Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্ত আকাশে উড়তে চায় ফিলিস্তিনের মানুষ

গাজা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট একটা স্বপ্ন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

২ জুন, ১৯৯৬। সকাল ৭টা। ক্যাপ্টেন জায়েদ আল বাদা একটি ফোন পেলেন। অপরপ্রান্তের কণ্ঠস্বর শুনে তিনি হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ ফোনটি করেছিলেন ফিলিস্তিন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের নেতা ইয়াসির আরাফাত। তিনি তার ব্যক্তিগত পাইলটের কাছে একটি ইচ্ছের কথা জানালেন। সেটি ছিল, প্রথম ফিলিস্তিনি হিসেবে গাজা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার। অথচ তখনো এয়ারপোর্টের কাজ শেষ হয়নি। পাইলট জায়েদ মহাবিপদে পড়ে গেলেন। আল-জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘রাডার নাই, ম্যাপ নাই। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতিও পায়নি। এমন একটি এয়ারপোর্টে বিমান ল্যান্ড করব কীভাবে, সেটাই বলেছিলাম?’ কিন্তু ইয়াসির আরাফাত শুনেননি সে কথা। বললেন, তুমি ব্যবস্থা করো। আমি কায়রো এয়ারপোর্ট থেকে উঠবো, গাজা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করবো। কায়রো এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ কথাটা শোনার সাথে সাথেই নাকচ করে দিলো। যে বিমানবন্দরের ম্যাপ নাই, ওই বিমানবন্দরে কোনো বিমান নামার অনুমতি তারা দেবে না। ইয়াসির আরাফাত মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারককে ফোন করলেন। হোসনি মোবারক কায়রো এয়ারপোর্টকে নির্দেশ দিলেন, কায়রো থেকে গাজা একটা ফ্লাইট পরিচালনা করতে। আরাফাতের ব্যক্তিগত পাইলট ক্যাপ্টেন জায়েদ আল বাদা আরাফাতকে নিয়ে উড়াল দিলেন আকাশে। এক দিকে আবেগ, আরেক দিকে শঙ্কা। নিরাপদে রানওয়েতে নামতে পারবেন তো? নানা আশঙ্কায় ফ্লাইটের পুরো সময়টায় তার হাত-পা কাপছিল। কিন্তু সব শঙ্কা দুর করে যখন বিমান রানওয়েতে নামালেন, তার চোখে আনন্দের অশ্রু। তিনি বলেন, ‘আমি যখন বিমানবন্দরে ল্যান্ড করলাম, চারদিকে মানুষের উল্লাস। কেউ নাচানাচি করছে, কেউ চিৎকার করছে। আমি তখন জানালা দিয়ে ইয়াসির আরাাফাতের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনের একটি পতাকা উড়ালাম এবং সবাইকে শুভেচ্ছা জানালাম।’ ১৯৯৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানবন্দরটির উদ্বোধন হয়। জায়েদ ৫৫বার এই বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করেন। গাজার মানুষের কাছে এই বিমানবন্দর ছিল একটা স্বাধীনতার প্রতীক। বিমান যেমন মুক্ত আকাশে উড়ে, ফিলিস্তিনের মানুষ আজও ওই ভাবেই মুক্ত হয়ে উড়তে চায়। স্বাধীন একটা আকাশ চায়। ইয়াসির আরাফাত যখন এই বিমানবন্দর করার ঘোষণা দেন, তখন টেন্ডার জিতেন ৩০ বছর বয়সী ইঞ্জিনিয়ার উসামা আল খাওদারি। মাত্র ১৫০ জন লোক আর ৪টা গাড়ি নিয়ে এই প্রোজেক্ট শুরু হয়েছিল। রানওয়ে করতে সময় লেগেছিল মাত্র ৪৫ দিন। ইঞ্জিনিয়ার উসামার মেয়ে বলছিলেন, ‘আমার বাবা যখন বিমানবন্দরের কাজ করে, তখন আমরা কখনোই তাকে কাছে পাইনি। দিন রাত ২৪ ঘণ্টার কঠোর পরিশ্রমে ফিলিস্তিনের মানুষ এই এয়ারপোর্ট গড়ে তুলেছিলেন।’ কিন্তু ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিন আর ইসরাইলের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় গাজা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। আর কখনোই এই এয়ারপোর্ট থেকে কোনো বিমান উড়েনি। ২০০১ সালের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় ইসরাইলি বুলডোজার গুড়িয়ে দিলো গাজা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের রানওয়ে। আল-জাজিরা।



 

Show all comments
  • তুষার ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫৮ এএম says : 0
    আশা করি খুব শিঘ্রই এই স্বপ্ন পুরণ হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sheikh Shohel ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৮ এএম says : 0
    জয় হোক ফিলিস্তিনিদের
    Total Reply(0) Reply
  • MD. Tajul Islam ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৮ এএম says : 0
    Inssah allah akdin joy hobey
    Total Reply(0) Reply
  • Sawda Islam ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৫৯ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • তুষার ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:০০ এএম says : 0
    সারাবিশ্বের মুসলীম দেশগুলোর উচিত ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো
    Total Reply(0) Reply
  • করিম ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৫১ পিএম says : 0
    অচিরেই ফিলিস্তিনিদের জয় হবে। ইনশা আল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১২ পিএম says : 0
    O'Allah send us a Leader who will unite all the Muslim around the world and he will rule by the Law of Allah then all the Kafir will fear us and they will flee from our Land. Stern warning from Allah [SWT] regarding unity of Muslim Ummah: Surah 8:Al-Anfal: Ayat: 73.. And those who disbelieve are allies of one another, [and] if you [Muslims of the whole world collectively] do not do so [i.e: become allies, as on united block under one Khalifah] (a chief Muslim ruler for the whole Muslim world) to make victorious Allah’s religion of Islamic Monotheism), there will be Fitnah [war, battles, rape, adultery, fornication, murder, polytheism] and oppression on the earth, and a great mischief and corruption will spread every corner in the world. It has been mentioned in Tafsir At-Tabari, that the best interpretation of this above Verse: [-And those who disbelieve are allies of one another, ] (and) if you (Muslims of the whole world collectively) do not do so (i.e; become allies, as one united block. “That if you do not do what We [Allah] have ordered you to do , [i.e: all of you (Muslims of the whole world] do not become allies as on united block to make Allah’s religion Islam) victorious, there will be a great Fitnah (polytheism, war, battles, killing, robbing, a great mischief, corruption and oppression, adultery, fornications,”) ] And it is Fitnah to have many Khalifahs (Muslim rulers). As it has been mentioned in Sahih Muslim By ‘Arfajah, who said: I heard Allah’s Messenger [SAW] saying: “When you all (Muslims) are united [as one block] under a single Khalifah [chief Muslim ruler] then a man comes up to disintegrate you and separate you into different groups, then kill that man.” Also there is another narration in Sahih Muslim: Narrated Abu Sa’id Al-Khudri [RA] Allah’s messenger [SAW] said: “If the Muslim world gave the Bai’a (pledge) to two Khalifah [chief muslim rulers], the first one who was given the Bai’a [pledge] first will remain as the Kahlifah, then kill the latter [the second] one.” So it is a legal obligation, from the above-mentioned evident proofs (from the Qur’an and the Prophet’s statement), that there shall not be more than one Khalifa for the whole Muslim world or otherwise there will be a great Fitnah [mischief and evil.] amongst the Muslims, the ultimate results of which will not be worthy of praise.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ