Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মধ্যপ্রাচ্যে ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধারে নেমেছে আমেরিকা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের ভ্রষ্ট নীতির কারণে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার ভাবমর্যাদার যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে, তা যথাসম্ভব মেরামত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দল। মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শক্তিগুলির সাথে সম্পর্ক পুনর্র্নিমাণ করতে শুরু করেছে তারা। ট্রাম্পের কিছু সিদ্ধান্ত সহসাই বদলানো হবে না। তবে তারা প্রাথমিকভাবে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।

বাইডেন প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, ওয়াশিংটন ফিলিস্তিনের সাথে সম্পর্ক পুন:স্থাপন করবে এবং পুনরায় সহায়তা শুরু করবে। তারা ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সাথে এক মাসের জন্য আর্থিক লেনদেনের অনুমতিও দিয়েছে। এবং ইরান সমর্থিত হুথিদেরকে ট্রাম্পের শেষ মুহুর্তের সিদ্ধান্তে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। পাশাপাশি, ট্রাম্পের করা অস্ত্র বিক্রয় চুক্তিগুলিকে স্তগিত করা হয়েছে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা প্রাক্তন প্রেসিডেন্টর দু›জন কট্টর আরব সমর্থক সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে প্রভাবিত করবে।

অস্ত্র স্থগিতাদেশের ফলে গত বছর ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের চুক্তির ফলস্বরূপ আবু ধাবির কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি এবং রিয়াদের কাছে মিসাইল বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। আমেরিকার স্বরাষ্ট্র সচিব অ্যান্টনি বিøংকেন বলেছেন, ‘একটি নতুন প্রশাসনের পক্ষে বিক্রয় পর্যালোচনা করা সাধারণ ছিল।’ তবে বার্তাটি থেকে পরিষ্কার অনুভূত হয়েছে: এটি সাধারণ বিষয় থাকবে না। জো বাইডেন এর আগে ২০১৮ সালে জামাল খাশোগির হত্যাকান্ড সহ সউদী প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অধীনে যে অপরাধগুলি সংঘটিত হয়েছে, সেগুলির কারণে রিয়াদের সাথে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সউদী আরবের সমর্থন রোধ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

বাইডেন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার ভূমিকার পর্যালোচনার বিষয়ে এবং অঞ্চলটিতে ট্রাম্পের তৈরি করা উত্তেজনা নিরসনে সচেষ্ট। ট্রাম্প তার শাসনকালে ইসরায়েল ও সউদীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে বিশ্ব শক্তিগুলির সাথে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি ত্যাগ করেন। তাদের জন্য প্রাথমিক পরীক্ষা হবে, ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা, যা এই অঞ্চলে বারাক ওবামার একটি পরিস্কার সাফল্য, যেটি ট্রাম্প বিনষ্ট করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন।

গত সপ্তাহে তেহরান জানায় যে, তারা আগামী মাসে দেশটিতে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শন বন্ধ করে দেবে বলে। এটি একটি কঠোর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে, যা এই চুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাইডেন বলেছেন যে, তেহরান যদি তার পারমাণবিক কার্যক্রম হ্রাস করতে সম্মত হয়, তাহলে আমেরিকা এই চুক্তিতে পুনরায় যোগদান করবে। তবে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ চাপ প্রতিহত করা ইরানী কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে, প্রথমে ওয়াশিংটনকে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।

বাইডেনের জন্য ট্রাম্পের রেখে যাওয়া আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সমস্যাগুলির আপাতত কোনও দ্রুত সমাধান নেই। আমেরিকার ২০০৯ সালের ইরাক আক্রমণ ওয়াশিংটনের নীতিনির্ধারকদের উপর বিশাল বোঝা হিসেবে চেপে বসেছে, এরপর, ২০১১ সালের আরব বিদ্রোহে ওবামার উদসীন প্রতিক্রিয়া এবং এর পরিণতিতে বিশেষত সিরিয়া, লিবিয়া এবং ইয়েমেনের যুদ্ধ এঅঞ্চলে আমেরিকার ব্যর্থতা প্রকাশ করেছে।

মধ্যপ্রাচ্যে সাফল্য পেতে গেলে বাইডেন প্রশাসনকে অতীতের শিক্ষাগুলি মনোযোগ সহকারে ওয়াশিংটনের কূটনীতিক শিবিরে স্থাপন করতে হবে, বহুপক্ষীয়তার আলিঙ্গন করতে হবে এবং তার সহযোগীদের কথা শুনতে হবে। আমেরিকাকে উত্তেজনা লাঘব করার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, তা বৃদ্ধি না করার দিকে নয় এবং টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এটা সহজ হবে না। তবে, বাস্তববাদী উদ্দেশ্যগুলিকে কেন্দ্র করে সুসংগত এবং ধারাবাহিক বার্তা প্রচার করতে হবে। এতে অন্তত আমেরিকার নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বাস পুন:স্থাপনের কঠিন প্রক্রিয়াটি শুরু হবে। সূত্র : ফাইনান্সিয়াল টাইম্স।



 

Show all comments
  • বাশীরুদ্দীন আদনান ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:৪৮ এএম says : 0
    মধ্যপ্রাচ্যে ভাবমর্যাদা আর পুনরুদ্ধার হবে না
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৭:৫৯ এএম says : 0
    Amirat saudi aro onnanno muslim desher rashtro nayokra jodi Al Koranke onushoron korto thole aj tader amader eai durobosta hotona .jekhane pobitro Al Korane bola hoyese euhudi kafer mushrekder shathe isam o muslimder shartho rokkha kore shu shmporko proshta rekho kintu tader porapuri bishash kokhonoi kobe na karon tara shob shomoy islam o mosolmander khoti shadhon korte cheshta korbe....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ