মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আজারবাইজানের জয়ে উচ্ছ্বসিত তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবার আর্মেনিয়ায় সরকার পরিবর্তনের ডাক দিলেন। আজারবাইজানের বিজয় উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। বিজয় উৎসবে সেনা প্যারেডসহ ছিল তুরস্কের ড্রোনও, যা আর্মেনিয়াকে হারাতে সাহায্য করেছে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, নতুন সরকার কিছু শর্ত মানলে আজারবাইজানের সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা হতে পারে এবং তিনিও তুরস্কের সঙ্গে আর্মেনিয়ার সীমান্ত খুলে দেবেন।
আর্মেনিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে আজারবাইজানকে সামরিক ও কূটনৈতিক সাহায্য ও সমর্থন দিয়েছে তুরস্ক। দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, আজারবাইজানের সেনাকে শক্তিশালী করতে সিরিয়া থেকে বাহিনী সরিয়ে সেখানে পাঠিয়েছেন এরদোয়ান। ফলে আজারবাইজানের জয় সহজ হয়েছে। বিতর্কিত নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে সংঘাতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মস্কোর মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এর ফলে আর্মেনিয়াকে নাগর্নো কারাবাখের আর্মেনীয় জনবহুল এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হয়েছে। এমনকি ১৯৯০ পরবর্তী সময়ে আর্মেনীয় জনগণ যে ছয়টি এলাকায় আধিপত্য স্থাপন করেছিল, সেগুলোও আজারবাইজানকে দিয়ে দিতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমরা আশা করি আর্মেনিয়ার মানুষ তাদের সেইসব নেতৃত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পাবে, যারা অতীতে তাদের মিথ্যা বলে বুঝিয়েছে এবং দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।’
এরদোয়ান জানিয়েছেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য তিনি রাশিয়া, আজারবাইজান, ইরান, জর্জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে সম্ভব হলে আর্মেনিয়াও থাকবে।
এরদোয়ানের দাবি, আর্মেনিয়ার সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছে। তারা শহর, গ্রাম, মসজিদ ধ্বংস করেছে। তাই তাদের বিচার হওয়া উচিত। আর্মেনিয়ার সেনা অবশ্য দাবি করে, এসব ধ্বংস হয়েছে আজারবাইজানের সেনার আক্রমণে।
এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা এখানে সমবেত হয়েছি, একটা অসাধারণ জয়ের উৎসব করতে। আজারবাইজান নিজের ভূমি ফিরে পেয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে সংঘাত শেষ। যে সংঘাত রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে ছিল, সেটি এবার অন্য ফ্রন্টে হবে।’
হুট করেই নাগরনো কারাবাখে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আবার আচমকাই সংকটের দৃশ্যপটে রাশিয়া উপস্থিত হয়ে যুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছে। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। নাগরনো কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের লড়াই বিগত ৩০ বছরের। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর শুরু হওয়া এই লড়াইয়ে উভয় দেশের ৩০-৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।
সর্বশেষ ৬ সপ্তাহের এই যুদ্ধে জয় হলো কার? আজারবাইজান আর্মেনিয়াকে হারিয়ে দিল, নাকি ফ্রান্সের ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে তুর্কি ড্রোনের জয় হলো। অথবা এই অঞ্চলে রাশিয়া আরও একটি ঘাঁটি গড়ার সুযোগ পেল। ওদিকে কেবল আর্মেনিয়া একাই পরাজিত পক্ষ নয়। ফ্রান্সও মনে হয় পরাজিতের দলেই থাকবে। ছায়া যুদ্ধে ফ্রান্স তুরস্কের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেনি।
যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্তানুসারে মনে হবে, আপাত-সমঝোতায় আজারবাইজান লাভবান হয়েছে। দেশটির রাজধানী বাকুতে নাগরিকেরা উল্লাস করেছেন। বিপরীতে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানের রাজপথ ছিল বিক্ষোভকারীদের দখলে। বিক্ষুব্ধরা আজারিদের কাছে নাগরনো কারাবাখের বিভিন্ন এলাকা ছেড়ে দেওয়ায় স্বভাবতই খুশি হননি। প্রকৃতপক্ষে এবারের লড়াইয়ে লাভবান হলো রাশিয়া ও তুরস্ক। রাশিয়া ধীরে ধীরে মধ্যপ্রাচ্যের সীমান্তে চলে আসছে। আর তুরস্ক আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান সংহত করছে। সূত্র : ডয়েচে, আল জাজিরা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।