Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাপানে আলোচিত টুইটার কিলার তাকাহিরোর মৃত্যুদণ্ড

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:২২ পিএম

জাপানের আলোচিত ‘টুইটার কিলার’ তাকাহিরো শিরাইশির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে সে দেশের আদালত। শিকার ধরার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার ব্যবহার করায় এই সিরিয়াল কিলার পরিচিতি পায় ‘টুইটার কিলার’ নামে।

২০১৭ সালেই কুখ্যাত ওই খুনী পুলিশের জালে ধরা পড়েছিল। তিন বছর ধরে শুনানি চলার পর টোকিওর আদালত মঙ্গলবার তাকাহিরো শিরাইশির সাজা ঘোষণা করে। চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় শুনতে এদিন আদালত চত্বরে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আদালতকক্ষে আমজনতার জন্য ১৬টি আসন বরাদ্দ থাকলেও সেখানে উপস্থিত ছি‌লেন ৪৩৫ জন! শিকার ধরতে টুইটারকেই বেছে নিয়েছিল মানসিক বিকারগ্রস্ত এই যুবক। এই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং মাধ্যমে কেউ আত্মহত্যার ইচ্ছে প্রকাশ করলে, তাদের টার্গেট করত তাকাহিরো শিরাইশি। আলাপ জমিয়ে ডেকে আনত নিজের অ্যাপার্টমেন্টে। সেই আত্মহত্যা-উন্মুখ, হতাশাগ্রস্তদের সামনে ভাবখানা এমন করত যেন সে নিজেও আত্মহত্যা করতে চলেছে। তাকাহিরো সকলকে বাড়িতে ডেকে এনে প্রথমেই বলত, নিজের জীবন শেষ করার ক্ষেত্রে সে সাহায্য করতে পারে। তার ফাঁদে পা দিলেই আর বাঁচার কোন উপায় ছিল না।

এ ভাবেই একটা খুনের নেশা থেকে আর একটা খুন- তাকে করে তোলে সিরিয়াল কিলার। পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, মোট ৯ জনকে সে খুন করেছে। এই ৯ জনের মধ্যে একজন শুধু পুরুষ। তাকাহিরোর হাতে খুন হওয়া কোনও এক তরুণীর প্রেমিক। মুখ বন্ধ করতেই তাকে খুন করা হয়েছিল। বাকি আট শিকারের মধ্যে নাবালিকা থেকে যুবতী- বিভিন্ন বয়সিরা ছিলেন। বয়স ১৫ থেকে ২৬-এর মধ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকাহিরোর নাম ছিল ‘হ্যাঙম্যান’ বা জল্লাদ। এই ন-জনকে খুনের কথা অস্বীকার করেনি বছর তিরিশের এই যুবক। অবশ্য অস্বীকারের উপায়ও ছিল না। কারণ, নিজের অ্যাপার্টমেন্টেই রেখেছিল সেসব মৃতদেহ। পুলিশি অভিযানের সময় তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই ৯ জনের বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। পুলিশি জেরায় এই সিরিয়াল কিলারের স্বীকারোক্তি ছিল, আট জনকে খুনের আগে সে ধর্ষণও করেছিল। খুনের পর কষাইয়ের মতো দেহগুলি টুকরো করেছে। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।

এই খুনীর আইনজীবীরা তাকে বাঁচাতে চেষ্টার কসুর করেনি। তাদের যুক্তি ছিল, নিহতরা সকলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জীবন শেষ করে দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তাই তাদের সাহায্য করেছে তাকাহিরো। বিচারকরা অবশ্য সে যুক্তি মানেননি। জানিয়ে দেন, হতে পারে তারা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, তাদের কেউই তাকাহিরোকে খুন করার অনুমতি দেননি। এর পরই আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। তাকাহিরোর হাতে খুন হওয়া এক তরুণীর বাবার প্রতিক্রিয়া, ‘ওই লোকটাকে আমি ওর মৃত্যুর পরেও ক্ষমা করতে পারব না।’ সূত্র: সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাপান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ