বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাগুরা শহরে শুক্রবার রাতে অস্ত্রের মহড়া মানুষকে আবার ভাবিয়ে তুলেছে। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ দুই জায়গায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দুটি আলাদা জায়গায় দুজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগের কর্মীদের দায়ী করেছেন হামলায় আহত একজনের স্বজনেরা। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।
হামলায় আহত দুজনকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন মো. মারুফ (৩২) মাগুরা শহরের কেশব মোড় এলাকায় বদরুল আলমের ছেলে। আহত ব্যক্তির স্বজনরা বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কেশব মোড় এলাকায় একদল মুখোশধারী যুবক মারুফকে কুপিয়ে জখম করে। তবে কারা, কী কারণে হামলা করেছে, তা তাঁরা জানেন না।
এর আধা ঘণ্টা পর রাত আটটার দিকে শহরের ভায়নার মোড়ে যুবদল কর্মী খান মাহাবুবুর রহমান ওরফে শান্তির (৩০) ওপর হামলা হয়। তিনি ভায়না এলাকার মিলন খানের ছেলে। গুরুতর আহত মাহাবুবুর রহমানকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তির পর রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
হামলার সময় মাহাবুবুর রহমানের সঙ্গে থাকা ভায়না এলাকার অপু শেখ বলেন, রাত আটটার দিকে চা খেতে তাঁরা তিনজন ভায়নার মোড়ে যান। এ সময় ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেলে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আকস্মিক হামলা চালানো হয়। মাহাবুবুরকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায় তারা। জেলা ছাত্রলীগ, সরকারি হোসেন শহীদ কলেজ ছাত্রলীগ, পৌর ছাত্রলীগ, জেলা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদধারী নেতারা উপস্থিত থেকে হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে তাঁর অভিযোগ।
মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষিত পাল বলেন, রাত পৌনে আটটার দিকে মো. মারুফ নামের ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর মাথা, হাত, পায় ও পিঠে কোপের আঘাত আছে। মাথায় আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটার মধ্যে ইসলামপুরপাড়া জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ শহরের দুটি স্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব মুঠোফোনে জানান,, রাত আটটার দিকে ইসলামপুরপাড়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একদল দুর্বৃত্ত একাধিক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় কেউ কার্যালয়ে ছিলেন না। তারা অফিসের আসবাবপত্র ভাংচুর করে বলে জানান, সাবেক সদর থানা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তুষার।
একই সময়ে মাগুরা শহরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিপরীত দিকে বজলুর রহমানের বাড়ির সামনে একাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বজলুর রহমান জানান, তারা দুটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে। তবে কে বা কারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি ’ তিনি আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগে তাঁর ভাই কোহিনূর রহমানকে কুপিয়ে জখম করে একদল দুর্বৃত্ত। তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেই হামলার সঙ্গে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা বলতে পারেননি বজলুর রহমান।
যুবদলের কর্মীকে হামলা বা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা। এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন ও যুবলীগের আহ্বায়ক ফজলুর রহমান ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সংগঠনের কেউ জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন বলেন, ‘মাদকসেবনের প্রতিবাদ করায় মো. মারুফ নামের ওই যুবককে কোপানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে মাহাবুবুরের ওপর কারা হামলা করেছে, তা বলতে পারি না।’
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদিন জানান, ‘শহরের কেশব মোড় এলাকায় একটু মারামারি হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত।’ আর কোথাও মারামারি বা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আর কোথাও মারামারির খবর পাইনি। আর বোমা বিস্ফোরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।