Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোট জালিয়াতির ভিত্তিহীন দাবিতে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প সমর্থকদের সমাবেশ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ৪:০৫ পিএম | আপডেট : ৪:০৬ পিএম, ১৫ নভেম্বর, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েক হাজার সমর্থক তার তোলা ভোট জালিয়াতির ভিত্তিহীন অভিযোগের সমর্থনে রাজধানী ওয়াশিংটনে মিছিল করেন। ট্রাম্পের মোটর-শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় তাদেরকে একের পর এক শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে বিজয়ী মানছেন না রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি ভোট কারচুপির অভিযোগে আদালতে মামলাও করেছেন। তবে সারাদেশের নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তারা গুরুতর অনিয়মের কোনও প্রমাণ দেখেনি। শনিবার ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে রাস্তার দু’ধারে জমা হওয়া কয়েক হাজার সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে দেখা গিয়েছে। তারাও ট্রাম্পকে দেখে উচ্ছ্বসিত। শূন্যে মুঠো ছুড়ে চিৎকার করে সমর্থন জানিয়েছেন। মোবাইলে ছবি তুলেছেন। একাধিক পোস্টার দেখা গিয়েছে, যেখানে লেখা ছিল ‘বেস্ট প্রেসিডেন্ট এভার’, ‘স্টপ দ্য স্টিল’, ‘ট্রাম্প ২০২০: কিপ আমেরিকা গ্রেট’, ‘নো মোর বুলশিট’-এর মতো স্লোগান। পতাকা উড়িয়ে জনতা ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন। হাজার হাজার জনতার কণ্ঠে শোনা গিয়েছে, ‘উই ওয়ান্ট ট্রাম্প! উই ওয়ান্ট ট্রাম্প!’, কিংবা ‘ফোর মোর ইয়ার্স, ফোর মোর ইয়ার্স’-এর মতো স্লোগান। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে জানিয়ে ট্রাম্প পরে টুইটারে লিখেছেন, ‘তারা সাজানো এবং দুর্নীতিগ্রস্থ নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়াবে না!’ তবে পুলিশ সমাবেশে যোগ দেয়া মানুষের সংখ্যা না জানালেও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন যে, ট্রাম্পের অনুমানের চেয়ে সমাবেশে অনেক কম লোক যোগ দিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে দাবি ছিল, সেই মোতাবেক শনিবারই নর্থ ক্যারোলিনা এবং জর্জিয়ায় ভোটের গণনা-পুনর্গণনা পর্ব শেষ হয়েছে। সে দেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ঘোষিত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী তথা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে ২৩২টি। যদিও এখনও সরকারি ভাবে চূড়ান্ত ফল ঘোষিত হয়নি। ইলেক্টোরাল কলেজের ৫৩৮ ভোটের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ‘ম্যাজিক ফিগার’ ২৭০ আগেই ছুঁয়ে ফেলায় জয়ী ঘোষিত হন বাইডেন।

তবে ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে পরাজয় এখনও মেনে নিতে পারছেন না ট্রাম্প। যে কারণে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকেও যাচ্ছেন না তিনি। শনিবারও তিনি দাবি করেছেন, ভোটে ব্যাপক রিগিং হয়েছে। এবং, তিনিই প্রকৃত জয়ী। কিন্তু, তার এই দাবির সমর্থনে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি। শুক্রবারই আমেরিকার নির্বাচন পরিচালন সংস্থার পক্ষে ফেডেরাল এবং স্টেট অফিশিয়ালরা জানিয়েছিলেন, এই নির্বাচন ‘দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নিরাপদ নির্বাচন।’ এবং রিগিং বা ভোট কারচুপির কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

ট্রাম্প এ সব মানছেন না। সমর্থকরাও তারই কথায় বিশ্বাস রাখছেন। ওয়াশিংটনের ওই মিছিলে আসা এক ট্রাম্প-ভক্তের কথায়, ‘আমরা কিছুই শুনতে চাই না। আমরা আমাদের প্রেসিডেন্টকে আরও চার বছরের জন্য ফিরে পেতে চাই। এই ভোটে নির্ঘাত কারচুপি হয়েছে। অনেক অবৈধ ভোটার ভোট দিয়েছে। এমনকী, মৃত মানুষদেরও ভোট পড়েছে।’ কিন্তু, এর প্রমাণ কী? তার অবশ্য কোনও উত্তর তিনি দিতে পারেননি। মোটের উপর এটাই ট্রাম্প-ভক্তদের অবস্থান। সিনিয়র রিপাবলিকান নেতাদের একাংশ হয় ট্রাম্পের পক্ষে, না হলে তার বর্তমান কর্মকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলছেন না। যাকে ‘ভয়াবহ প্রবণতা’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বরাক ওবামা। তবে, ব্যতিক্রমও রয়েছে। জর্জ ডব্লিউ বুশ যেমন ইতিমধ্যেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সূত্র: রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ