নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরে যান দুই বছরেরও কিছু আগে। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর। ক্লাব পর্যায়ে খেলে যাচ্ছিলেন। হয়তো আরও কিছুদিন চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। নানান দেশ-মহাদেশে দেড় দশকের ভ্রমণ শেষে চলতি বছরের শুরুতে ফিরেছিলেন নিজ ভূমে। ঘরোয়া ক্লাব এস্তুদিয়ান্তেসের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই বুটজোড়া তুলে রাখলেন হাভিয়ের মাসচেরানো।
গতকাল দীর্ঘ ১৭ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার মাসচেরানো। লিভারপুল ও বার্সেলোনার সাবেক এই তারকা জাতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন। দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে ১৪৭ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ৩টি। সংবাদ সম্মেলনে ৩৬ বছর বয়সী মাসচেরানো বলেন, ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে গত কয়েক মাসে আমার সঙ্গে যা যা ঘটেছে সেসবের প্রেক্ষিতে এখনই আমার ক্যারিয়ার শেষ করার উপযুক্ত সময়। এই পুরো সময়টা জুড়ে অনেক চিন্তা-ভাবনার পর আমার মনে হয়েছে, আজই (গতকাল) শেষ করাটা সবচেয়ে সঠিক হবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমি আমার পেশাদার জীবনকে শতভাগ উপভোগ করেছি। আমি আমার সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিয়েছি। কিন্তু আজ আমার মনে হচ্ছে, গত কিছুদিন যাবত এটা কঠিন হয়ে পড়ছিল। আমি এস্তুদিয়ান্তেসকে অসম্মান করছি না কিংবা আমার সতীর্থদের কিংবা আমার এই পেশাকে। আর্জেন্টিনায় ফেরার ক্ষেত্রে সবাই আমার উপর বিশ্বাস রেখেছিল।’
মাসচেরানোর পেশাদার ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল আর্জেন্টিনার বিখ্যাত ক্লাব রিভারপ্লেটে। সেখানে দুই মৌসুম কাটিয়ে তিনি নাম লেখান ব্রাজিলের করিন্থিয়ান্সে। এরপর ২০০৬ সালে তিনি পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডে কয়েক মাস থাকার পর তাকে দলে টানে প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সেরা ক্লাব লিভারপুল। তবে তার ক্লাব ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটে স্প্যানিশ পরাশক্তি বার্সেলোনায়।
২০১০ থেকে ২০১৮- আট মৌসুম ন্যু ক্যাম্পে থেকে দারুণ সফলতা অর্জন করেন মাসচেরানো। বার্সার জার্সিতে পাঁচটি লা লিগা, দুটি করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপসহ অনেক শিরোপা জেতেন তিনি। এসময়ে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার পজিশন থেকে সরে গিয়ে সেন্টার ব্যাক হিসেবে খেলতে শুরু করেন তিনি। কাতালানদের বিদায় জানিয়ে দুই মৌসুম চাইনিজ সুপার লিগের দল হেবেই চায়না ফরচুনে খেলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন এস্তুদিয়ান্তেসে।
২০০১ সালে ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পা রেখেছিলেন মাসচেরানো। ওই আসরে আর্জেন্টিনা চতুর্থ স্থান দখল করেছিল। যুব পর্যায়ে তার পারফরম্যান্স এতটাই নজরকাড়া ছিল যে, রিভারপ্লেটের মূল দলের হয়ে কোনো ম্যাচ না খেলেই আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে সুযোগ পান মাসচেরানো! ২০০৩ সালে উরুগুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল তার। পরবর্তীতে আলবিসেলেস্তেদের হয়ে মাসচেরানোর স্মরণীয় যাত্রার গল্প অনেকেরই জানা। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে তোলার অন্যতম কারিগর ছিলেন তিনি। ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করার সৌভাগ্যও হয় তার। সবমিলিয়ে জাতীয় দলের হয়ে তিনি খেলেছেন ১৪৭ ম্যাচ। অংশ নিয়েছেন চারটি বিশ্বকাপে। ২০০৪ ও ২০০৮ সালের অলিম্পিকে জিতেছেন সোনা। বিদায়বেলায় মাসচেরানো জানান, ‘আমি যেসব ক্লাবের হয়ে খেলেছি, তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ক্যারিয়ারজুড়ে যত সতীর্থকে পেয়েছি,তাদের কাছে। এস্তুদিয়ান্তেসের কাছেও। কারণ, তারা আমাকে ফেরার ও খেলার সুযোগ করে দিয়েছিল। আমি এভাবে শেষ করতে চাইনি। কিন্তু এভাবেই অনেক কিছু ঘটে যায় এবং আপনার বিকল্প বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।