বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রথম স্ত্রী নাছরিন আক্তার সাথীর সঙ্গে ব্যবসায়ী মো. মহসিনের বনিবনা হচ্ছিল না। এ কারণে গত ৭ মাস আগে তিনি আইরিন জাহানকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আর তাই প্রথম স্ত্রী ফন্দি আটেন মহসিনকে শায়েস্তা করার। প্রথম স্ত্রীর সাজানো ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হয়ে মহসিন এখন নারায়ণগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন। অথচ এই ঘটনা সম্পর্কে আসামি মহসিন ছিলেন পুরোপুরি অন্ধকারে। ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থেকেও মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার হওয়ায় হতবাক মহসিন। তার আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা ও যে বাড়িতে ঘটনা ঘটে সেই বাড়ির মালিককে আদালতে তলব করেছে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। আজ এই মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জে স্বামীকে খুঁজতে এসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী এই শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়। ওই ঘটনায় কথিত ধর্ষণের স্বীকার নারী বাদী হয়ে দু’জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ব্যবসায়ী মো. মহসিন ও রমজান নামে দু’জনকে আসামি করা হয়। কিন্তু দু’জন ধর্ষণ করলেও একজন অপরজনকে চেনেন না। ঘটনার দু’দিন পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভোরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় রমজানকে। আর একইদিন মধ্যরাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে ব্যবসায়ী মহসিনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার রমজান মামলার বাদী ও ভিকটিম পলি বেগমের স্বামীর ভগ্নিপতি।
বাদী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তার স্বামী কারিমুল ইসলাম ঘটনার একমাস আগে তার ছোট বোন রুমাকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে আসে। বাদী তার স্বামী ও বোনের খোঁজে সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়ায় এলে ১ নম্বর আসামি মহসিনের সঙ্গে দেখা হয়। মহসিন তাকে তার স্বামী ও বোনের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এলাকার জনৈক জসিমের নির্মাণাধীন বাড়ির নিচতলায় নিয়ে সঙ্গে থাকা শিশু সন্তানকে পাশের রুমে রেখে তাকে ধর্ষণ করে এবং পরে ২ নম্বর আসামি রমজানও তাকে ধর্ষণ করে। কিন্তু সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে জসিম উদ্দিনের নির্মিতব্য বাড়ির কোথাও দরজা জানালা নেই। ফ্লোর জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী।
ঘটনাস্থল বাড়ির মালিক জসিম উদ্দিনের ভায়রা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ভায়রা প্রবাসে থাকে। আমি গত দেড় বছর ধরে ভায়রার হয়ে এই বাড়ির কাজ করাচ্ছি। সকাল থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজ করে। ৫ জন শ্রমিক ভবনেই থাকে। ভবনের নিচ তলার পুরো ফ্লোরে পানি। ইট সিমেন্ট, বালু এবং সরঞ্জামাদী ছড়িয়ে ছটিয়ে আছে। শ্রমিক জহিরুল, আদিল ও কাদির জানান, আমরা চারজন ভবনের দোতলায় রাতে থাকি। এখানে থেকেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করি। এই ভবনে এমন কোন ঘটনা ঘটলে তো আমাদের জানার কথা।
মহসিনের ছোট ভাই বেলাল বলেন, আমার ভাইকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করার পর তার প্রথম স্ত্রী তার ভাইদের নিয়ে আমার ভাইয়ের উত্তরার রূপালী গ্রæপের অফিসে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস, চেকবই ও জায়গা-জমির কাগজপত্রসহ ৬ লাখ ৭৫ হাজার নগদ টাকা নিয়ে যায়। এছাড়া থানায় দেখা করে প্রথম স্ত্রী নাছরিন নগদ ৩০ লাখ টাকা ও ব্যবসার অংশীদারিত্ব দাবি করেন। এগুলো দিলে তিনি মামলাটি আপোষ মীমাংসা করিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেন। এ থেকে আমাদের অনুমান বড় ভাবিই এ ঘটনা সাজিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ৭ মাস আগে আমার ভাই দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপরই আমার বড় ভাবী তাকে শায়েস্তা করার জন্য এবং সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার জন্য নানা ফন্দি করে। তারই অংশ হিেেসবে ভাড়া করা অন্য নারীকে দিয়ে কথিত ধর্ষণ মামলা। যা সুষ্ঠু তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
রমজানের স্ত্রী মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার স্বামী বাড়িতে ঘুমাইয়া ছিল। তারে ফাঁসানোর লাইগা এই মামলা করা হইছে। যে জীবনে কখনও ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জে যায় নাই সে কেমনে নারায়ণগঞ্জে গিয়া ধর্ষণ করলো?’ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন রমজান চা বিক্রেতা। তার কল লিস্ট চেক করে দেখা গেছে সে ঘটনার আগে পরে সিদ্ধিরগঞ্জে আসেনি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ঘটনার পর ওই নারী ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করেন। পরে থানা থেকে একজন এসআইকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। কিন্তু ওই নারী কোথায় ধর্ষিত হয়েছে সেই ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে পারেনি। পরদিন সকালে ওই নারী জানায় সে জনৈক জসিমের নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলার একটি রুমে ধর্ষিত হয়েছে। পরে থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। তিনি আরও বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভিকটিম ও বিবাদীদের ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।