মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
একটি ভোটিং মেশিন সিস্টেম ‘দেশজুড়ে ট্রাম্পের ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ভোট মুছে ফেলেছে’ বলে বৃহস্পতিবার আবারও ভিত্তিহীন অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর কয়েক ঘন্টা পরেই তার এই অভিযোগের বিরোধিতা করে একটি বিবৃতি দেন কেন্দ্রীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তারা। এদিকে, নির্বাচনে পরাজয় অস্বীকারের প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার দেয় বিবৃতিতে নির্বাচনী কর্মকর্তারা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে ঘোষণা করে বলেন, ‘এই নির্বাচন আমেরিকান ইতিহাসে সর্বাধিক সুরক্ষিত ছিল’এবং ভোটের কোনও ব্যবস্থা নিয়ে আপোস করা হয়েছে তার ‘কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি’। বিবৃতিটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাইবারসিকিউরিটি এবং অবকাঠামো সুরক্ষা বিভাগ দ্বারা বিতরণ করা হয়েছে, যা রাজ্যগুলিতে ভোটদান প্রক্রিয়া সুরক্ষিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ট্রাম্পের নিজস্ব ক্যাবিনেট থেকেও এ এজেন্সিতে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যবহৃত ভোটদান ব্যবস্থার তদারককারী ও সমন্বয়কারী কাউন্সিল এর আগে ট্রাম্পের এসব অভিযোগের বিরোধিতা করেছিল।
দেশজুড়ে নির্বাচন কর্মকর্তারা বলে দিয়েছেন যে, কোনও রাজ্যে পদ্ধতিগত জালিয়াতির কোনও খবর পাওয়া যায়নি, ভোটের অবকাঠামোতে বৈদেশিক হস্তক্ষেপের কোনও চিহ্ন নেই এবং কোনও নির্বাচনে ঘটে যাওয়া এপিসোডিক ভুলের বাইরে কোনও হার্ডওয়্যার বা সফ্টওয়্যার ব্যর্থতার কোনও চিহ্নই না দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। যে দলটি এ বিবৃতি জারি করেছে তারা হলো. নির্বাচনী অবকাঠামোগত সরকার সমন্বয় পরিষদ, যার মধ্যে সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন সহায়তা কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং সারা দেশের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নির্বাচন পরিচালকগণের সচিবরা অন্তর্ভুক্ত আছেন। তাদের সাথে ভোটিং মেশিন তৈরিকারী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধি ও দলীয় নেতা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তারা নির্বাচনের ফল মেনে না নেয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের নেয়া পদক্ষেপের বিরোধিতা করবেন। তবে শুধুমাত্র অল্প কয়েকজনই প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করতে রাজি হয়েছেন।
এ বিষয়ে রিপাবলিকান নেতা ও ওহাইয়োর গভর্নর মাইক দেওয়াইন বলেন, ‘জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বলার সময় এসেছে।’ অ্যারিজোনার রিপাবলিকান অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন যে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফল মেনে নিতে অস্বীকার করলেও তার রাজ্য পরাজিত হচ্ছেন।’ এবং ক্যাপিটল হিলের বেশ কয়েকটি রিপাবলিকান সিনেটর সাবধান করে দেয়ার সুরে বলেছেন, নতুন কমান্ডার ইন চীফ হিসাবে বাইডেনকে গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ের অধিকার দেয়া উচিত। শীঘ্রই তিনি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রত্যয়িত হবেন এবং তার স্বীকৃতি দেওয়ার সময় এসেছে ।
ট্রাম্পের কখন ফলাফল মেনে নেয়া উচিত, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিনেট ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান আইওয়া সিনেটর চার্লস ই গ্রাসলে এমনকি প্রেসিডেন্টের জন্য বাস্তবতা স্বীকার করার জন্য একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তা হচ্ছে ১৩ ডিসেম্বর- রাজ্যের ফলাফল অনুযায়ী ইলেক্টোরাল কলেজের প্রতিনিধি দল প্রেসিডেন্টের পক্ষে ভোট প্রদানের আগের দিন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগণনা এখনো চলছে। সেইসঙ্গে দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ফারাকও বেড়ে চলেছে। অ্যারিজোনা রাজ্যে বাইডেনের জয় প্রায় নিশ্চিত হলেও ট্রাম্প এখনো পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ। এখনো পর্যন্ত রিপাবলিকান দলের স্বীকৃতি না পেলেও বাইডেন অবিচল থেকে ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি করে চলেছেন। অ্যারিজোনায় রিপাবলিকান দলের দীর্ঘ সাফল্যে ইতি টেনে ডেমোক্র্যাটিক দলের জো বাইডেন জয়ের পথে চলেছেন বলে এডিসন রিসার্চ নামের প্রতিষ্ঠান পূর্বাভাষ দিেেয়ছে। ফলে বাইডেনের ঝুলিতে ২৯০টি ইলেকটোরাল ভোট পড়বে এবং তার জয় সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করার আর কোনো অবকাশই থাকবে না। ‘পপুলার ভোট› বা সরাসরি ভোটের মানদন্ডেও তিনি ট্রাম্পের তুলনায় ৫২ লাখেরও বেশি সংখ্যায় এগিয়ে আছেন।
আরও কয়েকটি রাজ্যে ভোটগণনা চললেও বাইডেনের জয়ের অঙ্কে কোনো পরিবর্তনের আশা কার্যত লোপ পেয়েছে। ট্রাম্প ব্যাপক নির্বাচনি অনিয়মের অভিযোগ করে চললেও কোনো প্রমাণ পেশ করতে পারছেন না। ফলে এখনো পর্যন্ত আদালতেও তার অভিযোগ ধোপে টিকছে না। এমনকি অ্যারিজোনা রাজ্যের কিছু অংশে নতুন করে ভোটগণনা করে সামান্য কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে, সার্বিক ফলের উপর যার কোনো প্রভাব পড়ছে না। মার্কিন প্রশাসনের সবচেয়ে উচ্চপদস্থ সাইবার নিরাপত্তা এবং নির্বাচন কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের ইতিহাসে এটাই ছিল সবচেয়ে নিরাপদ নির্বাচন। এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে ট্রাম্পের একগুঁয়ে মনোভাবের পক্ষে রিপাবলিকান দলের মধ্যে সমর্থনে চিড় ধরতে শুরু করছে। এখনো দলের শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে বাইডেনের জয় স্বীকার না করলেও তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রথা অনুযায়ী বাইডেনের জন্য গোয়েন্দা সংস্থার ‘ব্রিফিং’ শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেছেন। অর্থাৎ তারা কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন, যে তারা না মানলেও বাইডেন পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন।
প্রথা অনুযায়ী জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নামের ফেডারেল কর্তৃপক্ষ এখনো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়ী প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেয় নি এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ধার্য বাজেট হস্তান্তর করে নি। ভবিষ্যৎ বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ রন ক্লেইন এমএসএনবিসি নেটওয়ার্ককে বলেন, ঠিক সময়ে এই অর্থ হাতে পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আগামী বছরের শুরুতে দেশে করোনা টিকা প্রদানের সরকারি পরিকল্পনা কার্যকর করতে হলে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে, বলেন ক্লেইন। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।