Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা হস্তান্তরে সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ৬:০৮ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে জো বাইডেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিয়ে হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করার কথা তার। কিন্তু এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্যে ট্রাম্প কীভাবে ক্ষমতা ছাড়বেন এবং ছাড়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন কোনো সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে কি-না তা নিয়ে শঙ্কিত বিশ্লেষকরা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তো এখনো পরাজয়ই স্বীকার করেননি। একের পর এক টুইটবার্তায় তিনি নিজের জয়ের কথা জানাচ্ছেন। ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে সরকারের একটি স্বাধীন সংস্থা কাজ শুরু করলেও ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কর্ণপাত করা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে, আমেরিকার ইতিহাসে আগামী ৭১ দিন হতে যাচ্ছে বেশ ঝামেলাপূর্ণ। কারণ জানুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত সাংবিধানিকভাবে ট্রাম্পই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এখন পর্যন্ত তার হাতেই দেশটির সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা। আর এ কারণেই বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ক্ষমতা ছেড়ে সাধারণ মানুষের জীবনে প্রবেশ করার আগে তিনি বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার এক্ষেত্রে ট্রাম্পের চেয়েও এগিয়ে। ট্রাম্পের রাজনৈতিক উচ্চাকাক্ষাকে একধাপ এগিয়ে নিতে নিজের ক্ষমতার ব্যবহার শুরু করেছেন তিনি। গত সোমবার তিনি আইনপ্রণেতাদের বলেন, রাজ্যগুলোর আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার আগেই উচিত হবে ভোট জালিয়াতির যে অসমর্থিত দাবিগুলো উঠেছে তা যাচাই করে দেখা। বারের এমন বক্তব্যই বলে দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় থাকার জন্য সম্ভাব্য সব পথই নেবে। এখন পর্যন্ত বার ও তার দল ভোট জালিয়াতির কোনো নিরেট প্রমাণ হাজির করতে পারেননি।

ট্রাম্প নির্বাচনের বেসরকারি ফল ঘোষণার পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপারকে বরখাস্ত করেছেন। এসপারের দোষ, তিনি ট্রাম্পের উচ্চাকাক্সক্ষার পালে হাওয়া দেননি। ট্রাম্প অচিরেই সিআইএ প্রধান জিনা হ্যাসপেল এবং এফবিআই প্রধান ক্রিস্টোফার ওয়ারিকে বরখাস্ত করতে পারেন, এমন আশঙ্কার কথা বলেছেন এসপার। ট্রাম্পের উচ্চাকাক্সক্ষার কাছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে এমনটা মনে করা হচ্ছে।

দেলাওয়ারের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস কুনস সিএনএনকে বলেন, ‘খোলাখুলিভাবে বললে ট্রাম্পের হাতে ক্ষতি করার অনেক উপকরণ আছে। তিনি চাইলেই শীর্ষ এজেন্সিগুলোর একাধিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করতে পারেন।’ এমন অস্থিতিশীলতা তৈরি করে ট্রাম্প তার স্বার্থ আদায় করতে পারেন এজেন্সিগুলো থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুসারে দেশটির বিদায়ী প্রশাসন জাতীয় স্বার্থরক্ষায় চেষ্টা করে যাতে সরকারের আয়ের উৎসগুলো ঠিক থাকে। উভয় পক্ষই এই ইস্যুতে একই ভূমিকা পালন করে। আর এই প্রক্রিয়াও শুরু হয় ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। নতুন প্রশাসন তাদের জয় নিশ্চিতের পরই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কাছে চিঠি পাঠাতে শুরু করেন। ওই চিঠির ভিত্তিতেই জাতীয় নিরাপত্তা, সামরিক বিভাগ ও আয়কর দপ্তর গোপনে কাজ শুরু করে দেয়। গোটা এই প্রক্রিয়ায় একমাত্র জাতীয় স্বার্থকেই এগিয়ে রাখা হয়।

জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ ও ‘অ্যান ওপেন ওয়ার্ল্ড’ বইয়ের লেখক রেবেকা লিসনারের মতে, ‘আধুনিক ইতিহাসে এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে বৈরী ও অশান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা ভয় পাচ্ছি এই ভেবে যে, বিদায়ী ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেন শিবিরকে আক্রমণ করতে নাশকতার আশ্রয় নিতে পারে।



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ১১ নভেম্বর, ২০২০, ৯:২৪ পিএম says : 0
    জেলে যাওয়ার জন্য এই গুলি করতেছে ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ