Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে ফের আলোচনার প্রস্তাব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:১৪ এএম

ভারতের আন্দোলনরত কৃষকদের আবারো আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম কৃষি সচিব বিবেক আগরওয়াল।

ক্রান্তিকারী কিষাণ ইউনিয়নের পাঞ্জাব শাখার সভাপতি ডা. দর্শন পালকে লেখা পাঁচ পাতার চিঠিতে বিবেক আগরওয়াল জানিয়েছেন, কৃষি আইনের বিভ্রান্তি কাটাতে এর আগেও কেন্দ্র ও কৃষক সংগঠনগুলোর মধ্যে বৈঠক হয়েছে। আবারও আলোচনার জন্য প্রস্তাব দিচ্ছি। তবে দিনক্ষণ আপনাদের সিদ্ধান্তমাফিক স্থির হবে। সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞান ভবনে এই বৈঠক হবে বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে ১৬ ডিসেম্বর আন্দোলনকারী কৃষকরা কেন্দ্রের আইন সংশোধনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। তার পর এই চিঠি।
শুক্রবার পিএম-কিসান প্রকল্পের অর্থ বিলির অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান বোঝাতে সেই মঞ্চ সদ্ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে মোদী সরকারের সামনে। তার আগে বিজেপি-র তরফে যাবতীয় প্রস্তুতি তুঙ্গে। জায়ান্ট স্ক্রিনে মোদীর ভাষণ প্রচারের ব্যবস্থা, ভাষণের সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-বিধায়কদের উপস্থিতির নির্দেশ, স্থানীয় ভাষায় অসংখ্য লিফলেট বিলি, ব্লকে ব্লকে দলীয় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি- সবই রয়েছে বিজেপি-র পরিকল্পনায়। এই আবহে বৃহস্পতিবার কৃষকের কাছে ফের আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রক। যদিও কৃষকদের দাবি, ওই আহ্বান বিজেপি সরকারের প্রচারের অঙ্গমাত্র।

মোদী সরকারের তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে মাসখানেক ধরে চলছে কৃষক আন্দোলন। কেন্দ্র এবং কৃষকদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনাতেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। দিল্লির সীমানায় সিংঘু, তিকরি এবং গাজিপুর এলাকায় আন্দোলনরত কৃষকেরা নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন। এই আবহে শুক্রবার ৯ কোটি কৃষক পরিবারের মধ্যে পিএম-কিসান প্রকল্পের অর্থ বিলি করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনাও করবেন তিনি। শুক্রবারই কেন্দ্রের আলোচনার আহ্বানের উত্তর দিতে পারে কৃষক ইউনিয়নগুলি। যদিও কৃষক ইউনিয়নগুলির দাবি, সরকার এমন এক আবহ তৈরি করতে সচেষ্ট যেন কৃষকেরা আলোচনায় আগ্রহী নন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। যে দিনটি ‘সুশাসন দিবস’ হিসেবে পালন করে মোদী সরকার।

মোদীর ভাষণ ঘিরে আগে থেকেই তোড়জোড় সারা বিজেপি-র। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার নির্দেশে, প্রতিটি ব্লকে জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে মোদীর ভাষণের প্রচার করা হবে। সেই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে প্রত্যেক জেলা স্তরে, কিষান মান্ডিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রয়েছে স্থানীয় ভাষায় লেখা লিফলেট বিলির ব্যবস্থা। এই লিফলেটে কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝানো হয়েছে। বিজেপি-র মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়করাও উপস্থিত থাকবেন মোদীর ভাষণ শুনতে।
প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উপস্থিত থাকবেন দিল্লির মেহরৌলিতে কিসানগড় গোশালায়। সেখানেও কৃষকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন তিনি। তবে প্রশ্ন উঠছে, এত কিছুর পরেও ২৮ দিন ধরে চলা কৃষক আন্দোলনে কি কোনও রফাসূত্র বার হবে? এই আবহে শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে কৃষকদের কী বার্তা দেন, সে দিকেই উৎসুক নজর থাকবে সকলের।

কৃষকদের ঐক্য ও মনোবল ভাঙতে চেষ্টার ত্রুটি রাখা হচ্ছে না। যেমন, আলাদাভাবে সরকারি মদদপুষ্ট কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে সরকার কথা বলছে। সেই সংগঠনগুলোকে দিয়ে নতুন আইন মেনে নেয়া সংক্রান্ত বিবৃতি দেয়া হচ্ছে।

কৃষকদের এই আন্দোলন প্রতিদিনই নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। দিল্লি সীমান্তে অবরোধকারী কৃষকদের ৩৫টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, আগামী ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান করবেন তখন দেশের মানুষ যেন প্রতিবাদ স্বরূপ থালা, বাসন বাজান। করোনার সময় চিকিৎসকদের সম্মানে একদিন থালা, বাসন বাজানোর অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির নীতির বিরুদ্ধে সেই অস্ত্রেরই প্রয়োগ করতে চাইছেন কৃষক নেতারা। সূত্র : ডিএনডিটিভি, আনন্দবাজার



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ