নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল সিরিজ জিতলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পায়নি বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের পুরোটা সময় ভালো খেলা উপহার দিয়ে একের পর এক সুযোগ সৃষ্টি করলেও গোলের দেখা পায়নি স্বাগতিকরা। ফলে শেষ পর্যন্ত হতাশার গোলশূণ্য ড্র’তেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় জামাল ভূঁইয়া বাহিনীকে। ফলে প্রথম ম্যাচে ২-০ গোলের জয় পাওয়ায় দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ তে জেতায় মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি সিরিজের চকচকে সোনালী ট্রফিটা ওঠে ইয়াসিন-তপু বর্মণদের হাতেই। আর সিরিজ সেরার পুরস্কার পান প্রথম ম্যাচের দ্বিতীয় গোলদাতা স্বাগতিক দলের ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। এ সিরিজ জয়কে স্মরণীয় করে রাখতে ম্যাচ শেষে আতশবাজি পুড়িয়ে জয় উদযাপন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে নেপালের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে প্রায় অর্ধ ডজন গোলের সুযোগ নষ্ট করেন স্বাগতিক দলের ফরোয়ার্ডরা। প্রথম ম্যাচের মতো কাল টিকিটের চেয়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শক উপস্থিতি ছিল প্রায় দ্বিগুন। দ্বিতীয় ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে’র করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবরেও কোন প্রভাব পড়েনি দর্শকদের মাঝে। প্রিয দলকে উৎসাহ যোগাতে ঠিকই স্টেডিয়ামে এসেছিলেন তারা। সাংবাদিকদের কর্মস্থল প্রেসবক্সেও ছিল একই চিত্র। করোনা আতঙ্কে গ্যালারি কিংবা প্রেসবক্স- কোথাও ছিল না স্বাস্থ্যবিধির বালাই।
করোনাভাইরাস পরীক্ষায় দুইবার পজিটিভ ছিলেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। তাই নেপালের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে দলের ডাগ আউটে থাকতে পারেননি তিনি। জেমিকে প্রক্সি দিয়েছেন তারই স্বদেশি সহকারী কোচ স্টুয়ার্ট পল ওয়াটকিস। দ্বিতীয় মাচে দু’টি পরিবর্তন আনেন তিনি। ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসানের জায়গায় ইয়াসিন খান এবং প্রথম ম্যাচে গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী আনিসুর রহমান জিকোর জায়গায় খেলানো হয় আশরাফুর ইসলাম রানাকে। যাকে এই সিরিজের জন্য প্রাথমিক ২৩ জনের দলেই রাখেননি জেমি। তবে দু’জনেই দক্ষতার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্যদিকে নেপাল একাদশে অধিনায়কসহ ছয়টি পরিবর্তন ছিল। প্রথম ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছিলেন গোলরক্ষক কিরণ কুমার লিম্বু। দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়ক ভারত খাওয়াস। প্রথম ম্যাচের মূল একাদশেই ছিলেন না তিনি। প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের গোল না পাওয়ার আক্ষেপের নাম ডিফেন্ডার রনজিৎ ধীমাল। ম্যাচের আগে যাকে দলের অন্যতম শক্তি বলেছিলেন নেপালের কোচ বাল গোপাল মহারজন। কোচের আস্থার প্রতিদান দিলেন এই ডিফেন্ডার। তার খেলা দেখে বলতেই হয় নেপাল ফুটবলের অন্যতম নির্ভরতার প্রতীক তিনি। করোনার কারণে প্রথম ম্যাচে খেলতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিলেন রনজিৎ ধীমাল। রুখে দিয়েছেন বাংলাদেশের বেশ ক’টি আক্রমণ। দলকে বাঁচিয়েছেন গোল হজমের হাত থেকে।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। পাঁচ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার সেট পিস নেপালের বক্সের মধ্যে পড়লেও বলে পা লাগাতে পারেননি কেউই। ২৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে নেপালের বক্সের কাছকাছি এসে জীবন পাস দেন সতীর্থ ফরোয়ার্ড সুমন রেজাকে। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঘুরে গিয়ে বা পায়ে গোলমুখে সুমনের শটটি নেপালের গোলপোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে গেলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আক্ষেপে পোড়েন দর্শকরা।
বাংলাদেশ নিজেদের বেশিরভাগ আক্রমণ শানিয়েছে ডানপ্রান্ত দিয়ে। আর আক্রমণের মধ্যমনি মোহাম্মদ সাদ উদ্দিন। নাবীব নেওয়াজ জীবনের সঙ্গে তার বোঝাপড়াটাও ছিল চমৎকার। প্রথম ম্যাচে জীবনের করা গোলের নেপথ্যে ছিলেন এই সাদ। ঢাকা আবাহনীতে একসঙ্গে খেলা এ দুই ফরোয়ার্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের জার্সিতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলা সুমন রেজাও পায়ের ঝলক দেখিয়েছেন বেশ ক’বার। জীবন, সাদ, সুমন-এই ত্রয়ীকে সামলাতে গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে ফেলেন নেপালের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। তবে ডিফেন্ডার ধীমাল ও গোলরক্ষক কিরণ লিম্বু হতাশ করেছেন লাল-সবুজের দর্শকদের। ম্যাচের শেষ দিকে এসে গ্যালারিজুড়ে মুঠোফোনের আলোয় নিজেদের ফুটবলারদের উৎসাহিত করতে থাকেন স্বাগতিক দর্শকরা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। ম্যাচের অন্তিম সময়ে নেপালের এক শট গোলবারে লেগে ফিরলে কপালজোড়ে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ফলে শেষ পর্যন্ত গোলশূণ্য ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দু’দলকে। প্রীতি সিরিজ শেষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ফিরতি ম্যাচ খেলতে আগামীকাল কাতার যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। ৪ ডিসেম্বর দোহায় কাতারের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলবেন জামাল ভূঁইয়ারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।