বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশের সাথে সরবরাহ চুক্তি থাকা সত্বেও ভারত করোনা ভাইরাসের টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্রতিবেশী দেশটির এহেন আচরণে হাতাশা প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশিরা। এই ঘটনায় তোলপাড়া চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
সরাসরি না এনে ভারত থেকেই করোনার এই টিকা আনার কথা বাংলাদেশের। তাও ভারত যে দামে কিনবে তার চেয়ে বেশি দামে। কিন্তু এখন সেই ভারতই সেদেশে টিকা আশার আগেই রপ্তানি নিষিদ্ধ করলো। ফলে বাংলাদেশে এখন কবে ভ্যাকসিন আসবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। দেশটির এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন দেশ্রপ্রেমিক বাংলাদেশিরা।
ভারতীয় এ সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এই খবরটি তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যম মারফত পেয়েছেন। সাংবাদিকদের কাছ থেকেই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানতে পারি। তবে তিনি এও আশা প্রকাশ করেন, ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সাথে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে আমাদের টিকা পেতে কোন সমস্যা হবে না।
ফেসবুকে আ ক ম আরাফাত আদনান রহমান লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশ ভারতের মতো এত বাজে একটা রাষ্ট্রের সাথে কিভাবে সম্পর্ক রাখে? নেপালে যখন ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন ত্রাণ হিসেবে তাদের বাসিপচা ফল পাঠানো হয়েছিল। এত ক্ষুদ্ররাষ্ট্র প্রতিপদক্ষেপে একথা ভুলে না। আর ৭১ এর দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রকে ইন্ডিয়াইই বানাইয়া ফেলছে। ইন্ডিয়ার ভ্যাকসিন তেমন কার্যকর নয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভেকসিন নেয়ার পরও করোনা আক্রান্ত। তবুও আমরা কেন নগদ টাকায় ৩ কোটি ডোজের চুক্তিতে ভারতের সাথে গেলাম। ফাইজারের অরজিনাল ভেকসিন আনতে কেন আগ্রহী ছিলাম না আমরা। এগুলো অনেক জটিলতর প্রশ্ন। দেশটাকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত করার পর থেকেই ইন্ডিয়া আমাদের শাসন করছে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভাবে।’’
প্রবাসী মোখতার আহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘আমরা প্রবাসীরা আবুধাবিতে দুই মাস আগেই চীনের ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমাদের কাছে প্রশ্ন বাংলাদেশের সাথে চীনের অনেক বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকার পরও ভারতের নিজের আমদানি করা ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আনতে হবে- সঠিক কারণটা বুঝা যাচ্ছে না।’’
মোঃ মহাবুর রহমান সবুজ লিখেছেন, ‘‘ভারত তার নিজের জনগণের ভ্যাকসিন চাহিদা পূরণ করবে তারপর না অন্য দেশের কথা ভাববে। এটাই তো স্বাভাবিক। আমরা কেন ভ্যাকসিন এর মত একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারত এর উপর ডিপেন্ডেবল হচ্ছি। যে দেশের টিকা ডাব্লিউএইচও অনুমোদন দিয়েছে তাদের সাথে সরাসরি চুক্তি করা উচিত বলে আমি মনে করি।’’
কবির হোসাইন লিখেছেন, ‘‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার টিকা রপ্তানি করছে আর ভারত এখনো করোনা টিকায় সফল হয়নি আর টিকার মান যাচাইতো আরো পরের বিষয়। ভারত সরকার অক্সফোর্ডের টিকা আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।তাহলে ভারতকে সন্তুষ্ট করতে আমরা কেনো ভারতীয় টিকার জন্য অপেক্ষা করবো?’’
আব্দুল্লাহ আল মামুন লিখেছেন, ‘‘আমার মাথা আসে না বাংলাদেশ ভারত ছাড়া কি আর কিছু বুঝে না? ভারত থেকে কিনার কি দরকার যেখানে বাংলাদেশ সরাসরি বিদেশী কোম্পানি থেকে কিনতে পারে ভারত যে দামে কিনবে সে দামে। তাহলে ভারত থেকে ২ গুন দিয়ে কিনার কোন মানে হয়? দেশের জনগণের টাকা কি এভাবে সরকার নষ্ট করবে?’’
দারুস সালাম লিখেছেন, ‘‘সরকার কেন সরাসরি উৎপন্নকারী প্রতিষ্ঠান হতে টিকা আমদানী না করে ভারতের মাধ্যমে আমদানী করবে; দেশটা কি তাহলে ভারতের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে গেল?’’
আনিসুর রহমান লিখেছেন, ‘‘ভারতের অভ্যাস হয়ে গেছে পাকিস্তানি আর চায়নাদের হাতে মাইর খাওয়ার! ইদানীং নেপালিরাও পিটায়! অথচ সেই মাইরের ঝাল মিটায় নিরীহ বাংলাদেশীদের উপর। এভাবে আর কতদিন দাদাগিরি সইতে হবে? ইটস টাইম টু বয়কট ইন্ডিয়া।’’
উল্লেখ্য, ভারত কয়েকমাসের জন্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা দিয়েই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার অনুমোদন দিয়েছে। ফলে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশকে এই টিকা পেতে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।