নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঘরোয়া ফুটবলের মর্যাদার আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের মধ্যকার মর্যাদার লড়াইয়ে কেউ জেতেনি। বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে টান টান উত্তেজনার ম্যাচে দু’বার পিছিয়ে থেকেও মোহামেডান ২-২ গোলে ড্র করে রুখে দিয়েছে আবাহনীকে। আবাহনীর পক্ষে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো তোরেস ও স্থানীয় মিডফিল্ডার জুয়েল রানা একটি করে গোল করেন। সাদাকালোদের হয়ে দু’গোল শোধ দেন মালির ফরোয়ার্ড সুলেমানে দিয়াবাতে।
মোহামেডান-আবাহনী দৈরথ দেখতে বৃহস্পতিবার দশ হাজার ধারণ ক্ষমতার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ৬ হাজার দর্শক। দেশের ফুটবলের এই ক্রান্তিলগ্নে কুমিল্লাবাসী দেখেছেন একটি উপভোগ্য ম্যাচ। যা অনেকদিন তাদের মনে থাকবে। নিজেদের হোম ভেন্যুতে সাদাকালোদের উৎসাহ যোগাতে ঢাকা থেকে গিয়েছিলেন মোহামেডানের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও মেঘনা গ্রæপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, মোহামেডানের ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, ক্লাবের স্থায়ী সদস্য ও দৈনিক ইনকিলাবের ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউর রহমান সোহাগ এবং হকি সংগঠক সাজেদ এ এ আদেলসহ বেশ কয়েকজন মোহামেডান কর্তা। শুধু তাই নয়, মোহামেডানকে সমর্থন দিতে কুমিল্লায় গিয়েছিলেন সমর্থক দল মোহাপাগল কর্মকর্তারও। তাদেরকে হতাশ করেনি সাদাকালো জার্সিধারীরা। স্বাগতিকরা নিজেদের সেরাটাই মাঠে ঢেলে দিয়ে রুখে দিয়েছে আবাহনীকে।
এবারের বিপিএলে এই ভেন্যুটি মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংসের হওয়ায় স্টেডিয়ামের গ্যালারি সাদাকালো ও লালসাদা রঙে রাঙানো হয়েছে। গ্যালারিতে উপস্থিত মোহামেডান-আবাহনী সমর্থকরা ম্যাচের পুরোটা সময় জুড়েই আনন্দ-উল্লাসে মেতেহ ছিলেন।
জাতীয় দল ও মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলার প্রয়াত বাদল রায়কে ভুলেননি কুমিল্লাবাসী। এখানকার মাটি ও মানুষের কাছে আজও অ¤øান তিনি। তাইতো দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী দলের ম্যাচে অন্যভাবে হাজির ছিলেন কুমিল্লার সন্তান বাদল রায়। তার ছবিতে মালা পড়িয়ে প্রিয় দল মোহামেডানের সাদাকালো রংয়ের লুঙ্গি ও জামা গায়ে, সাদাকালো পতাকা হাতে গ্যালারিতে হাজির হন জন দশেক মোহামেডান সমর্থক। নিজেদের কৃতি বাদল রায়কে এভাবেই স্মরণ করলেন কুমিল্লার ফুটবলপ্রেমীরা।
কুমিল্লা শহর থেকে কিছুটা দূরে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম। সবুজ ঘাস দেখলেই প্রাণ জুড়িয়ে যায়। এক সময় এই স্টেডিয়ামটি ছিল ক্রিকেটের। গত মৌসুম থেকে ফুটবলের জন্য নির্ধারিত হওয়ায় এখানকার মাঠের পরিচর্যা করেছিল মোহামেডান ও বসুন্ধরা কিংস। দেশের স্বনামধন্য মাঠ বিশেষজ্ঞ মো. ইয়াহিয়া এবার মাসাধিককাল সময় পরিশ্রম করে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম মাঠের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিক মোহামেডানকে চাপের মুখে রাখে আবাহনী। যার ফল তারা পেয়ে যায় ম্যাচের ১৪ মিনিটেই। এসময় নিজেদের সীমানায় ফ্রি কিক পায় আবাহনী। আফগান ডিফেন্ডার মাসিহ সাইঘানির নেয়া ফ্রি কিকের বলে হেড করে আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড কারভেন্স বেলফোর্ট তা তুলে দেন সতীর্থ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো তোরেসকে। সুযোগ সন্ধানী তোরেস সেই বলে মাথা ছুঁয়ে গোল করেন (১-০)। তবে রুখে দাঁড়ায় মোহামেডান। তিন মিনিট পরেই সমতায় ফেরে তারা। একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে বক্সের ভেতরে সতীর্থ আমির হাকিম বাপ্পীর কাছ থেকে বল পেয়ে চমৎকারভাবে গোল করেন মালির ফরোয়ার্ড সুলেমানে দিয়াবাতে (১-১)। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ফের এগিয়ে যায় আবাহনী। এসময় মিডফিল্ডার জুয়েল রানা ডান পায়ের শটে গোল করেন (২-১)। ৬৬ মিনিটে দ্বিতীয়বার সমতায় ফেরে মোহামেডান। এসময় বাঁ প্রান্ত থেকে হাবিবুর রহমানের কর্ণারের বলে শট করে গোলে পরিণত করেন সুলেমানে দিয়াবাতে (২-২)। ম্যাচের বাকি সময় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলা চললেও আর কোনো গোল হয়নি। ফলে আবাহনীর কাছ থেকে এক পয়েন্ট কেড়ে নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক মোহামেডান।
ম্যাচ শেষে মাঠ এবং মোহামেডানের খেলার প্রশংসা করেন আবাহনীর পর্তুগীজ কোচ মারিও লেমোস। তিনি বলেন,‘আমি তিন মৌসুম বাংলাদেশে কাজ করছি। যত মাঠে গিয়েছি এর মধ্যে এটিই সেরা। মাঠের গুণাগুণ ও স্টেডিয়ামের পরিবেশ সব মিলিয়ে দারুণ। এ রকম মাঠেই লিগের খেলা বেশি হওয়া উচিত। আজকের (গতকালের) ম্যাচে প্রথমার্ধেই আমরা ২-১ গোলে এগিয়েছিলাম। খেলোয়াড়রা ভেবেছিল আমরা ম্যাচ জিতে গেছি। তাদের এই মানসিকতা মোহামেডান দুর্দান্তভাবে কাজে লাগিয়েছে। প্রকৃত অর্থে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ম্যাচে সেভাবে ছিলামই না। মোহামেডান ভালো খেলেই ড্র করেছে।’
অন্যদিকে মোহামেডানের ব্রিটিশ বংশদ্ভুত অস্ট্রেলিয়ান কোচ শন লেন বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমি কিছু টেকটিক্যাল পরিবর্তন এনেছি। উরুকে মিডফিল্ডে খেলিয়েছি, পাশাপাশি ফরমেশনেও পরিবর্তন এনেছি। তাই প্রতিপক্ষের পয়েন্টে ভাগ বসাতে পেরেছি।’
৪ ম্যাচ শেষে আবাহনীর ১০ ও মোহামেডানের ৫ পয়েন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।