Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী আইন সমর্থন করে সমালোচিত রাজনাথ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:১১ পিএম

উত্তর প্রদেশে তথাকথিত ‘লাভ জিহাদ’ ঠেকাতে বিতর্কিত ধর্মান্তর আইন চালু হয়েছে। তাতে এক মাসে ৫১ জন মুসলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্প্রতি রায় দিয়েছে, যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষ নিজের পছন্দমতো জীবনসঙ্গী বেছে নিতে পারবেন। সেখানে ধর্ম বা অন্য কোনো বিষয় দেখা হবে না। এতদিন কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী ও ছোট নেতারা এই আইনের পক্ষে সমর্থন জানালেও এবারই প্রথম সমর্থন জানালেন কেন্দ্রীয় কোন মন্ত্রী।

মঙ্গলবার লাভ জিহাদ নিয়ে খোলাখুলি নিজের সমর্থন প্রকাশ করেন মোদি সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং বিজেপি-র সাবেক সভাপতি রাজনাথ সিং। এ বিষয়ে তার মত হলো, বিয়ের জন্য ধর্মান্তর মেনে নেয়া যায় না। রাজনাথ বলেছেন, ‘যতদূর জানি, মুসলিম ধর্ম মতে, অন্য ধর্মের কাউকে বিয়ে করা যায় না। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিয়ের জন্য ধর্মপরিবর্তন সমর্থন করি না। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বিয়ে এবং ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ের মধ্যে ফারাক আছে।’ সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাজনাথ বলেছেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, জোর করে ধর্মান্তর করানো হচ্ছে। অনেক সময় লোভ দেখিয়ে করানো হচ্ছে। আমার মনে হয়, আইন করার আগে সরকার সব বিষয়ই ভেবে দেখেছে।’

লভ জিহাদ নিয়ে বিজেপি-র ছোটখাট নেতা, এমনকী মুখ্যমন্ত্রীদের বলার সঙ্গে রাজনাথের বলার মধ্যে ফারাক আছে। রাজনাথ এখন মোদি সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবীণ মন্ত্রী। তিনি উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজপুত নেতা। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের পরই মন্ত্রিসভায় তার স্থান। তার বলা মানে মোদি সরকারও যে লাভ জিহাদ বন্ধ করতে ধর্মান্তর আইন সমর্থন করছে তা পরিষ্কার হয়ে যাওয়া বলে বিশেষজ্ঞদের মত। হঠাৎ, বিজেপি এই সময় লাভ জিহাদকে কেন সামনে নিয়ে আসছে? প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘এর প্রধান উদ্দেশ্য পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন। এর আগে সিএএ, এনআরসি, ৩৭০ ধারা বিলোপের মতো বিষয়গুলি সামনে এনে বিভাজনের চেষ্টা হয়েছে। লাভ জিহাদকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে সেই কাজটাই করা হতে পারে।’ আরেক প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে তো এই প্রসঙ্গ তুলে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, অমর্ত্য সেন তিনটি বিয়ে করেছেন, আলাদা সম্প্রদায়ের মেয়েকে। অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, লাভের মধ্যে জিহাদ থাকতে পারে না। তারই প্রতিক্রিয়া এভাবেই দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।’

কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, কৃষক বিক্ষোভ, বেহাল অর্থনীতি, বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে মোদী সরকার চাপে। ফলে মানুষের নজর ঘোরাতে তারা লাভ জিহাদকে ব্যবহার করছে। সাধারণত দলগুলো এরকম কৌশল নেয়। কারণ, যাই হোক না কেন, বিজেপি যে লাভ জিহাদের প্রসঙ্গ নিয়ে আরো সোচ্চার হবে, রাজনাথের মন্তব্য থেকে তা স্পষ্ট। সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ