বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কারাগারে থাকা অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। বিশেষ করে লেখক, শিল্পী ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। তারা এই মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত, স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি তুলেছেন।
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে গত বছর মে মাসে আটক হওয়া লেখক মুশতাক আহমেদ কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূতরা মুশতাকের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে দ্রুত, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। একই দাবিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচও একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘একসময় বলা হয়েছিল, সাংবাদিকরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় থাকবে না। কিন্তু সাংবাদিক নেতাদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও কিছু মিডিয়া ও সাংবাদিকদের তৃতীয় শ্রেণীর দলীয় কর্মীর চেয়েও নিম্নস্তরের আচরণের কারণে সাগর-রুনির বিচার শুরু হয় না, কাজলরা জামিন পায়না সহজে আর মুশতাকরা মরে কারাগারে।’’
সাদি মুসলেহ লিখেছেন, ‘‘মতের অমিল হলেই ক্ষমতাবলে কাউকে মৃত্যুর জন্যে কারাগারে নিক্ষেপ করা যায় না। এটা পাপ। লেখক মুশতাকসহ কারা হেফাজতে সকল মৃত্যুয় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের জবাবদিহিতা সন্তোষজনক হওয়া বাঞ্ছনীয়। লঘু অপরাধে গুরুদন্ড হবে কেন? ‘যত মত তত পথ’ আশা করা যায়, সরকারের উপর মহল এই মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করবে।’’
আক্ষেপের সুরে এআর রাসেল লিখেছেন, ‘‘লেখক মুসতাক আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের 'অভিযোগে, বাট এই রাষ্ট্র মাফিয়াদের কুখ্যাত খুনিদেরকে গোপনে ক্ষমা করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। অথচ মুসতাকের মত অসংখ্য মানুষ ফ্যাসিবাদী সরকারের কালো আইন ৫৭ ধারায় গ্রেফতার হয় নিজের বাক স্বাধীনতা প্রকাশ করার অপরাধে। দীর্ঘজীবী হউক ফ্যাসিবাদ, জয় হউক মাফিয়াতন্ত্রের।’’
ক্ষোভ জানিয়ে হাসান মাহমুদুল লিখেছেন, ‘‘সাগর-রুনি যেমন কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে,,,সাংবাদিক মোশতাকও একদিন হারিয়ে যাবে,,,সময়ের পট পরিবর্তনে ভুলে যাবে সবাই তার নাম,,,,এই রাষ্ট্রযন্ত্র যতদিন মাফিয়া চক্রের হাতে থাকবে ততদিন আমরা সময়ের সেরা সাংবাদিকদের হারাতে থাকবো,,, অপরদিকে যেমন নির্বাসিত হয়েছে ইলিয়াস,,কনকের মত সূর্য সাংবাদিকরা,,।’’
পথিক লিখেছেন, ‘‘সরিষার মধ্যে ভূত, সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়, লেখক মুশতাক অপমৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরবর্তীতে আর একটি নতুন নাটক তৈরি হবে, সবাই অপেক্ষায় থাকুন সেটি দেখার জন্য। টকশোতে বড় বড় সাংবাদিক নেতাদের বক্তব্য দিতে দেখা যায়, তারা অনেকেই আজ নিশ্চুপ কেন? সকলের সময় এসেছে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবার, লেখক মুশতাকের মতো পরিনতি হয়তো পরবর্তীতে আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’’
মফিজুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষকে নিয়ন্ত্রণের জন্য হোক মৃত্যুর জন্য নয়!
সুষ্ঠু তদন্ত হোক সেটা সবার কাম্য তবে যদিও সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে অনেকের সন্দেহ থেকেই থাকে৷’’
শোহাগ হোসেন নীরব লিখেছেন, ‘‘৫৩ বছর বয়স। পরিবারের একমাত্র ছেলে। বৃদ্ধ মা। মানসিক রোগী স্ত্রী। আটবার আবেদন করেও জামিন পায়নি। শেষে একজন লেখক সাংবাদিকের করুন মৃত্যু! কোথায় বাস করি আমরা।’’
উল্লেখ্য, মুশতাক আহমেদের বিরৃদ্ধে ফেসবুকে একটি বিদ্রূপাত্মক কার্টুনের ক্যাপশন দেয়া এবং সরকারের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।