Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিসের অজুহাত থেকে মুক্তি চান কুক

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ দলের দুই কোচ ওটিস গিবসন এবং জন লুইসও আছেন কোয়ারেন্টিনে। কিন্তু প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আর ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের সঙ্গে ব্যস্ত দিনই কেটেছে ক্রিকেটারদের। অনুশীলনে কুকের চাঞ্চল্য যেন একটু বেশিই। কে জানে, পরশু শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া-ভারতের সিডনি টেস্টের শেষ দিনের খেলা দেখেই তিনি অনুশীলনে নেমেছিলেন কিনা! অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের ব্যর্থতা দেখেই হয়তো তার মনে হয়েছে ক্যাচ অনুশীলনে জোর দেওয়া দরকার। সিরিজের প্রথম ম্যাচ থেকেই সেরা ফিল্ডিং দেখতে চান কুক। গ্রাউন্ড ফিল্ডিং নিয়ে প্রায়ই বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। তার সঙ্গে ক্যাচ মিস তো থাকছেই। অনেক জয়ই তাই হাতছাড়া হয়েছে এভাবে।
বাজে ফিল্ডিং হলে শুনতে চাইবেন না দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার অজুহাত। আগামী দুই বছরের মধ্যে ক্রিকেটাররা উন্নতি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি। গতকাল অনুশীলন শেষে ফিল্ডিং কোচ বলছিলেন, ‘তাদের ধীরে ধীরে অনুশীলনের মধ্যে ফিরিয়ে আনছি, মাঠের নড়াচড়া এবং মৌলিক বিষয় নিয়ে কাজ করছি। যেহেতু অনেক দিন পর ফিরছে, বিশেষ করে থ্রোয়িংটা আগের জায়গায় আনার চেষ্টা করছি। সিরিজের কাছাকাছি যেতে যেতে আমরা অনুশীলনের মাত্রা আরও বাড়াব।’
উইন্ডিজ সিরিজকে সামনে রেখে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল তৃতীয় দিনের মতো অনুশীলন করেছেন ক্রিকেটাররা। দিনের শুরুতেই ফিল্ডিং নিয়ে লম্বা সময় অনুশীলন করতে দেখা যায় তাদের। গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি থ্রোয়িং ও ক্যাচ নিয়েও অনুশীলন করেছে তারা। এরপর নেটে বোলিং ও ব্যাটিং অনুশীলনে যোগ দেন ক্রিকেটাররা। সিরিজ শুরু হবে ওয়ানডে দিয়ে। মুশফিকুর রহিম তাই দীর্ঘ সময় করলেন উইকেটকিপিং অনুশীলন। টেস্টের উইকেটকিপিং ছাড়ার পর তিনি এখন শুধুই সাদা বলের উইকেটকিপার।
কুকের ফিল্ডিং ক্লাসে এদিন অনেকটা সময় কাটিয়েছেন চার বোলার- মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আল আমিন হোসেন, তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। তরুণ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম ও ইয়াসির আলীও ছিলেন সঙ্গে। তাঁদের যেন ক্রিকেট বলে ফুটবলের গোলকিপিং শেখাচ্ছিলেন ফিল্ডিং কোচ! গোলপোস্ট তৈরি করে বল ছুড়ে মারছিলেন একেকবার একেক দিকে। সাইফউদ্দিন-তাইজুলদের গোলকিপারের মতো একবার ডানে, আরেকবার বাঁয়ে ঝাঁপিয়ে বল ধরতে হচ্ছিল। এরপর যথারীতি বাউন্ডারিতে উঁচু ক্যাচ ধরার অনুশীলন।
এদিন কুকের সঙ্গে যাঁরা বেশি সময় কাটালেন, তাঁদের অনেকেই ফিল্ডিংয়ে বেশ দুর্বল। ম্যাচের সময় আল আমিন–ইয়াসিরদের মাঠে লুকিয়ে রাখার জায়গা খুঁজতে হয় অধিনায়ককে। তাঁদের ফিল্ডিংয়ে উন্নতি আনতে আলাদাভাবেই নজর দিচ্ছেন কুক। বিশেষ করে পেসারদের ফিল্ডিংয়ে উন্নতি দেখতে চান তিনি, ‘অনেকেরই ফিল্ডিংয়ের প্রতি দারুণ আগ্রহ। তারা ফিল্ডিং নিয়ে পরিশ্রম করছে। অতিরিক্ত কাজ করতে চাইছে এবং দারুণ চেষ্টা করছে, যা আমি পছন্দ করি। তবে তাদের কৌশল নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে, বিশেষ করে ক্যাচিং এবং গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে। পেসারদের থ্রো করার হাত বেশ ভালো হয়। আশা করি, এই উৎসাহ তাদের ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করতে সাহায্য করবে।’
অনুশীলনের দ্বিতীয় দিন একটা দুঃসংবাদও শুনতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। নেটে তামিম ইকবালের শট ধরতে গিয়ে বাঁ হাতের আঙুল ফাটিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। চোটের জায়গায় সেলাই লেগেছে। তবে পর্যবেক্ষণের জন্য দলের সঙ্গেই রাখা হয়েছে তাঁকে। এছাড়া তরুণ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান পারভেজ হোসেন পরশু হোটেলেই উঠতে পারেননি। কুঁচকির পুরোনো ব্যথা ফিরে আসায় দল থেকে ছিটকে গেছেন তিনি।
তবে করোনা পরবর্তি নতুন করে শুরুর আগে ভাবনার জায়গা তসিকিনকে ঘিরেই। মাশরাফি বিন মুর্তজা নেই, উইন্ডিজ সিরিজে তার অল্প বিস্তর অভিজ্ঞতা বাড়তি প্রাপ্তি হতে পারতো বাংলাদেশ শিবিরে। তবে এই চোট উল্টো চিন্তার ভাজ কপালে ফেলেছে নির্বাচকদের। তবে বিসিবির চিকিৎসক মনজুর হোসেন চৌধুরি জানান, দুটি সেলাই লাগলেও চোট গুরুতর নয় তাসকিনের, ‘তাসকিনের বাম হাতের ওপরে কেটে গিয়েছে। গভীর ক্ষত হয়নি। দুটি সেলাই লেগেছে। ওকে ৭২ ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখছি। এরপর ফিজিও ও ট্রেইনার চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।’ বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও তাকে পাওয়ার ব্যপারে শোনালেন আশার বানী, ‘তাসকিন অনুশীলনের সময় বাঁ হাতের আঙুলে ব্যাথা পেয়েছিল। আঘাত খুবই ছোট, গভীর নয়। দুটি সেলাই লেগেছে। ওয়ানডে সিরিজে খেলতে তার কোন শঙ্কা নেই বলে মনে করছি।’ তাসকিন নিজেও দুই-তিন দিনে মধ্যে মাঠে ফিরতে আশাবাদী। বললেন, ‘দুটি ছোট সেলাই লেগেছে। আশা করছি, দুই-তিন দিনের মধ্যে মাঠের অনুশীলনে ফিরতে পারবো।’
২০ জানুয়ারি প্রথম ওয়ানডের আগে টাইগাররা নিজেদের মধ্যে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন। বিকেএসপিতে ম্যাচ দুটি হবে ১৪ ও ১৬ জানুয়ারি। চোটে পড়ায় অনিশ্চিত হয়ে গেল অন্তত প্রস্তুতি ম্যাচে তাসকিনের খেলা।
আগামী ২০ জানুয়ারি মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে খেলবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২২ জানুয়ারি একই ভেন্যুতে হবে দ্বিতীয় ম্যাচ। ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হবে শেষ ওয়ানডে। এরপর আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে চার দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর জহুর আহমেদে সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে ৩ ফেব্রæয়ারি। ১১ ফেব্রæয়ারি থেকে দ্বিতীয় টেস্ট মাঠে গড়াবে মিরপুরে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুক

১৫ জুলাই, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ