Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

আপনি হয়তো খেয়াল করে দেখবেন কিছু লোক চমৎকারভাবে মনে রাখতে পারছে, কোনো ঘটনা বা বিষয়বস্তুর পুঙ্খানুপুঙ্খ। আবার খুব সহজেই শিখে নিচ্ছে নতুন কিছু। আর আপনি মনে মনে আক্ষেপ করেন সেই লোকের মতো কেন আপনার স্মরণশক্তি নেই? তবে কি আপনার মেধা কম। না, আপনার মেধা অবশ্যই কম নয়। সকলে একভাবে মনে রাখতে পারে না। কারণ, সবার মস্তিস্কের গঠন একরকম নয়। তবে কয়েকটি সহজ কৌশলে আপনিও বাড়িয়ে নিতে পারেন স্মরণশক্তি বা মেমোরি পাওয়ার।

ব্যায়াম করুন আর শরীরকে সচল রাখুন-ব্যায়াম শুধু আপনার শরীরকেই সচল করে না, মস্তিস্ককেও সচল রাখে। স্থূলতা এবং অতিরিক্ত ওজন আপনার ব্রেনের জন্যও ক্ষতিকর। নিয়মিত ব্যায়াম না-করলে কিংবা শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো সচল না-থাকলে রক্তবাহী নালীগুলোতে চর্বি জমে। ফলে স্বাভাবিক রক্তচলাচল ব্যাহত হয়। মস্তিস্কে রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মস্তিস্কের কোষগুলোও। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন, সচল রাখুন আপনার শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গগুলো।

মানসিক চাপ কমিয়ে আনুন, বিষণ্ণতা দূর করুন। রাগ, ক্ষোভ বা উদ্বেগ আপনার ব্রেনকে কিছু সময়ের জন্য স্থবির করে দেয় যা আপনার স্মরণশক্তি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক চাপের মধ্যে বিষণ্ণতা সবচেয়ে বেশি মস্তিস্কের ক্ষতি করে। বিষণ্ণতা আপনার মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে এবং রক্তে কর্টিসেলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কর্টিসেলের মাত্রা বেড়ে গেলে মস্তিস্কের কার্যকারিতা কমে যায়, বিশেষ করে হিপ্পোক্যাম্পাসের। যেখানে শটর্টার্ম মেমোরি সংরক্ষিত থাকে। তাই বিষণ্ণতাসহ সকল মানসিক চাপ যতদূর সম্ভব কমিয়ে ফেলুন।

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। একটা চমৎকার ঘুম আপনার মস্তিস্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে। ঘুমের সময় সাম্প্রতিক সময়ের তথ্যগুলোকে মস্তিস্ক সংরক্ষণ করতে থাকে। আর ঘুমকে বলা হয় মেমোরি চার্জার। ঘুমের সময় আপনার মেমোরি পরবর্তী স্মৃতি ধরার জন্য প্রস্তুত হয়। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারেন।

যে বিষয়গুলো স্মৃতিতে রাখতে চান তা লিখে ফেলার অভ্যাস করুন। একবার লেখা বিশবার পড়ার সমান। এটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। লেখার সময় মস্তিস্কে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তপ্রবাহের পরিমাণ বাড়ে। তাই লিখে রাখুন ডায়রিতে, ই-মেইলে বা ব্যক্তিগত ব্লগে।

নিয়মিত গান বা গজল শুনুন। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন স্মৃতির সাথে গান শোনার কী সম্পর্ক। গবেষকরা দেখিয়েছেন কিছু সংগীত স্মৃতিশক্তি বাড়াতে উপকারী। ব্যাপারটা এ রকম-কোনো ঘটনার সময় আপনি যদি গান শোনার সময় সেই ঘটনার আবহের স্মৃতি আপনার মস্তিস্কে জেগে উঠবে।

পুষ্টিকর খাবার খান। মস্তিস্কের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাজা ফলমূল, গাঢ় সবুজ শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, গমের রুটি প্রভৃতি প্রোটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। বাসি-দূষিত খাবার খাবেন না। আর ধূমপান ও মাদক সেবন থেকে বিরত থাকুন। এগুলো আপনার মস্তিস্কের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর।

চর্চা আর প্রচেষ্টার মাধ্যমে সব কিছু অর্জন সম্ভব। একটু চেষ্টা করলেই বাড়িয়ে নিতে পারেন স্মৃতিশক্তি, মনে রাখার ক্ষমতা।

আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্মৃতিশক্তি
আরও পড়ুন