পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
বহু বছর পর আজারবাইজান কর্তৃক উদ্ধারকৃত অঞ্চলে এবার থেকে আজান শোনা যাবে। কারণ এতোদিন এসব অঞ্চল আর্মেনিয়ার দখলে ছিলো। তখন দখলদাররা মসজিদগুলোকে গরুর খোয়াড়ে পরিণত করে। তাই আজান বন্ধ ছিলো। এবার আজারবাইজানের সেনারা আর্মেনিয়ার কবল থেকে ওইসব এলাকা মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। সবশেষে খবরে জানা যায়, তীব্র লাড়াইর পর নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চলের কৌশলগত শুশা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আজারবাইজান। আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ রবিবার এক টুইটার বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আজারি সেনাবাহিনী শুশা শহরের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। বহু বছর পর এখন সেখানে আজানের ধ্বনি শোনা যাবে। এর আগে তিনি কারাবাখের ৯টি গ্রাম পুনরুদ্ধারের খবর দিয়েছিলেন। এসব গ্রাম ও শহর আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে ছিল। শুশা শহর হচ্ছে কারাবাখের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর। গত কয়েক দিন ধরেই শহরটি ঘিরে রেখেছিল আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই দেশ এ পর্যন্ত দুই বার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তা ভেঙে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখন্ড হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আর্মেনিয়া। দখলীকৃত এলাকা থেকে বহু আজারি নাগরিককে বিতাড়িত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশটির টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেন, ‘আনন্দ ও গর্ব নিয়ে আমি আপনাদের জানাতে চাই যে কারাবাখের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আমরা দখল করতে সমর্থ হয়েছি। ৮ নভেম্বর তারিখটি আজারবাইজানের ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।’ কারাবাখ অঞ্চলের প্রধান শহর খানকেন্ডিতে বেশ কয়েকটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলেছে, আর্মেনিয়া সমর্থিত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রকেট হামলার পর তারা খানকেন্ডি শহরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এই শহরটিকে আর্মেনীয়রা স্টেপানাকার্ত বলে থাকে। আজারবাইজান আরও জানিয়েছে, তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গানজাতে আর্মেনীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এ শহরটি কারাবাখ অঞ্চল থেকে অনেক দূরে এবং আর্মেনিয়া সীমান্তে অবস্থিত। যদিও এই দাবি মিথ্যা বলে অবহিত করে আর্মেনিয়া সরকার বলছে, ‘শহরটিতে দুপক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে।’ নাগার্নো কারাবাখের বৃহত্তম শহর স্টেপেনাকাট থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত শুসা শহর। শহরটি উভয় পক্ষের জন্য সাংস্কৃতিক ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার কারাবাখের প্রধান শহর স্টিপানাকার্তে আজারবাইজানের সেনারা প্রচন্ড গোলাবর্ষণ করে এবং এতে বহু মানুষ আহত হয়েছে। ভারী গোলাবর্ষণের পাশাপাশি সেকানে অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ শোনা যায়। আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, তিন লাখ ৩০ হাজার অধিবাসী-অধ্যুষিত পশ্চিম আজারবাইজানের গানজা শহরে আর্মেনীয় বাহিনী রকেট হামলা চালিয়েছে এবং গোলাবর্ষণ করেছে। শহরের বেশ কয়েকটি বেসামরিক এলাকায়ও হামলা হয়। এদিকে গানজা শহরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আর্মেনীয় হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। এদিকে, যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য আর্মেনিয়া মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে আজারবাইজান স্পষ্ট করে বলেছে, যুদ্ধবিরতির আগে নাগোর্নো-কারাবাখ থেকে আর্মেনিয়ার সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। গত রোববার থেকে নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে নতুন করে বড় রকমের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে এবং এ পর্যন্ত সেখানে দুই শতাধিক বেশি মানুষ মারা গেছে যার মধ্যে ৩০ জনের বেশি বেসামরিক লোকজন। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যকার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ার দাবি এই যুদ্ধে পাচঁ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় তিনবার যুদ্ধবিরতি হলেও নানা অজুহাতে মানেনি কোন দেশই। আনাদোলু, এএফপি, পার্সটুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।