মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করার ফলে পরিস্থিতি জটিল হতে শুরু করেছে এবং ক্ষমতা হস্তান্তরে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই গত সোমবার তিনি টুইট করে প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পারকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, দেশটির ন্যাশনাল কাউন্টার টেররিজম সেন্টারের বর্তমান প্রধান ক্রিস্টোফার মিলার শিগগিরই এস্পারের জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন। আগস্টে কাউন্টার টেররিজম সেন্টারের দায়িত্ব নেয়ার আগে মিলার স্পেশাল ফোর্সের সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে কাজ করেছেন। তিনি ট্রাম্পের অধীনে পেন্টাগনের নেতৃত্বদানকারী চতুর্থ কর্মকর্তা হবেন। নতুন ভারপ্রাপ্ত সচিব মিলারের বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীরা তার আর্মি স্পেশাল ফোর্সেসের পটভ‚মি এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কাজের প্রশংসা করেছেন। কিন্তু বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন যে, ট্রাম্পের কার্যনির্বাহী সময়ের শেষ সপ্তাহগুলিতে তার অনৈতিক সিদ্ধাস্তের বিরুদ্ধে অব্যাহত চাপ সৃষ্টি করার মতো দৃঢ়তা মিলারের নেই।
মিশিগানের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি এবং ওবামা প্রশাসনের সাবেক পেন্টাগন কর্মকর্তা এলিসা সøটকিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমার অভিজ্ঞতায়, প্রশাসনের ৭২ দিন বাকি থাকতে প্রতিরক্ষা সচিবকে বরখাস্ত করার পেছনে অতি স্বল্প কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। একটি হলো অযোগতা বা অন্যায় কাজ, যা সচিব এস্পারের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মনে হয় না। দ্বিতীয়টি হলো, প্রতিহিংসা পরায়ণতা, যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ। তৃতীয়টি কারণ হলো, প্রেসিডেন্ট এমন পদক্ষেপ নিতে চান, যা তিনি বিশ্বাস করেন যে, তার প্রতিরক্ষা সচিব সমর্থন করতে অস্বীকার করবেন, যা উদ্বেগজনক। কারণ যাই হোক না কেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের অস্থির দিনগুলিতে প্রতিরক্ষা সচিবকে পদচ্যুত করা, প্রেসিডেন্টের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটিকে অবহেলা করে বলে মনে হচ্ছে: আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা।’
ট্রাম্প ও বরখাস্ত হওয়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যেই বিরোধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। চলতি বছরের শুরুতে বর্ণবাদ বিরোধী প্রতিবাদে সেনা মোতায়েন নিয়ে হোয়াইট হাউজের সাথে বিরোধে জড়ান মার্ক এসপার। মিনেসোটায় পুলিশের নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গড়ে সংঘটিত বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। গত জুনে এস্পার এটিকে অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছিলেন যা ট্রাম্পকে অসন্তুষ্ট করেছিলো। তিনি ন্যাটোর প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গীর সাথেও একমত ছিলেন না। পাশাপাশি, করোনা মহামারীর ইতিহাস দেখায় যে, ট্রাম্প যেসময় মাস্ক ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হোয়াইট হাউসে করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন, সেসময় প্রেসিডেন্টর কারণে এস্পার প্রস্তাবিত সামাজিক দূরত্ব রাখতে অক্ষম হলেও মাস্ক পরার বিষয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলির দিকনির্দেশগুলি কঠোরভাবে অনুসরণ করেছিলেন। এসমস্ত মত বিরোধের জের ধরে মার্ক এসপারকে বরখাস্ত করা হতে পারে ধারণা করছেন অনেকে।
ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ সম্পর্কে হোয়াইট হাউসের দুই কর্মকর্তা সোমবার বলেছেন যে, বরখাস্তকরণ এখনও শেষ হয়নি। বরখাস্তের তালিকায় যোগ হতে পারেন এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার এ রে, এবং সিআইএ পরিচালক জিনা হাস্পেল। ডেমোক্র্যাটস এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মন্তব্য করেছেন যে, এমন অনিশ্চিত সময়ে এটি একটি চকিত পদক্ষেপ ছিল। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট যখন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি ক্ষমতা ছাড়তে চান না এবং তিনি সবচেয়ে ক্ষমতাশালী এজেন্সিগুলির উপর তার হ্রাসমান কর্তৃত্বকে পুনর্বহাল করবেন। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এস্পারকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে ধরণা করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইম্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।