Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরাতে সর্বদলীয় জোট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:২৪ পিএম

এ সময়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও অধিকৃত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরাতে বিভেদ ভুলে একজোট হলেন জম্মু-কাশ্মীরে নেতারা। ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির প্রতিবাদে জম্মু-কাশ্মীরে এক সময় ক্ষমতায় থাকা দুই দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) উভয়ে বৃহস্পতিবার এই জোট ঘোষণা করেছে। তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন পিপলস কনফারেন্সের নেতা সাজ্জাদ লোনও। রয়েছে অন্যান্য ছোট দলও।

নতুন এই জোটের নাম দেয়া হয়েছে – পিপলস অ্যালায়েন্স ফর গুপকার ডিক্লেয়ারেশন। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়া ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবিতে এই জোট এবার থেকে বড়সড় আন্দোলনে নামবে বলে এদিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন ফারুক আবদুল্লা। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ফারুক আবদুল্লাহর বাড়িতে বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি, পিপলস কনফারেন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ লোন, পিপলস মুভমেন্টের নেতা জাভেদ মির ও সিপিএমের মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি উপস্থিত ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ সেই বৈঠকের পর ফারুক বলেন, ‘আজ একটি জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই জোট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা ফেরানোর চেষ্টা করবে।’ বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর কংগ্রেস প্রধান গুলাম মির শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি।

২০১৯-এর ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ওই রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা তুলে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ – দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে দেয়ার আইন পাশ হয় ভারতের সংসদে। কেই যাতে প্রতিবাদ করতে না পারে, এ কারণে আটক করা হয় রাজনৈতিক নেতাদের। চাপিয়ে দেয়া হয় কারফিউ। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত প্রথম থেকেই মেনে নিতে পারেনি ন্যাশনাল কনফারেন্স। ফারুক আবদুল্লারা কেন্দ্র বিরোধী সুর চড়িয়েছিলেন। পাশাপাশি, মেহবুবা মুফতির পিডিপি, বিজেপির হাত সাথে মিলে রাজ্যে জোট সরকার গড়েছিল বলে তাদেরও কম তোপের মুখে পড়তে হয়নি।

৩৭০ ধারা উঠে জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পর রাজ্যবাসীর সুরক্ষার স্বার্থ দেখিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিকে প্রথমে গৃহবন্দি, পরে আটক করে বন্দি শিবিরে রাখা হয়েছিল। বর্ষীয়ান ফারুক আবদুল্লা অবশ্য গৃহবন্দিই ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছিল জাতীয় নিরাপত্তা আইন (এনএসএ)। একবছরের কাছাকাছি সময়ে বন্দি থাকার পর মুক্তি পেয়েছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। মেহবুবা মুফতি তখনও বন্দিশিবিরে। তার মুক্তির দাবিতে সরব হন তার মেয়ে। শেষমেশ ১৪ মাস পর দিন দুই আগে তিনি মুক্তি পান।

মেহবুবা মুফতি বাড়ি ফেরার পর তার সঙ্গে দেখা করতে যান ফারুক এবং ওমর আবদুল্লা। তখনই জল্পনা শুরু হয়েছিল, তাহলে কি প্রতিপক্ষ দুই রাজনৈতিক শিবিরের মধ্যে বন্ধুত্ব হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টা না কাটতেই তা সত্যি হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার ফারুক আবদুল্লার নেতৃত্বে রাজ্যের সবক’টি মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলের মধ্যে বৈঠকে একজোট হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এবার থেকে পিডিপি-এনসি-পিসি সবাই লড়বেন ৩৭০ ধারা ফেরানোর দাবিতে। ইতিমধ্যে রাজ্যের স্বার্থে রাজনৈতিক লড়াইয়ে গঠিত এই জোটকে ‘পাকিস্তানের হাতের পুতুল’ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। সূত্র: টাইমস নাউ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ