Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুয়াকাটায় চাঁদার দাবীতে যুবলীগ কর্মীকে মারধরের অভিযোগ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২১, ৬:০৫ পিএম

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবীতে পৌর যুবলীগের সদস্য রফিক ফরাজীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসময় রফিকের সাথে থাকা ১৭ হাজার টাকা এবং একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ার হাওলাদার’র উপস্থিতিতেই হোসেন পাড়া এলাকার মো. রফিক ও হালিমের নেতৃত্বে ৭-৮জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী মারধর ও জীবন নাশের হুমকি দেয় হয় বলে অভিযোগ করা হয়। কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনের জের ধরে রবিবার রাতে জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগ নেতা নুরুজ্জামান ও আব্বাসী হত্যা মামলার আসামীরা এ চাঁদা দাবী এবং মারধরে অংশ নেয়। এরা সকলেই বিএনপি কর্মী। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রশিদ সরকার জানান, রফিক মনিরের ফলের দোকানের সামনে অবস্থান করছিল। হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী যুবলীগ সদস্য রফিককে অতর্কিত ভাবে মারধর করে। মারধরে অংশ নেয়া এরা সকলেই নবনির্বাচিত পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের আত্মীয় স্বজন। আব্দুর রশিদ আরও বলেন, এসময় মেয়র আনোয়ার হাওলাদার পুলিশ বক্সে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, মেয়র নির্বাচিত হবার পর দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগেই তার লোকজনের এমন কর্মকাণ্ড আমাদের হতবাক করেছে। এসময় তিনি সহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন দাবী করেন।

পৌর যুবলীগ সদস্য রফিক ফরাজী বলেন, কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনের পর হোসেন পাড়া এলাকার রফিক,হালিম, মতিউর.মনির,আনোয়ার, বায়েজীতসহ নবনির্বাচিত মেয়রের স্বজনরা তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছে। অন্যথায় কুয়াকাটা ছেড়ে চলে যাবার হুমকি প্রদান করে। এমনকি তার বাড়ী ও চলাচলের পথ রোধ করে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। রবিবার রাতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরছিল। চৌ-রাস্তার মোড়ে মনিরের ফলের দোকানের সামনে আসলে অতর্কিত ভাবে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে এলোপাথারী কিল ঘুষি দিতে থাকে। তাদের সাথে আরও ৭-৮জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী এদের সাথে ছিল। রফিক দাবী করেন নবনির্বাচিত মেয়রের নির্দেশেই তার উপর এমন হামলা করা হয়। ফল বিক্রেতা মনির অভিযোগ করেন,মারধরের ঘটনার সাক্ষী না হতে তাকেও হুমকি দেয়া হয়েছে। এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ছালাম গাজী অভিযোগ করেন,নির্বাচনের পর তার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে হাঁস মুরগী সহ তার ঘরের জিনিসপত্র লুট ও ভাংচুর করেছে নবনির্বাচিত মেয়রের লোকজন।

কুয়াকাটা পৌর যুবলীগের আহবায়ক ইসাহাক শেখ জানান,নৌকার সমর্থক জাকির হোসেন,আবু হানিফ,ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ছালাম গাজী,মোঃ মোশাররফ,পৌর যুবলীগ নেতা নুরুজ্জামান সহ একাধিক নেতাকর্মীকে মারধর ও হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি আর বলেন,আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ,যুবলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও মারধর করা হচ্ছে। যুবলীগের আহবায়ক অভিযোগ করেন, হাইব্রিড ও সুবিধাভোগী কতিপয় নেতা নবনির্বাচিত মেয়রের ছত্রছায়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর চড়াও হচ্ছে। এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সদ্য পরাজিত মেয়র আঃ বারেক মোল্লা বলেন, পৌর নির্বাচনের জের ধরে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মারধর ও নানা ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন,হাইব্রিড ও দলছুট কতিপয় সুবিধাভোগী সন্ত্রাসী নবনির্বাচিত মেয়রের ইন্ধনে এসব করছে। এবিষয়ে তিনি পটুয়াখালী পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছেন বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, রোববার রাতে জিরো পয়েন্টে পুলিশ বক্সে তিনি সহ বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী শাহজাহান আকন ওসি মনিরুজ্জামানের সাথে কথা বলছিলেন। এসময় পুলিশ বক্সের বাহিরে রফিক তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছিল। ওসি নিজেই এর প্রত্যক্ষদর্শী। মেয়র আরও বলেন,তার কোন সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। তার কোন লোকে কাউকে মারধর কিংবা চাঁদা দাবী করেনি। এটা একটি সাজানো নাটক।

মহিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন,রাতে তিনি পুলিশ বক্সে অবস্থান করছিলেন। এসময় হৈ চৈ ও লোকজনের জটলা দেখতে পান। কি হয়েছে জিগ্যেস করতে জড়ো হওয়া লোকজন যার যার মত চলে যায়। মারধর কিংবা চাঁদা দাবীর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পটুয়াখালী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ