নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ঘরোয়া ফুটবলের মৌসুমসূচক টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয় করলো বসুন্ধরা কিংস। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে তারা ১-০ গোলে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। বিজয়ী দলের হয়ে একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরা। ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এএফসি কাপের প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত হলো বসুন্ধরার। টুর্নামেন্টের গত তিন আসরের দু’টি চ্যাম্পিয়ন ও একটি রানার্সআপ ট্রফি এখন বসুন্ধরা কিংসের শোকেসে। তাই তো ফাইনাল শেষে কিংস শিবিরে আনন্দ-উল্লাস। ফুটবলাররা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরছেন, স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুেজেন শিষ্যদের সঙ্গে করমর্দন করে পিঠ চাপড়ে বাহবা দিচ্ছেন। সঙ্গে গ্যালারিতে বাজছে বাদ্য-যন্ত্র। অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র সাইফ শিবিরে। প্রথমবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে উঠেও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ছোয়া হলো তাদের। ফাইনালে জিততে না পেরে হতাশ সাইফ স্পোর্টিংয়ের বেলজিয়ান কোচ পল জোসেফ পুট। এ হতাশা ছড়িয়ে পড়ে তার শিষ্যদের মাঝেও। অথচ শেষটা এমন হওয়ার কথা ছিলনা অধিনায়ক রিয়াদুল হাসান রাফিদের। খেলার ধারা অনুযায়ী তারা যদি গোল পেতেন তাহলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো।
শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচ। তাই সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়েই খেলেছেন বসুন্ধরা-সাইফের ফুটবলাররা। তবে অপেক্ষাকৃত ভালো খেলে গোলের বেশি সুযোগ সৃষ্টি করেছে সাইফ স্পোর্টিংই। বলা যায় কাল ম্যাচের প্রথমা ও দ্বিতীয়ার্ধের বেশির সময়ই খেলা ছিল সাইফের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বার বার ব্যর্থ হয়েছে তারা। ফুটবল গোলের খেলা তা আবারো প্রমাণ হলো। বিরতির আগে যেখানে সাইফ একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি, সেখানে বসুন্ধরা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নিশ্চিত গোলের প্রথম সুযোগটিই কাজে লাগিয়ে ট্রফি জিতে নিলো।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ফাইনালে ম্যাচের ৪ মিনিটে বসুন্ধরা কিংসের মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ক্রসে তপু বর্মণ বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করে দেন রেফারি মো. জালাল উদ্দিন। পরোক্ষণেই কিংসের আক্রমণভাগকে রুখতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন সাইফ কোচ পল পুট। অফসাইডের ফাঁদ তৈরি করেন রহমত মিয়া ও রিয়াদুল হাসান রাফিরা। প্রথমার্ধে সাইফের ফাঁদে কয়েকবারই পড়তে দেখা গেছে মতিন মিয়া ও অস্কার বেসেরাদের। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিলেও ম্যাচের ১৯ মিনিটে দারুণ আক্রমন শানায় সাইফ। এসময় মাঝ মাঠ থেকে নাইজেরিয়ার মিডফিল্ডার জন ওকোলির বাড়িয়ে দেয়া বল খুঁজে নেয় ইকেচুকু কেনেথ এনগোকেকে। বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়া নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ড বল মারতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। শট না নিয়ে ওকোলিকে দেন। তার শট তপুর গায়ে লেগে ফিরে আসে। সামনে পাওয়া বলে আরিফের বুলেট গতির শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে গেলে নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় সাইফ স্পোর্টিং। গোলশূণ্য অবস্থায় দু’দল বিরতিতে গেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কাঙ্খিত গোলটি পেয়ে যায় বসুন্ধরা। যে গোল শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের টানা দ্বিতীয় ট্রফি এনে দেয় কর্পোরেট দলটিকে। ম্যাচের ৫২ মিনিটে রবসনের ডিফেন্স চেরা পাস ধরে বল নিয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সের মধ্যে ঢুকে বাঁ পায়ের প্লেসিং শটে গোল করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরা (১-০)। আর এই গোলেই সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় সাইফের কেনেথেকে স্পর্শ করেন তিনি। দু’জনেরই গোল পাঁচটি করে। তবে ম্যাচের ৬৯ মিনিটে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর দৃঢ়তায় বেঁচে যায় বসুন্ধরা কিংস। এসময় বক্সের বাইরে থেকে কেনেথের জোরালো শট লাফিয়ে উঠে কর্ণারের বিনিময়ে ফেরান জিকো। তার কারণেই সমতায় ফেরা হয়না সাইফের। মিনিট চারেক পর গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল সাইফ স্পোর্টিং। ৭৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে ওকোলির বাঁ পায়ের মাটি কামড়ানোর শট পোস্টের কাছ ঘেষে চলে যায়। দুর্ভাগ্য সাইফের। ৮৫ মিনিটেও ব্যর্থ তারা। এসময় কেনেথ বক্সের কোনা থেকে উচু শট নিলে জালে প্রবেশের ঠিক আগে কিংস গোলরক্ষক জিকো বল পাঞ্চ করে কর্নারে রক্ষা করেন। শেষ পর্যন্ত আর গোল না হওয়ায় ১-০ ব্যবধানেই ম্যাচ জিতে শিরোপা উল্লাসে মেতে ওঠে বসুন্ধরা। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ী ও বিজিতদের হাতে ট্রফি তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
বসুন্ধরা
১
সাইফ
০
চ্যাম্পিয়ন
বসুন্ধরা কিংস (ট্রফি ও ৫ লাখ টাকা)
রানার্সআপ
সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব (ট্রফি ও ৩ লাখ টাকা)
ফেয়ার প্লে ট্রফি
চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড
ম্যান অব দ্য ফাইনাল
রাউল বেসেরা (বসুন্ধরা কিংস)
সর্বোচ্চ গোলদাতা
৫টি করে- কেনেথ ইকেচুকু (সাইফ)
ও রাউল বেসেরা (বসুন্ধরা কিংস)
টুর্নামেন্ট সেরা
কেনেথ ইকেচুকু (সাইফ স্পোর্টিং)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।