পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর কলাবাগানে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ইফতেখার ফারদিন দিহান (১৮) হত্যার দায় স্বীকার করেছে। অভিযোগ উঠেছে, গ্রæপ স্টাডির কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এর আগে, দিহানের পরিবার ও তার বড় ভাই সুপ্ত সরকারের বিরুদ্ধেও হত্যার অভিযোগ উঠেছিল। পারিবারিক কলহের জেরে সুপ্তর স্ত্রীকে মুখে জোর করে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল দিহানের বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে। মামলার সাক্ষীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে মামলাটি আপস করেছেন সুপ্তর বাবা। পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অন্যদিকে রাজধানীর কলাবাগানে ‘ও’ লেভেল শিক্ষার্থীকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় গ্রেফতার তানভীর ইফতেফার দিহানের (১৮) তিন বন্ধুকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিহানেরা তিন ভাই। তাদের বাবার নাম আবদুর রউফ সরকার। তিনি রাজশাহী জেলার অবসরপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার। তিনি একজন ধর্নাঢ্য ব্যক্তি। এ বাড়ি ছাড়াও জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে তাদের আরও একটি বাড়ি আছে। রাজশাহী শহরেও আছে দু’টি বাড়ি। এর একটি সাগরপাড়া এলাকায়। আরেকটি বাড়ি মহানগরীর পদ্মা আবাসিক এলাকায়। ঢাকায়ও রয়েছে ফ্ল্যাট।
বড় ছেলে সুপ্তকে নিয়ে আবদুর রউফ সরকার গ্রামে থাকেন। আর মা সানজিদা সরকার শিল্পীর সঙ্গে দিহান ও তার মেজ ভাই নিলয় ঢাকায় থাকেন। নিলয় একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। ছোটবেলা থেকেই দিহান রাজধানী ঢাকায় থাকেন। তাই তার সম্পর্কে গ্রামের মানুষের ধারণা কম। তবে তার বড় ভাই সুপ্তর ব্যাপারে ছিল তাদের ধারণা নেতিবাচক। এর আগে, ২০০৯ সালে সুপ্তর স্ত্রী রুনা খানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল সুপ্ত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
দিহানের স্বজন ও মামলার সাক্ষীরা পুলিশকে জানান, রুনা খানের বাবার বাড়ি কিশোরগঞ্জ। আর নানির বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর হোসনীগঞ্জ মহল্লায়। সুপ্তর সঙ্গে বিয়ের কিছুদিন পরই রুনা খুন হন। সুপ্ত ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, রুনার মুখে বিষ ঢেলে হত্যা করা হয়েছে। এ নিয়ে রুনার মা নিজে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছিলেন। আর ওই সময় আসামিদের শাস্তির দাবিতে রুনার লাশ নিয়ে রাজশাহী শহরে মিছিলও হয়েছিল। রুনার নানির বাড়ির এলাকার এক নারী ওই হত্যা মামলার সাক্ষী।
তিনি পুলিশকে বলেন, বিয়ের পর থেকেই রুনাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। শেষে তার মুখে জোর করে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর রুনা হাসপাতালে মারা যান। আমরা তার লাশ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করি। মামলাটি সুপ্তর বাবা টাকা দিয়ে মীমাংসা করেন। এরপর পুলিশ মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি সূত্র বলছে, দিহানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের দুজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই বন্ধুত্বের বিষয়ে তাদের দুই পরিবারের সদস্যরাও অবগত। মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলে পড়া ওই কিশোরীর সঙ্গে দিহানের পরিচয় হয় মেয়েটির এক বান্ধবীর মাধ্যমে। যা একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়।
কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় ওই তিন তরুণের জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়নি। তাদের বিরুদ্ধে মামলার বাদীরও অভিযোগ নেই। তাই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তার ‘বন্ধু’ তানভীর ইফতেফার দিহানকে একমাত্র আসামি করে কলাবাগান থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা। এ ঘটনায় দিহানের তিন বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
অন্যদিকে কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে দাদা-দাদির কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে স্কুলছাত্রীকে। গতকাল শনিবার সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কমলাপুরের গোপালপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে গোপালপুর ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর থেকেই শত শত মানুষ তাকে শেষবার দেখতে ভিড় করেন। লাশ আসার পর নিকটতম আত্মীয়-স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা আল আমিন আহম্মেদ। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। জানাজায় অংশ নিয়ে মানুষ এই হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। দাফন শেষে তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকারীর দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। কমলাপুর বাজারে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
কেন একজনকে আসামি করল পুলিশ প্রশ্ন মায়ের
রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করে কুষ্টিয়ায় শনিবার সকালে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। থানায় মামলা দিতে গেলে দিহানসহ চারজনকে আসামি করার কথা বলা হয়। কিন্তু পুলিশ কেন একজনকে আসামি করল, সেই প্রশ্ন কিশোরীর মায়ের। আর বাবা বলছেন, আমি বারবার বলেছি মেয়ের জন্ম ২০০৩ সালে। পাসপোর্ট দেখিয়ে বলেছি মেয়ের বয়স ১৭। কেন তাকে ১৯ বানানো হলো? গতকাল শনিবার মেয়ের লাশ দাফন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই ক্ষোভের কথা জানালেন ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ঢাকার ধানমন্ডি মাস্টার মাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীর মা-বাবা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কিশোরীর মা বলেন, ঘটনার দিন সকালে তিনি সিটি করপোরেশনে কর্মস্থলে চলে যান। তার স্বামীও কারখানায় চলে যান। বেলা ১১টায় মেয়ে ফোন করে জানায়, পড়াশোনার কাগজপত্র আনতে বাসার বাইরে যাবে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে সে বাইরে যায়। বেলা ১টা ১৮ মিনিটে মেয়ের ফোন থেকে দিহান পরিচয় দিয়ে এক ছেলে জানান, তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
কিশোরীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, থানা-পুলিশকে বলা হয়েছিল, চারজনকেই আসামি করতে। কিন্তু মামলা দুর্বল হয়ে যাবে, এমন কথা বলে পুলিশ একজনকে আসামি করে। কিন্তু পুলিশ কেন এমন করল, তা বুঝতে পারছেন না। চার বন্ধুকেই আইনের আওতায় নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।