Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্মঘটে অচল ভারত, দিল্লিতে দুই কৃষকের মৃত্যু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:৪৪ পিএম

মোদি সরকারের গৃহীত নতুন কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে ভারতজুড়ে ধর্মঘট পালন করছে কৃষকরা। আন্দোলনের বধ্যভূমি দিল্লিতে এ দিন মৃত্যু হয়েছে আরও দুই কৃষকের। সোমবার ভোররাতে রাতে দিল্লি-হরিয়ানার সংযোগস্থল টিকরি সীমানায় পঞ্জাবের এক কৃষকের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে ওই একই এলাকা থেকে আরও এক কৃষকের দেহ উদ্ধার হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথম জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ফলে দ্বিতীয় জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর ধারণা পুলিশের।

মৃতদের মধ্যে প্রথম জনকে ৪৮ বছরের মেওয়া সিংহ বলে শনাক্ত করা গিয়েছে। পাঞ্জাবের মোগা জেলার খোটে গ্রামের বাসিন্দা তিনি। গত ২৬ নভেম্বর টিকরি সীমানায় আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। হাজার হাজার কৃষকের সঙ্গে পুলিশের জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাসের মোকাবিলা করে এত দিন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সোমবার রাতে আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। গ্রামের বাড়িতে ইতিমধ্যেই মেওয়ার মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে। সহযোদ্ধার মৃত্যু বুকে নিয়েই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বাকি কৃষকরা। তা নিয়ে শোকপালনের সময়টুকুও পাননি তারা। তার আগেই এ দিন সকালে ফের তাদের নাড়িয়ে দেয় ৩২ বছরের অজয় মুরের মৃত্যু। আদতে হরিয়ানার সোনিপতের বাসিন্দা অজয় গত কয়েক দিন ধরেই সেখানে অবস্থান বিক্ষোভের অংশ ছিলেন। রাতে স্থানীয় একটি পার্কে শুতেন তিনি। এ দিন সকালে সেখানে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় হরিয়ানা পুলিশের একটি দল। অজয়ের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রচণ্ড ঠান্ডার জন্যই মৃত্যু হয়েছে অজয়ের। এর আগে, গত বুধবার এই টিকরি সীমানাতেই ৬০ বছর বয়সি এক কৃষকের মৃত্যু হয়। তার আগে ১ ডিসেম্বর বিক্ষোভ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বলজিন্দর সিংহ নামের আর এক কৃষকের। প্রায় দু’সপ্তাহব্যাপী এই আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৯ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন।

শুধু দিল্লিই নয়, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা এবং কর্নাটকেও ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে রাস্তায় নেমে এসেছে বিরোধী শিবিরের দলগুলি। এমনকি যে বিহারে সদ্য সরকার গড়তে সফল হয়েছে বিজেপি, সেখানেও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এমনকি গুজরাতেও একই পরিস্থিতি। তবে এখনও পর্যন্ত নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি কেন্দ্রের কাছ থেকে। বরং দেশকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দেগে চলেছেন কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা।

পাশাপাশি, সোমবার সিঙ্ঘু সীমানায় কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর পর এ দিন নিজের বাসভবনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। দিল্লি পুলিশ যদিও জানিয়েছে, গৃহবন্দি করা হয়নি কেজরীওয়ালকে। বরং আপ সমর্থক এবং অন্য দলের সদস্যদের মধ্যে যাতে সংঘর্ষ না বাধে, তার জন্য পুলিশবাহিনী বসানো হয়েছে। তবে তাদের এই দাবি মানতে নারাজ আম আদমি পার্টি (আপ)-র সদস্যরা। কৃষক সমব্যথী হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অঙ্গুলিহেলনেই কেজরীওয়ালকে দিল্লি পুলিশ গৃহবন্দি করেছে বলে অভিযোগ তাদের। কেজরীওয়ালের বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে একপ্রস্থ ধস্তাধস্তিও হয় তাদের। সূত্র: এবিপি, নিউজ ১৮।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ