Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টানা তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:৩৯ পিএম

দেশের পেশাদার ফুটবলে ২০১৮ সালে অভিষেকের পর টানা তৃতীয়বারের মতো ফেডারেশন কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলো বসুন্ধরা কিংস। বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বসুন্ধরা ৩-১ গোলে ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপার লড়াইয়ে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গি হলো। বিজয়ী দলের হয়ে ব্রাজিলের মিডফিল্ডার জোনাথন ডি সিলভেইরা দু’টি ও আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরা একটি করে গোল করেন। আবাহনীর হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো ডি সৌসা ফিলবো।

রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে যখন প্রতিপক্ষ বসুন্ধরা কিং-আবাহনী লিমিটেড, তখন ম্যাচটি তো উত্তেজনায় ভরপুর হবেই। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। বৃহস্পতিবার নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ ব্যবধানে ড্র থাকায় ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় কিংসদেরই জয় হয়। তবে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে আবাহনীর একটি অফসাইড গোলকে কেন্দ্র করে মাঠে উত্তেজনার দেখা মিলে। এতে খেলা প্রায় ১০ মিনিট বন্ধ থাকে। ২০১৮ সালের ফেডারেশন কাপের মতো মারামারি না হলেও ম্যাচে মাঝে মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি হয়েছে দু’দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে। সেই উত্তাপের কিছুটা দেখে গেছে এদিনও।

ম্যাচের শুরু থেকেই বসুন্ধরা আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিলেও প্রথমে পিছিয়ে পড়ে তারা। তবে পরে ঠিকই ম্যাচে ফিরে শেষ হাঁসিটা হাসে বসুন্ধরাই। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ১৩ মিনিটে কিংসরা নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করে। এসময় মাসুক মিয়া জনির কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁ প্রান্ত দিয়ে ব্রাজিলিয়ান রবসনের নিখুঁত শট আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলকে পরাস্ত করলেও বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ১৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেয়া রবসনের আরেকটি শট চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। মিনিট চারেক পর আরেকটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন বসুন্ধরার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরা। ইরানের ডিফেন্ডার খালেদ শাফেইয়ের ডিফেন্স চেরা পাস বক্সের মধ্যে খুঁজে নেয় বেসেরাকে। তার পায়ের আলতো টোকায় বল যখন জালের দিকে চলে যাচ্ছিল, তখনই ঝাঁপিয়ে পড়ে তা রুখে দেন সোহেল। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিট আধিপত্য ছিল বসুন্ধরারই। এসময় বল বেশিরভাগ সময় ছিলো আবাহনীর সীমানায়। এরমধ্যে কয়েকটি কর্ণারও আদায় করে নেয় বিজয়ীরা। তবে এরপরেই যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে আবাহনী। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে তারা একাধিক গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে। খেলার ধারার বিপরীতে ৩১ মিনিটে গোল করে এগিয়েও ঢাকার আকাশী-হলুদরা। এসময় সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে ডান পায়ের শটে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ফ্রান্সিসকো (১-০)। পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়েই লড়ে কিংস। তারপরও এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আবাহনী। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দৃশ্যপটে ফের বসুন্ধরা। ম্যাচের ৫১ মিনিটে সমতায় ফেরে তারা। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে দ্রæতগতিতে এগিয়ে যাওয়া ব্রাজিলিয়ান জোনাথন আবাহনীর তিনজনকে কাটিয়ে আচমকা উড়ন্ত শট নিলে তা ক্রসবারে লেগে গোললাইন অতিক্রম করে। আর্জেন্টনাইন রাউল অস্কার বেসেরা হেডের মাধ্যমে বল জালে জড়ান। তবে জোনাথনের শটেই বল জালে জড়ায় বলে গোলটি তার নামেই দেয়া হয় (১-১)। ৭০ মিনিটে আবাহনীর আফগান ডিফেন্ডার মাসি সাইঘানি পায়ে ব্যথা পাওয়ায় তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে বের করে নেয়া হয়। মাসির পরিবর্তে তখন মাঠে নামেন মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম মামুন। সাইঘানি ওঠে যাওয়ার পর নাসির উদ্দিন চৌধুরী নীচে নেমে খেলেন। পাঁচ মিনিট পর রায়হান হাসানের বদলে নামেন ওয়ালি ফয়সাল। তারপরও

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর কোন গোল হয়নি। ফলে ১-১ গোলে ড্র থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেই জয়ের দেখা পায় বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ১১১ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের আনন্দে মেতে উঠে তারা। ডান প্রান্ত দিয়ে বদলী মিডফিল্ডার মতিন মিয়ার মাইনাসে বল পান রাউল অস্কার বেসেরা। তিনি প্লেসিং শটে গোল করে দলকে আনন্দে ভাসান (২-১)।

ম্যাচের অন্তিম সময়ে (১২০ মিনিট) আবাহনীর নাবীব নেওয়াজ জীবন গোল করলেও তা অফসাউডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। এতে লাইন্সম্যানের দিকে তেড়ে যান আবাহনীর ফুটবলাররা। গ্যালারি থেকে আবাহনীর সমর্থকরা বোতল ছুঁড়তে করতে থাকেন মাঠে। ফলে মাঠে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খেলা বন্ধ হয়ে যায়। রেফারি সুজিতের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ আবাহনীর বেলফোর্ট খেলতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি কয়েকবার বল মাঠের বাইরে ফেলে দেন। যে কারণে রেফারি হাইতির এ ফরোয়ার্ডকে হলুদ কার্ড দেখান। শেষ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের অনুরোধে খেলতে রাজি হন বেলফোর্ট। গন্ডগোলের পর খেলা শুরু হলে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় বসুন্ধরা। পাল্টা আক্রমণে গিয়ে তারা ম্যাচের যোগকরা সময়ে (১২১ মিনিট) তৃতীয় গোলের দেখা পায়। এসময় বক্সের মধ্যে ঢুকে ব্রাজিলিয়ান রবসনের মাইনাসে ডান পায়ের শটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোল করেন ব্রাজিলিয়ান জোনাথন (৩-১)। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে কিংসরা। রোববার ফাইনালে সাইফের মুখোমুখি হবে বসুন্ধরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ