Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দর্শকশূন্য মাঠে খেলা মেসির কাছে ভয়ানক

‘ফুটবলই বদলে দিয়েছে করোনা’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

গত মৌসুমটা ভালো যায়নি ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার। তবে ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ঠিকই দেখিয়েছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। জিতে নিয়েছেন লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফি। আর সেই পুরস্কারটি আগের দিন হাতে পেয়েছেন সময়ের অন্যতম সেরা এ তারকা। আর পুরস্কার হাতে তুলে নেওয়া দিনে মাদ্রিদ ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মার্কাকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মেসি। তাতে করোনাকালে দর্শকশ‚ন্য মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এই সব ম্যাচকে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক তুলনা করেছেন ট্রেনিং সেশনের সঙ্গে।
মাঠে দর্শক না থাকার বিষয়টি বাজেভাবে প্রভাব ফেলছে মেসি ও বার্সেলোনার ওপর। গত মৌসুমে করোনাভাইরাসের কারণে যখন লিগ বন্ধ হয়ে যায় তখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল বার্সেলোনা, বাকি ছিল ১১ রাউন্ডের খেলা। পুরনায় শুরু হওয়া লিগে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি কাতালান দলটি। সেই সুযোগে লিগ জিতে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। লিসবনে চ্যাস্পিয়ন্স লিগের শেষ আট থেকেও তারা ছিটকে পড়ে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে।
চলতি মৌসুমের শুরুটাও তাদের ভালো হয়নি। লিগ টেবিলে তাদের অবস্থান পাঁচে। লিগে তাদের সবশেষ এমন বাজে অবস্থায় দেখা গিয়েছিল ৩৩ বছর আগে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ২০০৬ সালের পর এবারই প্রথম তারা নকআউট পর্বে উঠেছে গ্রæপের দ্বিতীয় দল হিসেবে। ২০০৭-০৮ আসরের পর মেসিরও এটিই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। সব প্রতিযোগিতা মিলে তার গোল ৯টি, এর পাঁচটিই এসেছে পেনাল্টি থেকে। দর্শক না থাকাকেই এর কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন সময়ের সেরা তারকা। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকার এমনই কিছু অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেয়া সেই সাক্ষাৎকারের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো দৈনিক ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য-
প্রশ্ন : টানা সাতটি পিচিচি জয় কি দারুণ কিছু নয়?
মেসি : সত্যি বলতে কি আমি কখনোই ভাবিনি যে আমি এতোগুলো (পিচিচি) জিতব এবং (তেলমো) জারাকে ছাড়িয়ে যাব। এটা খুবই আনন্দদায়ক অনুভ‚তি।
প্রশ্ন : যখন আপনি পিচিচি ট্রফি জিতলেন এ মুহ‚র্তে আপনার অনেক কম গোল। আপনি কি অষ্টম পুরস্কার পাওয়ার কথা চিন্তা করছেন?
মেসি : আমি জানি না। আমি এ ব্যাপারে ভাবছিও না। এটা আমাকে চিন্তায় ফেলে না। আমি এরচেয়ে লা লিগা শিরোপা জিততে চাই। পিচিচির চেয়ে গত মৌসুমে আমরা যা জিততে পারিনি তা জিততে চাই। আমরা এর জন্য লড়াই করব।
প্রশ্ন : এই মৌসুমে, আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগায় বার্সেলোনার মধ্যে একটি বড় পার্থক্য দেখেছি। আপনার কি মনে হয় দল দুটি প্রতিযোগিতা জিততে পারে?
মেসি : আমরা সবসময় সবকিছু জেতার চেষ্টা করি। যেমনটি এই ক্লাবের ক্ষেত্রে সর্বদা হয়। আমরা অল্প অল্প করে উন্নতি করছি। এটি সত্যি যে লা লিগায় ফিরতে কিছুটা সময় লেগেছে। আমাদের এত পয়েন্ট হারানো উচিত হয়নি। আমি মনে করি আলাভেস ও গেতাফের বিপক্ষে এবং ক্যাম্প ন্যুতে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আমরা আরও বেশি প্রাপ্য ছিলাম। এই তিনটি ম্যাচে আমরা অনেক গোল করার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলাম এবং আমরা যদি তা গোলে রূপান্তরিত করতে পারতাম তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম থাকতো।
প্রশ্ন : লা লিগায় সঠিক পথে ফিরে আসার কোনো স‚ত্র আছে কি?
মেসি : এখন গুরুত্বপ‚র্ণ হচ্ছে টেবিলের উপরে উঠতে কয়েকটি ম্যাচে ভালো ফলাফলের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। এর জন্য সময় লাগবে এবং মহামারীর এ সময়ে ম্যাচগুলো খুব কঠিন। সত্যটি হলো ফুটবল অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং এটা সবার জন্য কঠিন। তবে ধাপে ধাপে জিনিসগুলি স্থির হয়ে উঠবে।
প্রশ্ন : নয় মাস কেটে গেছে মহামারীতে খালি স্টেডিয়ামে খেলা হচ্ছে। ভক্তদের ছাড়া খেলা কি আপনার পক্ষে কঠিন?
মেসি : হ্যাঁ, অনেক। ভক্তদের ছাড়া খেলাটা ভয়ঙ্কর। এটি ভালো অনুভ‚তি নয়। স্টেডিয়ামে কাউকে না দেখে খেলা অনেকটা অনুশীলনের মতো। এবং শুরুতে ম্যাচে আসতে অনেক বেশি সময় লাগে। এজন্য আমরা এমন ম্যাচ দেখি। এ কারণে যার বিপক্ষেই খেলেন না কেন জয়ী হওয়া খুব কঠিন। মহামারীটি ফুটবলকে অনেক পরিবর্তন করেছে এবং খুব খারাপ করেছে। আমরা এটি ম্যাচে দেখে আসছি। আশা করি এত কিছুর পরেও আমরা সমর্থকদের স্টেডিয়ামগুলিতে ফের দেখতে পাব এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারব।
প্রশ্ন : আপনি স¤প্রতি একটি বিশেষ গোল করেছেন যা পরে আপনি ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে উৎসর্গ করেছিলেন।
মেসি : এটি একটি খুব বিশেষ দিন ছিল এবং আমি সামান্য শ্রদ্ধা জানাতে সক্ষম হয়েছি। আমি তার জার্সিটি দেখাতে সক্ষম হয়েছি। ডিয়েগো যে আমাদের মাঝে নেই এটা বোঝাতে এমন দিনে সেটা অসাধারণ এক স্মৃতি।
স্পেনের শীর্ষ ফুটবলে মাঠে দর্শক নেই গত মার্চ থেকে। দেশটির জনসংখ্যার বড় একটা অংশ ভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিলে আগামী এপ্রিল থেকে মাঠে দর্শক ফিরতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মৌসুমের পিছিয়ে যাওয়া রিয়াল সোসিয়েদাদ-আথলেতিক বিলবাও কোপা দেল রে ফাইনাল ম্যাচ হবে আগামী ৪ এপ্রিল; স্প্যানিশ গণমাধ্যমের খবর- এই ম্যাচ দিয়ে দেশটিতে মাঠে ফিরতে পারে দর্শক।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ