গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
আধিপত্য বিস্তার, সিট বাণিজ্য, সাধারণ ছাত্রীদের হেনস্তাসহ নানা হয়রানির খবরে বারবার আলোচনায় আসে রাজধানীর ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ। এসব বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় এবার সংগঠনের এক নেত্রীর ওপর চটেন সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা।
এই ঘটনায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর হামলার জের ধরে শনিবার মধ্যরাত থেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে কলেজ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে। এই নেত্রীকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে তামান্না ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবিতে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের অন্যপক্ষের নেতাকর্মীরা।
রাতভর উত্তপ্ত পরিস্থিতি, স্লোগান-পাল্টা স্লোগান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের দফায় দফায় বৈঠক হয়। কিন্তু সবকিছুর পরেও রাতভর উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করে। একই পরিস্থিতি চলে রোববার সারাদিন।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তদন্ত কমিটিও গঠন করেন। দিনভর কলেজ ক্যাম্পাস দখলে রাখে ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপ। রোববার সন্ধ্যা ছয়টায় সংবাদ সম্মেলন করার সময় হামলা করা হয় তামান্না জেসমিন রিভার ওপর। ক্যামেরার সামনেই ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রীদের হাতাহাতি চলে। এসময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ও হামলায় অন্তত ১৫জন আহত হন।
এসব ঘটনার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভাইরাল এসব ভিডিওতে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য থেকে শুরু করে সাধারণ ছাত্রীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ করিয়ে নেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ করা হয়। ফলে দিনভর নেটিজেনদের হট টপিকসে পরিণত হয় বিষয়টি। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগকাণ্ড নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই ক্ষোভ জানিয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
ফরিদ উদ্দিন রনি নামে একজন লিখেছেন, ‘‘এখানে পড়তে আসা বেশিরভাগই গ্রাম-গঞ্জ থেকে উঠে এসেছে। নিম্নবিত্ত- নিম্নমধ্যবিত্ত পরিাবারের সন্তানরা পড়ে। এই ছাত্ররাজনীতির কাছে তারা কতটা অসহায়, এসব চিত্র তার প্রমাণ। মানুষ কেন এ-সবে হাসিঠাট্টা করে, এসব ঘটনা নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা হওয়ার কথা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এদের কাছে অসহায়, সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকতে হয়। এ ব্যাপারগুলো নিয়ে জোরালো আওয়াজ তোলার কথা। সেখানে মানুষ ট্রোল করে উড়িয়ে দিচ্ছে সব!’’
রাগিব রাইহান লিখেছেন, ‘‘মানুষের বোঝা উচিত ছাত্র রাজনীতি কতটা মারাত্মক। মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে খেলা করতেছে হিংসা সহিংসতা গুম খুন ,, সাথে যারা উচ্চ লেভেলে আছে তাদের কাছে আমাদের মা বোনের ইজ্জতকে নিয়ে গিয়ে বিলিয়ে দিচ্ছে,, নারীবাদী তারা এটাই চায় যে মা বোনের ইজ্জত যেন না থাকে সতীত্ব যেন নষ্ট হয়ে যায় জেনার মধ্যে যেন উন্মুক্ত হয়,,, ইসলাম এজন্যই কিন্তু গণতন্ত্রকে হারাম করেছে, গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ছাত্র রাজনীতি নামে আজকে সহিংসতা রক্তপাত জাতি কখনো দেখতে চায় না,,,।’’
মোঃ মাহদি হাসান মাসুম লিখেছেন, ‘‘এতদিন ইডেনের ছাত্রীদের নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা ছিল। কিন্তু এই কলেজের ছাত্রীরাই এখন নিজেরাই বলছে ছাত্রীদের দিয়ে ব্যবসা করায় এটি সত্যি খুব দুঃখজনক। এই ঘটনার পর গুঞ্জনের বিষয়টি সত্যিই প্রমানিত হলো। এই কালি মুছা অনেক কঠিন হবে সাংসারিক জীবনেও এর প্রভাব পড়বে।’’
সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতি মুক্ত করার দাজি জানিয়ে রুহুল আমিন লিখেছেন, ‘‘নোংরা রাজনীতির কারনে সব শিক্ষাঙ্গন ধ্বংসের মুখে, অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হোক।দলীয় রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই। দেশে দিন দিন শিক্ষা ব্যবস্থা পুরাই ধ্বংস হচ্ছে। বিশ্বের কোথাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এইরকম রাজনীতি নেই। বুয়েটের মতো সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতি মুক্ত করা হোক।’
মোঃ শাহাজাহানের মন্তব্য, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনীতি জাতির জন্য কখনো সুফল বয়ে আনতে পারে না। নৈতিকতার অবক্ষয় কত দূর গেলে মেয়েরা এভাবে জনসম্মুখে মিডিয়ার সামনে মারামারি করতে পারে। কিসের জন্যে এত হানাহানি বাপদাদার সম্পত্তি অন্য জন দখল করলেও তো একজন ভদ্র মেয়ে মারামারিতে যায় বলে আমার মনে হয় না।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।