বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমে উঠেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচন।একদিকে রয়েছেন আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র শহর আওয়ামীলীগ সভাপতি বিপুল হালদার,ও দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শহর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম ব্যাপারী অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র হাজী হুমায়ুন।একদিকে চলছে যেমন প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা ,অন্যদিকে চলছে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা সহ প্রচার প্রচারণায় ভাংচুর ,হুমকি সহ বিভিন্ন রকম গুরুতর অভিযোগ। ইতোমধ্যে পাড়া মহল্লা ছেয়ে গেছে পোষ্টারে পোষ্টারে। মাইকিংয়ে মুখরিত হচ্ছে পৌর এলাকার পরিবেশ। প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভোট প্রার্থনা করে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঐদিন ১২৮৯১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে পৌর মেয়র নির্বাচন করবেন। ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ৬৩৩৪ জন ও মহিলা ভোটর রয়েছে ৬৫৫৭ জন। এবারের নির্বাচনে বিএনপি একক প্রার্থী দিতে পারলেও আওয়ামীলীগের দুই প্রার্থী ভোটের মাঠে রয়েছে। তারা উভয়েই কোমর বেধে মাঠে থাকলেও এ মূহুর্তে বিদ্রোহী প্রার্থীর পাল্লা ভাড়ি বলে মনে হচ্ছে। দল থেকে নৌকা প্রতীক দেয়া হয় বর্তমান মেয়র বিপুল কুমার হালদারকে। এদিকে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী হিসেবে জগ প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছে পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম ব্যাপারী। এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলে বিভেদ দৃশ্যমান। অবস্থা বেগতিক দেখে ইতিমধ্যেই স্বতন্ত্র বিদ্রোহী প্রার্থী দিদার উদ্দিন মাসুমের সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দীপ্তকে নৌকা সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলিফ মাহমুদের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে । জানা গেছে জেলা আওয়ামীলীগ,কেন্দ্রীয় নেতা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ নেতৃবৃন্দ তাদের দলীয় দুই প্রার্থীকে নিয়ে সমস্যা সমাধানে বসলেও কোন সুরাহা করতে না পারায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে দিদার উদ্দিন মাসুমকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়, যা দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অবৈধ বলে মাসুম ব্যাপারীর দাবী। দলীয় দুজন প্রার্থী থাকায় সাধারণ ভোটারের কাছে জনপ্রিয় দিদার উদ্দিন মাসুমের পক্ষ নিয়েছেন দলের অধিকাংশ নেতা কর্মী। তারা প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে সমর্থন ব্যক্ত করছেন। কেউ কেউ বহিষ্কার হওয়ার ভয়তে মুখ খুলছেননা। দলীয় প্রার্থীর সাথে থাকলেও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে।অভিযোগ রয়েছে বর্তমান মেয়র আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বিপুল হালদার মেয়র নির্বাচিত হয়ে পৌরসভার উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে নির্দিষ্ট ঠিকাদার দিয়ে করানোর ফলে নিজ দলীয় কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।এ ছাড়াও কাজের গুনগত মান নিয়ে সাধারণ জনমানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।
এদিকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জগ মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা দিদার উদ্দিন মাসুম জেলা নির্বাচন অফিসার ওরির্টানিং কর্মকর্তা বরাবরে তার প্রচারকার্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে বাধা দেয়ার তড়িৎ প্রতিকার চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারী আবেদন করেছেন। দিদার উদ্দিন মাসুম তার লিখিত আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছেন,গত ২৬ জানুয়ারী সন্ধ্যায় তার কর্মীকে হত্যার উদ্দেশ্যে যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটানো হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে কলাপাড়া থানার জিআর মামলা নং ২৩ তাং২৭/১/২১ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ২৮.২৯ তারিখ তার প্রচার কার্যে বাধ প্রদান সহ তার কর্মীদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান, পোস্টার ,ব্যানার ছিড়ে ফেলা সহ বিভিন্ন রকম ভয় ভীতি প্রদর্শনের কথা উল্লেখ করেছেন।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য কলাপাড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৪জন প্রার্থীর মধ্যে অন্য দুজন প্রার্থী হচ্ছে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে হাজী হুমায়ুন সিকদার ও ইসলামী আন্দোলনের হাত পাখা মার্কার মোঃ সেলিম মিয়া। এ ছাড়া সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১০ জন এবং ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৯ জন। আওয়ামীলীগের প্রার্থী বিপুল হালদার জানান,দলের তৃনমুল নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন ভোটাররাও নৌকার প্রতি আস্থা রাখছে। তিনি বলেন কাস্টিং ভোটের ৭০ ভাগ ভোট আমি পাব বলে আশা রাখছি,এবং জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। উন্নয়ন কাজের বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন , স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গুনগতমান বজায় রেখে করা হয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থী দিদার উদ্দিন মাসুম বলেন, নির্বাচনে পেশী শক্তির ব্যবহার না হলে তিনিই জয়ী হবেন। এলাকার তরুণ ও প্রবীণ নেতারা তার পক্ষে কাজ করছেন। তা ছাড়া সাধারণ ভোটাররা পরিবর্তন চান,তারা সাথে আছেন। বিএনপি মনোনীত হাজি হুমায়ূন সিকদার বলেন, গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবছিনা। তবে ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে পারলে ভোট বিপ্লব হতে পারে,আমি মেয়র থাকাকালীন অবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছি সাধারণ মানুষ স্বাভাবিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে আমাকে ভোট দিবেন। সাধারন ভোটাররা চান, একজন যোগ্য মেয়র নির্বাচিত হয়ে আসুক। যিনি পৌরসভার প্রধান সমস্যা যেমন রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ, পয়ঃনিস্কাসন ব্যবস্থা ও মাদক মুক্ত এলাকাসহ সব মিলিয়ে আধুনিক নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে নতুন মেয়রের কাছে এটাই তাদের প্রত্যাশা।
এদিকে সাধারন জনগন একটি সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশের মধ্য দিয়ে নির্ভীঘনে যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পরেন সেটাই প্রত্যাশা করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।