মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্ট করার প্রস্তুতি চলছে। ট্রাম্পের সমর্থকরা গত সপ্তাহে যেভাবে সহিংসতা চালিয়েছে এবং দেশটির গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ক্যাপিটাল হিলের ভেতর যেভাবে তান্ডব চালানো হয়েছে, তাতে ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবি উঠেছে। খবর বিবিসি ও আনন্দবাজার পত্রিকার। আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছেন হাউজ অব রিপ্রেজেনটিভস-এর হুইপ জেমস ক্লাইবার্ন। আগামী ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের ক্ষমতার শেষ দিন। তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে উন্মত্ত জনতাকে ‘অভ্যুত্থানে প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগ আনারও পরিকল্পনা আনছেন। অভিশংসন প্রক্রিয়া পরিকল্পনা মোতাবেক এগোলে ট্রাম্প হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দুইবার অভিশংসন হওয়া একমাত্র প্রেসিডেন্ট। এজন্য ট্রাম্পকে অভিশংসন অভিযোগ হাউজে ভোটের মাধ্যমে পাস করতে হবে। তারপর সিনেটে যাবে বিষয়টি এবং সেখানে প্রেসিডেন্টকে অপসারণ করার জন্য প্রয়োজন হবে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট। কেবলমাত্র ডেমোক্র্যাট নয় এমনকি সেদিন রিপাবলিকানদের অনেকেই তার বিরুদ্ধে সমর্থকদের উস্কে দেওয়ার অভিযোগ করছেন। রিপাবলিকান সেনেটর প্যাট টুমিও ট্রাম্পের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি পদত্যাগ করে এখন বিদায় নেন তাহলে এটাই বোধয় দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে। কিন্তু এটা হয়তো হবে না, তা জানি আমি। তবে এটা হলেই ভালো হবে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও কংগ্রেস চাইলে তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনতে পারবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা ছাড়ার পরেও কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসন প্রস্তাব পাস করে উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো যাবে। ফলে ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়লেও অভিশংসন তার পিছু ছাড়ছে না। এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়। হাউসের ডেমোক্র্যাট সদস্যেরা অভিশংসনের জোর প্রস্তুতির মধ্যে রয়েছেন। বর্তমানে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সিনেটে নেই। তবে কয়েকদিন পর নতুন যে সরকার ক্ষমতা নিতে যাচ্ছে, সেখানে সিনেটেও তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়, মেয়াদ শেষের পরে সিনেটে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন আনা হলে তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এখন পর্যন্ত কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছাড়ার পর অভিশংসনের মুখোমুখি হননি। তবে ১৮৭৬ সালে যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী উইলিয়াম বেকন্যাপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস। হাউসে ভোটাভুটির মাধ্যমে অভিশংসন এনে তাঁকে অপসারণ করা হয়। ভোটাভুটির কিছুক্ষণ আগে উইলিয়াম বেকন্যাপ হোয়াইট হাউসে গিয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউলিসিস গ্রান্টের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে হাউস অভিশংসন প্রস্তাব সিনেটে পাঠায়। সিনেটেও ভোটাভুটি হয়। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটর তাঁকে অভিশংসনের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু দুই-তৃতীয়াংশ ভোট জোগাড় না হওয়ায় উইলিয়াম বেকন্যাপ অভিযোগ থেকে মুক্ত হন। এ ঘটনার উদাহরণ টেনেই বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হলেও তার বিরুদ্ধে সিনেটে অভিশংসন আনা যাবে। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞেরা মতামত দিয়েছেন। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক ক্যাস সানস্টেইন বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা শুধুই ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। ক্যাস সানস্টেইন “ইমপিচমেন্ট : এ সিটিজেন’স গাইড” বইয়ের লেখক। আরেকদল বিশেষজ্ঞ মনে করে, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে অভিশংসনে ভোটের সময় কেউ ক্ষমতায় থাকলে, পরবর্তী সময়ে সেই ব্যক্তি ক্ষমতায় না থাকলেও সিনেটে অভিশংসনের বিচার করা যাবে। ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা চ্যাপেল হিলের আইনের অধ্যাপক মাইকেল গারহার্ডট বলেছেন, ‘হাউসে একবার অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হলে সিনেট তার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুততা বা ধীর গতি নিয়ে আমি কোনো সাংবিধানিক সমস্যা দেখি না।’ তৃতীয় মতটি হলো, প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছেড়ে যাওয়ার পরেও অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। অভিশংসন নিয়ে লেখা এক নিবন্ধে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লর অধ্যাপক ব্রায়ান কাল্ট লেখেন, ‘বিলম্বে অভিশংসনের পক্ষে মজবুত সাংবিধানিক ভিত্তি আছে।’ সিএনএন, এনবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।