Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে যোগীর রাজ্য ঘৃণা আর বিভাজনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে : শতাধিক প্রাক্তন আইএএস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:২৮ এএম

ভারতের উত্তর প্রদেশে নতুন ‘লাভ জিহাদ’ আইন নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত ঘটনা ঘটে চলেছে। তা নিয়ে দেশটির পুলিশ ও প্রশাসনের কোনো ভূমিকা না থাকলেও যোগীর রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে এবার সরব হয়েছে শতাধিক প্রাক্তন আইএএস অফিসার। তাঁদের অভিযোগ, এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশ ঘৃণার রাজনীতি, বিভাজন এবং ধর্মান্ধতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আর তাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে নতুন এই ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন।

অবিলম্বে ধর্মান্তরণ আইন তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উদ্দেশে একটি চিঠি দেন দেশের ১০৪ জন প্রাক্তন আইএএস অফিসার। এঁদের মধ্যে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন, প্রাক্তন বিদেশ সচিব নিরুপমা রাও এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের একসময়ের উপদেষ্টা টিকেএ নায়ার। রীতিমতো কড়া ভাষায় সেখানে বলা হয়, ‘যে সংবিধানে হাত রেখে শপথগ্রহণ করেছিলেন, তার সম্পর্কে নিজেদের জ্ঞান ঝালিয়ে নেওয়া উচিত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-সহ সমস্ত রাজনীতিকদের’।

চিঠিতে বলা হয়, ‘যে গঙ্গা-যমুনার তীরে একসময় সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল, সেই উত্তরপ্রদেশ এখন ঘৃণার রাজনীতি, বিভাজন এবং ধর্মান্ধতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলির গায়ে সাম্প্রদায়িকতার প্রলেপ পড়েছে। যে কারণে এই স্বাধীন দেশে, স্বাধীন নাগরিক হিসেবে যাঁরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন, সেই যুবসমাজের উপর নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে আপনার প্রশাসন’।

হিন্দু মেয়েদের মুসলিম পরিবারে বিয়ে রুখতে দীর্ঘদিন ধরেই ‘লাভ জিহাদ’ আইনের পক্ষে ধর্মান্তরণরোধী আইন কার্যকর করে তাঁর সরকার। তার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘুদের হেনস্থার অভিযোগ সামনে এসেছে। পুলিশ এবং প্রশাসন তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে বজরং দলের মতো কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি বিচারকের ভূমিকা পালন করে বসছে বলে অভিযোগ। মোরাদাবাদের ঘটনা যার সাম্প্রতিক উদাহরণ।

যোগীকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘নিরীহ মানুষকে একদল লোক হেনস্থা করছে এবং সব কিছু দেখেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। এর সপক্ষে কোনও যুক্তিই খাটে না। ধর্মান্তরণ অর্ডিন্যান্সকে ঢাল করে ভারতীয় মুসলিম এবং স্বস্বাধীনতা সম্পর্কে সচেতন মহিলাদের ইচ্ছাকৃতভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে’।
প্রাক্তন আইএএস অফিসারদের চিঠির জবাবে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং যোগীর তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সাফাই দেওয়া হয়নি। তবে এর আগে, চলতি সপ্তাহে ইলাহাবাদ হাইকোর্টেও তিরস্কৃত হয় যোগী সরকার। জোর করে ধর্মান্তরণ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে আদালত জানিয়ে দেয়, প্রাপ্তবয়স্ক মহিলারা নিজের পছন্দ মতো জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার এবং নিজেদের মর্জি মতো বাঁচার অধিকার রয়েছে। তাতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপকে দুই প্রাপ্তবয়স্কের মৌলিক অধিকার খর্ব বলেও উল্লেখ করে আদালত। সূত্র : আনন্দবাজার



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ