মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকরা তান্ডব চালানোর পরে ফের ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনার ভাবনা চিন্তা শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাট সাংসদরা। অন্যদিকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকেও একটি চিঠি দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। সেখানে ২০ জানুয়ারির আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অফিস থেকে সরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। যদিও বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। এদিকে, সহিংস হামলার ঘটনায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আনা হলে তা মামলা হিসাবে গ্রহণ করবে মার্কিন বিচার বিভাগ। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের আইএস অ্যাটর্নি মাইকেল শেরউইন এই তথ্য জানান।
শেরউইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হামলায় যারা অংশ নিয়েছিলো শুধু তাদেরকেই নয়, আমরা এ ঘটনায় জড়িত সবার উপরেই নজর রাখছি।’ এর আগে হোয়াইট হাউসের সামনে এক জনসভায় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘শক্তি প্রয়োগ না করলে তারা কখনোই দেশকে ফিরিয়ে নিতে পারবে না।’ নির্বাচনের অনিয়ম হয়েছে বলে ট্রাম্পের ভিত্তিহীন দাবিতে প্ররোচিত হয়েই তার সমর্থকরা কংগ্রেসে জড়ো হয়েছিল ও জো বাইডেন জুনিয়রকে ইলেক্টোরাল কলেজের স্বীকৃতি পেতে বাধা দিতে চেয়েছিল। এ কারণে ট্রাম্পকেও এই হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হবে কি না, শেরউইনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা জড়িত সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেব। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনা হবে।’ বৃহস্পতিবার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনও ট্রাম্পকে দোষারোপ করে বলেছেন, ‘নির্বাচনে ভোট দেয়া প্রায় ১৬ কোটি আমেরিকানের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার জন্য তিনি তার সমর্থকদের ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন।’
এদিকে, বুধবারের ঘটনার পরে ফের যৌথ কংগ্রেসের অধিবেশন শুরু হয়। সেখানে ইলেকটোরাল ভোট গণনার পরে বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করা হয়। ওই অধিবেশনের পরেই দ্বিতীয়বার ট্রাম্পকে অভিশংসন করা নিয়ে সরব হন দুই ডেমোক্র্যাট সাংসদ। অ্যালেকসান্দ্রা ওকাসিও কর্টেজ এবং ইলহাম ওমর ২০ জানুয়ারির আগেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব আনার কথা বলেছেন। অন্য দিকে একাধিক ডেমোক্র্যাট এবং কয়েকজন রিপাবলিকান সাংসদ ট্রাম্পকে ২০ জানুয়ারির আগেই ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে। একটি চিঠি লিখেছেন তারা। যেখানে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানসিক সমস্যা আছে। সে কারণেই তাকে দ্রুত ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। ভাইস প্রেসিডেন্ট চাইলে এ কাজ করতে পারেন। তবে বাস্তবে তা হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স গোটা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্পের নাম না বললেও, তিনি যে ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে এক মত নন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
বুধবারের ঘটনার পর গোটাবিশ্ব জুড়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে। গোটা ওয়াশিংটন জুড়ে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় এক নারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বাকি তিনজনেরই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তাদের শরীরে বুলেটের ক্ষত ছিল না। তবে এখনো হাসপাতালে বেশ কিছু ব্যক্তি ভর্তি। ওয়াশিংটনের মেয়র ১৪ দিনের জন্য কারফিউ বা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সন্ধা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। রাস্তায় গোটা দিন ধরেই পুলিশি টহল চলছে। এক হাজার ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডকেও ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়েছে। তারা রাস্তায় ফ্ল্যাগ মার্চ করছে। তান্ডবের ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত ছয়টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মলটোভ ককটেল ভরা বোমা, পাইপ বোমা উদ্ধার হয়েছে।
ঘটনার পরেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মুখ খুলেছিলেন। বুধবার রাতে তিনি একটি লম্বা বক্তৃতা করেছেন। সেখানে গোটা ঘটনার জন্য ট্রাম্পের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। ট্রাম্পও টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে সমর্থকদের কাছে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। যদিও ভোটে কারচুপির বিষয়টি তিনি সেখানেও উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, সমর্থকদের প্রতি নরম মনোভাবও দেখিয়েছেন। পরে অবশ্য ট্রাম্প একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, বুধবারের ঘটনা অনভিপ্রেত। ক্ষমতা হস্তান্তর যাতে স্বাভাবিক ভাবে হয়, সে দিকে তিনি খেয়াল রাখবেন। বস্তুত, এই প্রথম ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে মুখ খুললেন ট্রাম্প। বুধবারেও তার বক্তৃতায় ভোট কারচুপি, ক্ষমতা থেকে সরতে না চাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তারপরেই তার সমর্থকরা ক্যাপিটল ভবনে আক্রমণ চালায়। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।