Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কাশ্মীরে ১০ হাজার আপেল গাছ নিধন, অসহায় কাশ্মীরিরা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:৩২ এএম

কয়েক দশক ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে সযত্নে যে আপেল বাগান তৈরি করেছিলেন কাশ্মীরের মানুষ। সরকারি বুলডোজারের নীচে তা আজ ধুলোয় মিশে গিয়েছে। কৃষক আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালীনই জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনের নির্দেশে উপত্যকায় ১০ হাজারের বেশি আপেল গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। খবর আনন্দবাজারের

সম্প্রতি বিক্ষোভ চলাকালীন জম্মু কাশ্মীর প্রশাসনের নির্দেশে উপত্যকায় ১০ হাজারেরও বেশি আপেল গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যেসব আপেল বাগান সাত পুরুষ ধরে করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই নয়, বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গুর্জর ও বাখরওয়াল উপজাতিদের মাটির কুঁড়েঘর।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর থেকেই কাশ্মীর উপত্যকা এমনিতেই গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। করোনা মহামারিতে দুরাবস্থা পর্যটন শিল্পেও। তাই সেখানকার বাসিন্দারা মনোযোগী হয়েছিলেন তাদের বংশপরস্পরায় চলে আসা একমাত্র আয় উপার্জনের মাধ্যম আপেল চাষে। কিন্তু দীর্ঘদিনের শ্রম আর যত্নে গড়ে তোলা বাগান ধ্বংস হতে দেখলেন চোখের সামনেই।
চলতি বছরের নভেম্বরে মধ্য কাশ্মীর বদগাম জেলার কানিদাজান ও তার আশাপাশের এলাকায় শুরু হয় আপেল গাছ নিধন। এই এলাকাতে বসবাস করে আসছিল মুসলিম যাযাবর গোষ্ঠীর গুর্জর ও বাখরওয়াল উপজাতি। যারা ১৯৯১ সালে তফসিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বন বিভাগ এই উপজাতিদের আপেল বাগানে চালায় নিধনযজ্ঞ। গুড়িয়ে দেয়া হয় তাদের থাকার মাটির কুঁড়েঘরও।
৬০ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল গনি ওয়াগে জানান, ১০ নভেম্বর সকালে হঠাৎ খবর পান যে একদল লোক কুড়াল-করাত নিয়ে তার বাগানে গাছ কাটছেন। তিনি তড়িঘড়ি করে গিয়ে দেখেন পুলিশ ও সিআরপিএফ এর তত্ত্বাবধানে চলছে গাছ কাটার কর্মযজ্ঞ। ৫০ টি গাছের ফল বেঁচেই চলত ৭ মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। অনেক অনুনয় বিনয় করেও কোন লাভ হয়নি। চোখের সামনে লুটিয়ে পড়তে দেখলেন তার অতিযত্নে তৈরি সাজানো বাগান।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, গত ১০ নভেম্বর ৫০ জন আধিকারিকের তত্বাবধানে প্রায় ১০ হাজার আপেল গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার বিরোধিতা করে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলে মামলার হুমকি দেয় বন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
এদিকে, সরকারের দাবি কাশ্মীরে আপেল বাগানগুলে বন দফতরের জমির উপর তৈরি।
অথচ সাত পুরুষ ধরে সেখানে আপেল চাষ করে আসছেন উপজাতির লোকেরা। গুর্জর ও বাখরওলাদের পাশাপাশি সেখানে ১০ লাখেরও বেশি উপজাতি ও বনবাসীরা ভোগ করেন অরণ্যের অধিকার আইন। ভোগ করেন কাগজে কলমে ওই জমির মালিকানাও।
গত বছর উপত্যকার জন্য সংরক্ষিত সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করার পর ১৫৫ টি কেন্দ্রীয় আইন সেখানে কার্যকর হয়ে যাবে। সে সময় উপত্যকার মূখ্যসচিব বিভিআর সুব্রক্ষণ্যমের দফতর থেকে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এ সংক্রান্ত সমীক্ষা সম্পূর্ণ হলে মার্চ মাসে অরণ্যের অধিকার আইন কার্যকর হবে।
অথচ আইন কার্যকর হওয়ার আগে হাজার আপেল গাছ নিধন ও স্থানীয়দের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়া এবং উচ্ছেদের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও ধর্মীয় বিদ্বেষ রয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যেখানে দুই উপজাতির প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করছেন। আইনজীবীরা বলছেন, তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় এদের নোটিশ ধরানো বেআইনি পদক্ষেপ। আর বনবাসীদের বাড়িঘর ধ্বংস ও তাদের উচ্ছেদ করতে হলে ক্ষতিপূর্ণ দিতে হবে। এমন আশঙ্কা থেকেই সরকার আইনটি কার্যকর করতে ঢিলেমি করছে বলেও অভিযোগ করছেন আইনজীবীরা। সূত্র : আনন্দ বাজার, ডিএনডিটিভি



 

Show all comments
  • habib ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:৫৫ এএম says : 0
    India is a hypocrite country
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৭ পিএম says : 0
    O'Allah we do not have any Muslim leader who will fight BJP modi barbarian and his barbarian army, they are killing muslims in kashmir/raping muslims/they cut 10 thousands apple tree so that kashmir muslim will starve to death so that kafir hindu will come to kashmir and they occupy muslim kashmirland, O'Allah destroy them fore ever and wipe out from Kashmir. Ameen.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ