মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাস মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্যসঙ্কট থাকলেও এ মহামারি ধনকুবেরদের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। এ সময় দেশটির শীর্ষ বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ মার্কিন ডলার। এই অর্থের পাঁচ ভাগের এক ভাগই কামিয়েছেন যথাক্রমে আমাজন ও টেসলার কর্ণধার জেফ বেজোস ও ইলন মাস্ক। এই বৈভবের অপর পিঠেই আছে বৈষম্যের ভয়াবহ এক চিত্র। বর্তমানে চরম দারিদ্র্য সঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন কোটি কোটি মার্কিন নাগরিক। বিভিন্ন খবরে এসেছে, করোনা মহামারির কারণে অর্থাভাবে কোটিরও বেশি মার্কিনি যথেষ্ট পরিমাণ খেতে পাচ্ছেন না এবং কাজ হারিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। -ওয়াশিংটন পোস্ট
গত বছর টেসলা ও স্পেস এক্সের মালিক ইলন মাস্কের মোট সম্পদ বেড়েছে পাঁচ গুন, যার পরিমাণ ১৩ হাজার ২শ’ কোটি ডলার। এর ফলে তার মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৫ হাজার ৯শ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা তাকে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতে পরিণত করেছে। অন্য দিকে আমাজনের জেফ বেজোসের সম্পদ গত বছর বেড়েছে ৭ হাজার কোটি ডলার। তার মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ১৮ হাজার ৬শ বিলিয়ন ডলার। মাস্ক ও বেজোসের সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে শেয়ার বাজারে টেসলা ও আমাজনের দাম বৃদ্ধির ফলে। গত বছর টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৮শ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। ২০২০ এ চীনের সাংহাইতে টেসলার কারখানায় গাড়ি উৎপাদন শুরু হয়েছে, মুনাফা অর্জনে কোম্পানিটি স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পেরেছে এবং তাদের বিদ্যুতচালিত গাড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আমাজনের ক্ষেত্রে বড় সংখ্যক আয় হয়েছে তাদের অর্ডার বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে। লকডাউনের কারণে দোকানগুলো বন্ধ থাকায় আমেরিকার অধিকাংশ জনগণ আমাজনের মাধ্যমে অনলাইনে কেনাকাটা করেছে। এছাড়া আমাজনের আইটি সলিউশন কোম্পানি আমাজন ওয়েব সার্ভিসও গত বছর প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছে।
করোনা মহামারির বছরে এই দুই ধনকুবেরের যৌথভাবে সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২শ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের ১৩৯টি দেশের জিডিপির চেয়ে বেশি। এক শতাব্দী আগে রকফেলার ও কার্নেগির পর থেকে আমেরিকায় কোনো একক ব্যক্তির সম্পদ এতটা বৃদ্ধি পাওয়ার নজির আর দেখা যায়নি। এই ২শ বিলিয়ন ডলার দিয়ে এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিককে তাদের প্রয়োজনের আট গুন বেশি খাবার দেয়া যাবে। এই অর্থের পরিমাণ করোনাভাইরাস ত্রাণের জন্য মার্কিন সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থের চেয়েও বেশি। কিন্তু দরিদ্র মানুষের জন্য কতটা অর্থ দান করছেন মার্কিন ধনকুবেররা? অর্থনীতিবিদ গ্যাব্রিয়েল জুকম্যান জানাচ্ছেন, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ১০ বিলিয়নিয়াররা তাদের মোট সম্পদের এক শতাংশেরও কম অর্থ দাতব্য কাজে ব্যয় করেছেন।
বেজোস ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি জলবায়ু পরিবর্তনে এক হাজার কোটি ডলার প্রদান করবেন। গত নভেম্বরে তিনি জানান, এই অর্থের প্রথম ৮০ কোটি ডলার খরচ করা হবে ইন্সটাগ্রামে। গত জুনে ওয়াশিংটন পোস্টের এক বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিনি ১০ কোটি ডলার দিয়েছেন সকল মার্কিনিদের জন্য খাদ্য প্রদানে এবং ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে দিয়েছেন ২৫ লাখ ডলার। গড়ে তিনি প্রত্যেক মার্কিনির জন্য দান করেছেন ৮৫ ডলার করে। অন্য দিকে ইলন মাস্ক তার নিজের দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন ২৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা তার মোট সম্পদের এক শতাংশের পাঁচ ভাগের এক ভাগ। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আমাজনের প্রতিনিধিরা। টেসলার প্রতিনিধিদের মন্তব্য করতে অনুরোধ করলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।