Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিহারে প্রার্থী তালিকায় অপরাধীদের ছড়াছড়ি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ৩:০৭ পিএম

আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে তুমুল প্রচারণা চলছে বিহারে। কিন্তু যাদেরকে ভরসা করে মনোয়ন দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি, তাদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে খুন, জালিয়াতি এবং রাহাজানির মতো গুরুতর অপরাধ মামলা চলছে। এ ব্যাপারে বিজেপি ও কংগ্রেস খানিকটা গা বাঁচিয়ে চললেও, লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল (জেডিইউ) একে অপরের সাথে পাল্লা দিচ্ছে।

আগামী ২৮ অক্টোবর থেকে তিন দফায় বিধানসভা নির্বাচন বিহারে। তার আগে নির্বাচন কমিশনের নিয়মাবলী মেনে দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা অপরাধের তালিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলি। তাতেই বিষয়টি সামনে এসেছে। এর মধ্যে আরজেডি-র যে সমস্ত নেতার নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অনন্ত সিংহ। এ বছর তাকে মোকামা থেকে দাঁড় করানো হয়েছে। ১টা বা ২টা নয়, সবমিলিয়ে অনন্তের বিরুদ্ধে মোট ৩৮টি গুরুতর অপরাধের মামলা ঝুলছে। এর মধ্যে খুনের মামলাই রয়েছে ৭টি। এ ছাড়াও রয়েছে অপহরণ, জমি দখল, শ্লীলতাহানি এবং খুনের চেষ্টার মতো মামলাও। ২০০৭ সালে রেশমা খাতুন নামের একটি মহিলার শ্লীলতাহানি এবং খুনের মামলায় নাম জড়ায় অনন্তের। সেই নিয়ে তার সাক্ষাৎকার নিতে গেলে দুই সাংবাদিককে তিনি নিজের বাংলোয় পণবন্দি করেন বলেও শোনা যায়।

এত কিছুর পরেও বরাবর রাজনৈতিক দলগুলি অনন্তকে আড়াল করে এসেছে। একসময় নীতীশ কুমারেরও ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এমনকি জেডিইউয়ের টিকিটে ভোটেও দাঁড়িয়েছিলেন। পরে সেই সম্পর্কে ছেদ পড়ে। তবে তার জন্য রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে কখনওই বঞ্চিত হননি অনন্ত। তার স্ত্রী নীলমদেবীও সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। অনন্তকে প্রার্থী করায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে বিহারে। কিন্তু আরজেডি’র যুক্তি, অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয়তা রয়েছে অনন্ত সিংহের। দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের একমাত্র সহায় তিনি। তাকে দাঁড় করানোর অর্থ জয় একরকম নিশ্চিত। তবে অনন্ত একা নন, আরজেডির বেলাগঞ্জের প্রার্থী সুরেন্দ্র যাদব, শাহপুরের প্রার্থী রাহুল তিওয়ারি, জামুইয়ের প্রার্থী বিজয় প্রকাশ, নোখার প্রার্থী অনিতাদেবী, দেহরির প্রার্থী ফতেহ বাহাদুর সিংহ-সহ কমপক্ষে আরও ২০ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, প্রতারণা এবং হামলা চালানোর মতো গুরুতর মামলা রয়েছে। এ নিয়ে আরজেডি-র উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন জেডিইউ মুখপাত্র রাজীব রঞ্জন। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘আরজেডি যে তথ্য তুলে ধরেছে, তাতেই ওদের দলের চরিত্র বোঝা যাচ্ছে। খুন এবং তোলাবাজির অভিযোগ থাকলেও, ওই সমস্ত লোকজন জনপ্রিয়। সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আসন জেতাই লক্ষ্য ওদের। এতেই বোঝা যায় বিকাশ ঘটলেও, আরজেডি আগের জায়গাতেই রয়েছে।’

কিন্তু মুজফ্ফরপুর শেলটার হোম–কাণ্ডে অভিযুক্ত মঞ্জু বর্মাকে যারা টিকিট দিয়েছে, তাদের অন্য কোনও দলের সমালোচনা করা চলে না বলে জেডিইউ-কে পাল্টা আক্রমণ করেন আরজেডি মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি। মঞ্জু বর্মা ছাড়াও, অমরেন্দ্র পান্ডে, মনোরমা দেবী-র মতো একাধিক অপরাধে অভিযুক্তদের ভোটে দাঁড় করিয়েছে জেডিইউ। গোপালগঞ্জের তিন খুনের মামলায় স্থানীয় আরজেডি নেতার মা-বাবা এবং ভাইকে খুনে অভিযুক্ত অমরেন্দ্র পান্ডে। মাফিয়া ডন বিন্দি যাদবের স্ত্রী মনোরমাদেবীকে আত্রি থেকে দাঁড় করানো হয়েছে।

এলোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) চার বারের বিধায়ক সুনীল পান্ডে এ বার সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। ২০১২ সালে রণবীর সেনার প্রধান ব্রহ্মেশ্বর মুখিয়া হত্যায় নাম জড়িয়েছিল তার। কুখ্যাত ডন মুখতার আনসারির খুনে তাকে গ্রেফতারও করা হয়। একে-৪৭ রাখা নিয়ে এই মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সূত্র: এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ