Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রেসিডেন্টের নিজেকে ক্ষমার বৈধতা নিয়ে আলোচনা করছেন ট্রাম্প

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২১, ২:৩২ পিএম

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ক্ষমতার শেষ দিনগুলিতে প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতাবলে নিজেকে ক্ষমা করতে চান বলে তার সহযোগীদের জানিয়েছেন। তবে, প্রেসিডেন্ট নিজেকে ক্ষমা করার এখতিয়ার রাখেন কি না, তা পরামর্শক এবং আইনজীবীদের কাছে জানতে চাইছেন তিনি। একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজের কাউন্সেল প্যাট এ. সিপোলানকেও একই প্রশ্ন করেছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এমনটি ঘটে, তবে তা আমেরিকান ইতিহাসে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার অন্যতম ব্যতিক্রমী এবং একচ্ছত্র অপব্যবহারকে চিহ্নিত করবে।

এ ধরনের আলোচনা সম্পর্কে অবগত এমন দু’জনের বরাত দিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর আগে খবর দিয়েছিল যে, নিজেকে ক্ষমা করার ওই আইডিয়া নিয়ে নির্বাচনের সময় থেকেই চিন্তাভাবনা করে আসছেন ট্রাম্প। তিনি তার তিন সন্তান ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, এরিক ট্রাম্প এবং ইভাঙ্কা ট্রাম্পের স্বামী হোয়াইট হাউজের সিনিয়র উপদেষ্টা জারেড কুশনারকে এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সহ প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডল্ফ ডাবøু গিউলিয়ানিকে প্রি-ইম্পটিভ বা আগাম ক্ষমা অনুমোদন করেছিলেন। ট্রাম্প তার পরামর্শদাতাদের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যে, বাইডেনের বিচার বিভাগ এসমস্ত বিষয়ে তদন্ত করতে পারে। এরপর, গেল বুধবার ট্রাম্পের ডাকে সাড়া দিয়ে ক্যাপিটল ভবনে তার সমর্থকদের হামলা বা জর্জিয়ার সেক্রেটারি অব স্টেটকে ভোটের ফল উল্টো দেওয়ার পথ খোঁজার জন্য চাপ দেয়ার কথা ফাঁস হওয়ার পর ট্রাম্পের দায়মুক্তির এই আলোচনাটি আবারো সামনে আসে।
ট্রাম্পের সহযোগীরা বুধবার তাকে ক্যপিটলের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাতে অনুরোধ করলে তিনি সেই পরামর্শ প্রত্যাখ্যান করেন। হোয়াইট হাউসের পরামর্শদাতা প্যাট এ. সিপোলোন ট্রাম্পকে সতর্ক করেছিলেন যে, তিনি এই দাঙ্গার জন্য আইনী ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে পারেন, যেহেতু তিনি তার সমর্থকদের ক্যাপিটালে যেতে এবং লড়াই করতে আগেই অনুরোধ করেছিলেন। ডেমোক্র্যাটস এবং বিচার বিভাগের প্রাক্তন কর্মকর্তারা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট যদি এধরণের অপরাধ করে নিজেকে নিজেই ক্ষমা করে দেন এবং বিচার বিভাগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে অস্বীকার করেন, তবে এটি আইনের শাসন সম্পর্কে এবং ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টদের আইনকে কাঁচকলা দেখানোর ক্ষমতার বিষয়ে আমেরিকানদের একটি উদ্বেগজনক বার্তা দেবে।

এর আগে ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, নিজেকে ক্ষমা করার ‘পরম অধিকার’ রয়েছে তার। গত ৮ ডিসেম্বর এবিসি টিভির দ্য ভিউ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লাতিশিয়া জেমস ট্রাম্প সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে নিজের কৃতকর্মের জন্য নিজেকে ক্ষমা করবেন।’ তবে এও তিনি জানান, ‘প্রেসিডেন্ট সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট নিজেকে ক্ষমা করতে পারেন না। তবে তিনি পদত্যাগ করে ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে পারেন এবং তার কাছে ক্ষমার আবেদন করতে পারেন।’ লাতিশিয়া ১৯৭৪ সালের উল্লেখ করেছেন। তখন মার্কিন বিচার বিভাগ বলেছিল, প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন না। এমন ঘটনা শেষ পর্যন্ত ঘটায় সংবিধানের এ বিষয়টিকে কখনো সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি এবং এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টও কখনো কোনো নির্দেশনা দেননি।

লাতিশিয়া গত বছর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসা নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তার ব্যবসা-বাণিজ্য ও কর ফাঁকির বিষয়ে বড় ধরনের অনিয়মের আভাস পাওয়া গেছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে বিষয়টি ফৌজদারি অপরাধে পড়বে এবং নিউইয়র্কের এমন মামলায় প্রেসিডেন্টের ফিনজেকে নিজে ক্ষমা করা কোনও কাজে আসবে না। সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স, সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ