Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পকে অভিশংসনের দাবি জোরালো হচ্ছে

মামলা নেবে বিচার বিভাগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকরা তান্ডব চালানোর পরে ফের ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাট সাংসদরা। অন্যদিকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও একটি চিঠি দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। সেখানে ২০ জানুয়ারির আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অফিস থেকে সরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদিও বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, সহিংস হামলার ঘটনায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আনা হলে তা মামলা হিসাবে গ্রহণ করবে মার্কিন বিচার বিভাগ। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের আইএস অ্যাটর্নি মাইকেল শেরউইন এই তথ্য জানান।

শেরউইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হামলায় যারা অংশ নিয়েছিলো শুধু তাদেরকেই নয়, আমরা এ ঘটনায় জড়িত সবার উপরেই নজর রাখছি।’ এর আগে হোয়াইট হাউসের সামনে এক জনসভায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘শক্তি প্রয়োগ না করলে তারা কখনোই দেশকে ফিরিয়ে নিতে পারবে না।’ নির্বাচনের অনিয়ম হয়েছে বলে ট্রাম্পের ভিত্তিহীন দাবিতে প্ররোচিত হয়েই তার সমর্থকরা কংগ্রেসে জড়ো হয়েছিল ও জো বাইডেন জুনিয়রকে ইলেক্টোরাল কলেজের স্বীকৃতি পেতে বাধা দিতে চেয়েছিল। এ কারণে ট্রাম্পকেও এই হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হবে কি না, শেরউইনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা জড়িত সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেব। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনা হবে।’ বৃহস্পতিবার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনও ট্রাম্পকে দোষারোপ করে বলেছেন, ‘নির্বাচনে ভোট দেয়া প্রায় ১৬ কোটি আমেরিকানের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার জন্য তিনি তার সমর্থকদের ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন।’
এদিকে, বুধবারের ঘটনার পরে ফের যৌথ কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে ইলেকটোরাল ভোট গণনার পরে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করা হয়। ওই অধিবেশনের পরেই দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে অভিশংসন করা নিয়ে সরব হন দুই ডেমোক্র্যাট সাংসদ। অ্যালেকসান্দ্রা ওকাসিও কর্টেজ এবং ইলহাম ওমর ২০ জানুয়ারির আগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার কথা বলেছেন। অন্য দিকে একাধিক ডেমোক্র্যাট এবং কয়েকজন রিপাবলিকান সাংসদ ট্রাম্পকে ২০ জানুয়ারির আগেই ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে। একটি চিঠি লিখেছেন তারা। যেখানে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানসিক সমস্যা আছে। সে কারণেই তাকে দ্রুত ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। ভাইস প্রেসিডেন্ট চাইলে এ কাজ করতে পারেন। তবে বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স গোটা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের নাম না বললেও, তিনি যে ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে এক মত নন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

বুধবারের ঘটনার পর গোটাবিশ্ব জুড়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে। গোটা ওয়াশিংটন জুড়ে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় এক নারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বাকি তিনজনেরই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে বুলেটের ক্ষত ছিল না। তবে এখনো হাসপাতালে বেশ কিছু ব্যক্তি ভর্তি। ওয়াশিংটনের মেয়র ১৪ দিনের জন্য কারফিউ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সন্ধা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। রাস্তায় গোটা দিন ধরেই পুলিশি টহল চলছে। এক হাজার ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডকেও ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়েছে। তারা রাস্তায় ফ্ল্যাগ মার্চ করছে। তান্ডবের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ছয়টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মলটোভ ককটেল ভরা বোমা, পাইপ বোমা উদ্ধার হয়েছে।

ঘটনার পরেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মুখ খুলেছিলেন। বুধবার রাতে তিনি একটি লম্বা বক্তৃতা করেছেন। সেখানে গোটা ঘটনার জন্য ট্রাম্পের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। ট্রাম্পও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সমর্থকদের কাছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও ভোটে কারচুপির বিষয়টি তিনি সেখানেও উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, সমর্থকদের প্রতি নরম মনোভাবও দেখিয়েছেন। পরে অবশ্য ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। ক্ষমতা হস্তান্তর যাতে স্বাভাবিক ভাবে হয়, সে দিকে তিনি খেয়াল রাখবেন। বস্তুত, এই প্রথম ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প। বুধবারেও তার বক্তৃতায় ভোট কারচুপি, ক্ষমতা থেকে সরতে না চাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তারপরেই তার সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে আক্রমণ চালায়। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।



 

Show all comments
  • জোবায়ের আল মাকতুম ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০০ এএম says : 0
    ভেসে উঠেছে মার্কিনী দের আসল চরিত্র যেটা তারা গোটা বিশ্বের সাথে করে থাকে।
    Total Reply(0) Reply
  • কামরুজ্জামান কামরুল সরকার ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০০ এএম says : 0
    অযোগ্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
    Total Reply(0) Reply
  • Jibil Miah ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০০ এএম says : 0
    arrest him thats all i can say
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Faheem Jeem ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০১ এএম says : 0
    যুক্তরাষ্ট্রের অতীতের প্রত্যেকটা প্রেসিডেন্টের আমলেই নতুন করে কিছু না কিছু রাষ্ট্র ধ্বংস হয়েছে। একমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেই নতুন করে কোন রাষ্ট্র ধ্বংস হয়নি। কাজেই কেউ তার অবদান স্বীকার করুক আর না করুক আমি তারেই অবদান টুকু শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamsul Alam ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০১ এএম says : 0
    এই বদ চরিত্রের লোক কি ভাবে এতোদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলো? আরও আগে তা হওয়া উচিত ছিলো।
    Total Reply(0) Reply
  • Khalis M Miah ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০১ এএম says : 0
    আমেরিকার বেশিরভাগ প্রেসিডেন্ট পাগল ছিল বিশ্ব তার অনেক প্রমাণ পেয়েছেন সকল মোসলিম দেশ ধংসের পিছনে আমেরিকার ইন্ধন ছিল। তাই আজ আমেরিকা ধংসের দারপ্রান্তে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Shoriful Islam Shorif ৯ জানুয়ারি, ২০২১, ৩:০২ এএম says : 0
    আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যই ডোনাল্ড ট্রাম্প নয় সে একটা মাথামোটা পাগল
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ