এ বিষয়ে এনএলডি’র এক নেতা কি টো একটি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন যে, ‘অং সান সু চি এবং ডাক্টর ময়ো অংক সুস্থ আছেন বলে সূত্র মারফত তিনি জানতে পেরেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘অভ্যুত্থানের সময় আটককৃত এনএলডি দলের সংসদ সদস্যদের তাদের বাসভবন ছাড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে, যেখানে তাদেরকে আটকে রাখা হয়েছিলো।’ সূত্র : রয়টার্স।

 



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৩ এএম says : 0
    কেন নিষেধাজ্ঞা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ