রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
দিনে দিনে সবকিছুরই মূল্য বাড়ছে। শুধুমাত্র কমছে জীবনের মূল্য। অসহিঞ্চুতার মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে তুচ্ছতাচ্ছিল্যর ঘটনায় একের পর এক মানুষ খুন করতে দ্বিধা করছে না দুর্বৃত্তরা। রাজনৈতিক কারণে সংঘাত, সংঘর্ষ, প্রতিপক্ষকে পথের কাঁটা মনে করে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লেলিয়ে দেয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। অথচ যারা লোমহর্ষক হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে তারা বেশিরভাগই বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তদন্তের নামে মস্তিস্ক প্রসূত তথ্যের সমাহার ঘটিয়ে চার্জশিট দিয়ে অনেক সময় নীরিহ নিরাপরাধ ব্যক্তিকে ফাঁসিয়ে দেয়া হচ্ছে। যার কারণে অনেক হত্যা মামলা তদন্ত সংস্থা মার্ডার করছে। এক সময়ের সন্ত্রানের জনপদ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এমন নজীর অসংখ্য।
সাম্প্রতিক একটি লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বিবরণ থেকে পাওয়া যায়, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার নীলকন্ঠপুর গ্রামে আবির হোসেন বাবু (২৮)কে পিটিয়ে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে দেয় তার স্ত্রী ও শ্যালক পুলিশ সদস্য। দুজনকেই আটক করে পুলিশ। আদালতে তার স্ত্রী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় হত্যাকান্ডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর বছরে গড়ে দক্ষিণের এই অঞ্চলটিতে ৩ শতাধিক হত্যাকান্ড ঘটে। বর্তমানে তুলনামূলক অনেক কম হলেও যেখানে সেখানে লাশ পড়া বন্ধ হয়নি। সাম্প্রতিকালে অঞ্চলটিতে একযোগে কোনো অপারেশন পরিচালিত হয়নি। যার কারণে আবারো অস্ত্রবাজদের মাথাচাড়া দিয়ে উঠার আশঙ্কা ক্রমেই ঘণীভ‚ত হচ্ছে।
খুলনার নিউমার্কেট এলাকার রিকশাচালক আক্কাছ আলী বলেন, আমাদের জানমালের নিরাপত্তা নেই। চোখের সামনে যেসব ঘটনা মাঝে মধ্যে দেখি তাতে বলা যায় কেউই নিরাপদ নয়। যশোরের দিনমজুর বেলেরমাঠ গ্রামের ফয়েজ গাজী বলেন, সমাজের উচুস্তরের মানুষের কথা আলাদা। তারা অস্ত্রের লাইসেন্স পান, গাড়িতে চলাচল করেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ যারা বাইসাইকেল ও রিকশা-ভ্যানে দিন অথবা রাতে জরুরি কাজে রাস্তায় বের হন, তারা নিশ্চিন্তে নিরাপদের অভাববোধ করে থাকেন। একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বলেন, গ্রাম কিংবা শহর সমানতালে প্রভাবশালীদের দাপট চলছে। সেই সাথে চলছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। জমিজমা নিয়ে গোলযোগ, সামান্য কথাকাটাকাটি, রাজনৈতিক কারণ, মাদক বিক্রি, ছিনতাই, ডাকাতি, চোরাচালান, চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী গ্রুপ দ্বন্দ্বসহ নানা কারণে রক্তপাত ঘটছে। এমনকি মানুষও খুন হচ্ছে।
বহু মামলা নিয়ে রাজনীতি করা হয় এবং ভিন্নমতালম্বী কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। তাতে আসল খুনী ও সন্ত্রাসীদের বেঁচে যায়। অপরাধ বিশেষজ্ঞ, সমাজ বিজ্ঞানী ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তদন্ত বাণিজ্য থেকে আমরা এখনো পুরোপুরি বের হয়ে আসতে পারিনি। হিংস্রতা ও নিষ্ঠুরতা নিয়ে কোনোক্রমেই রাজনীতি করা উচিত নয়। একটি মূল্যবান জীবনহানির ঘটনা নিয়ে হেলাফেলার কোনো সুযোগ নেই। শুধু হত্যাকান্ড নয়, সড়ক দুর্ঘটনা ও আত্মহত্যাসহ যেসব ঘটনায় জীবনহানি ঘটছে তার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন জরুরি। তা না হলে জীবনহানির মাত্রা বেড়েই যাবে। আত্মহত্যার ঘটনায় প্ররোচনাকারীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার আইন থাকলেও তা সিংহভাগ ক্ষেত্রেই হয় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।