মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যৌনকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। দিন দিন বিকারের সঙ্গে পাল্টা দিয়ে বাড়ছে যৌনকর্মী। ৩০ বছর বয়সী সন্ধ্যা সামন্ত (ছদ্মনাম) ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা। আগে কলকাতায় গিয়ে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করলেও লকডাউনে বেকার হয়ে যান। বেশ কয়েক মাস বেকার থাকার পর এখন তিনি যৌনকর্মী।
মালতি সরদারের (ছদ্মনাম) বয়স ৩৬ বছর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি এলাকায় বাড়ি। আগে বানতলায় চামড়ার কারখানায় কাজ করতেন। লকডাউনের সময় কাজে যেতে পারছিলেন না। সে কারণে সেখানে পরে আর তাকে কাজ দেওয়া হয়নি। অনেক পথ ঘুরে এখন তিনিও যৌনকর্মী।
হুগলি নদীর পানিতে সূর্য ডুবলেই ডায়মন্ড হারবারের ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক বা নদীর ধারে ভিড় করেন এ রকম সন্ধ্যা, মালতির মতো আরো অনেকে।
তাদের কেউ কিছু দিন আগে পর্যন্ত ছিলেন পরিচারিকা, কেউ শ্রমিক, আবার কেউ সবজি ব্যবসায়ী। জেটি ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ধরে জাতীয় সড়কের দু’পাশে রোজ সন্ধ্যায় তারা ভীড় জমান।
প্রসাধনের মোড়কে নিজেদের ঢেকে দাঁড়িয়ে থাকেন রাস্তায়। লকডাউন পর্বে কাজ হারানোর পর করোনা-সংক্রমণের শঙ্কাকে অগ্রাহ্য করে রোজগারের আশায় এই পেশায় ভিড় বাড়ছে প্রতিদিন। স্থানীয় সমাজকর্মীদের একাংশ অন্তত সেটাই বলছেন।
সন্ধ্যার স্বামী পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। গত দুই বছর ধরে শয্যাশায়ী। তিনি বলেন, প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হয়। দুই বাচ্চা রয়েছে। আগে কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করতে যেতাম। সকালে যাওয়া, রাতে ফেরা।
কিন্তু, করোনার সময় আমাকে সেসব বাড়ি থেকে যেতে বারণ করে দিল। আমার জন্য করোনা হতে পারে তাদের। তার পর তো ট্রেন-বাস বন্ধ হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত কোনো কাজ না পাওয়ায় আমার এক বোন এই কাজে নামার কথা বলে। সংসার চালানোর জন্য আমিও রাজি হয়ে যাই বলে জানান তিনি।
কিন্তু যে পেশায় সন্ধ্যা এসেছেন, সেখানেও তো করোনাভাইরাসের থাবা। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এ পেশায় অসম্ভব। কাজেই ‘খদ্দের’ আগের চেয়ে অনেক কম।
মালতি বলেন, ভেবেছিলাম এই পথে আয় হবে। পরিবারের চাহিদা মিটবে। কিন্তু দিনদিন খারাপ অবস্থা। যে কয়েকজন আসেন তাদের করোনা-ভয় কাটলেও পুলিশের ভয় থাকে। যখন তখন এসে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। সঙ্গে বাড়ছে আমাদের মতো মেয়েদের এ পথে চলে আসা। কীভাবে যে জীবন চলবে জানি না।
লকডাউনের সময় কাজ হারানোর পর এই পেশাকে সম্বল করেছেন অনেকে। কিন্তু এখানেও রোজগারে টান পড়ার ফলে দিশেহারা যৌনকর্মীদের অনেকেই এখন সরকারি সাহায্যের দাবি তুলছেন।
সন্ধ্যা বলেন, সরকার যদি কোনো রকম একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিত, তা হলে উপকার হতো। এখানে তেমন রোজগার নেই। আর ভয়ও করে। যদি কিছু হয়ে যায়!
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক সুকান্ত সাহা বলেন, করোনাভাইরাস সংকমণ পরিস্থিতিতে যৌনকর্মীদের জন্য প্রতিটি ব্লক ও পুরসভা এলাকায় বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বনির্ভর প্রকল্পেও তাদের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী স্বপ্না মিদ্যা বলেন, যৌনপল্লির একটা হিসাব আমাদের কাছে আছে। কিন্তু এই পেশার অনেকেই এখন রাস্তার ধারে দাঁড়ান। তাদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানা নেই। কারণ, বেশিরভাগই নিজেদের পরিচয় গোপন করে রাখেন। তবুও আমাদের অনুমান, এই মুহূর্তে সংখ্যাটা একশর উপরে তো হবেই।
সংখ্যাটা ধীরে ধীরে বাড়ার কথা মেনে নিয়েছেন স্বপ্না। তার মতে, লকডাউনের জেরে অনেক পেশাতেই সরাসরি কোপ পড়েছে। ফলে সেসব জায়গা থেকে কাজ হারানোদের অনেকেই এই পেশায় আসছেন।
তিনি আরো বলেন, দু’বেলা খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্যই অসহায় নারীরা এই পথ বেছে নিচ্ছেন। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেকেই তাদের ভালো চোখে দেখেন না। পুলিশও মানবিক ভাবে দেখে না এই পেশাকে। তাদের কাছে মানবিক হওয়ার অনুরোধ করা ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারি। সূত্র: আনন্দবাজার
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।