Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সকল প্রতিবন্ধকতা ঠেলে অবশেষে হাথরসে পৌঁছলেন রাহুল-প্রিয়াঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২০, ৪:৫৫ পিএম

পুলিশি লাঞ্ছনা, গ্রেফতার, প্রতিবন্ধকতা, নিষেধাজ্ঞা, দিনভর ভোগান্তি। এমন একের পর এক প্রতিবন্ধকতা পাড়ি দিয়ে শেষ পর্যন্ত হাথরসের মাটিতে পা রাখলেন ভারতীয় কংগ্রেসের অন্যতম নেতা রাহুল গান্ধী এবং বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। সঙ্গে তিন সদস্যের দলীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে যখন নির্যাতিতার বাড়ির আঙিনায় তারা, গোটা হাথরসের গুমোট নিস্তব্ধতা ভাঙলো বর্বর সংঘবদ্ধ ধর্ষণকাণ্ডে নিহত সেই কিশোরীর মায়ের বুকফাঁটা কান্নায়। নানা মহলের চাপ আর বিশেষ করে যোগী নাথের পুলিশি ঘেরে অবরুদ্ধ হাথরসে যে ভয়াল নিরবতা বিরাজ করছিলো। ঠিক যেন তার বুক চিড়ে সেখানে পৌঁছান রাহুল-প্রিয়াঙ্কা। অজানা আতঙ্কে মেয়ের মৃত্যুর যে যন্ত্রণা বুকে চেপে স্তব্ধ হয়েছিলেন মা। প্রিয়াঙ্কার বুকে মাথা ফেলে অবশেষে অঝোরে কাঁদলেন নিজের মেয়ের জন্যে। দাবি তুললেন, হাথরসের আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।
রাহুল-প্রিয়াঙ্কার উপস্থিতিতে এমনই মর্মবিদারক দৃশ্যের অবতারনা ঘটে হাথরসের গ্রামটিতে। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সেখানে সাক্ষাৎ করলেন কংগ্রেস নেতারা। যোগী সরকারের কাছ থেকে অনুমতি আদায় করে শনিবার রাতে হাথরসের বুল গড়হী গ্রামে নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছন গান্ধী ভাই-বোন। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসের আরও তিন নেতা। সেখানে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তারা। মন দিয়ে তাদের অভিযোগ শোনেন। নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন প্রিয়ঙ্কাকে মেয়ের ছবিও দেখান। আনন্দবাজার
সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে প্রিয়ঙ্কা বলেন, শেষ বারের মতো নিজেদের মেয়েকে দেখতেও পাননি তারা। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নিজের দায়িত্ব বোঝা উচিত। আপনাদের মাধ্যমে এই বার্তা পাঠাতে চাই, নির্যাতিতার পরিবারের ন্যায় প্রাপ্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। নির্যাতিতার পরিবার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চান। অপসারণ চান জেলাশাসকের। ওদের নিরাপত্তাও দিতে হবে।
এদিকে ভাই রাহুল গান্ধী বলেন, এটা মর্মান্তিক। পৃথিবীর কোনও শক্তি নির্যাতিতার পরিবারকে চুপ করিয়ে রাখতে পারবে না।
প্রসঙ্গত রাহুল-প্রিয়াঙ্কার প্রথম দফা হাথরস যাত্রা বিঘ্নিত হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বাধায়। এর আগে হাথরস যাওয়া নিয়ে গত দু’দিন ধরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে টানাপড়েন চলছিল বিরোধীদের। রাহুল-প্রিয়াঙ্কার প্রথম দফা হাথরস যাত্রা বিঘ্নিত হয় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বাধায়। যার এক পর্যায়ে লাঞ্ছিত হন রাহুল গান্ধী। এর পর তাদের দুই ভাইবোনকেই সাময়িকভাবে আটক করা হয়। অবশেষে শনিবার বিরোধীদের রাস্তা ছেড়ে দিতে হয় যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে। রাজনৈতিক চাপে কোনঠাসা যোগীকে, সাম্প্রতিক হাথরসকাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা সাধারণ ভারতীয়রা শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের রক্তচক্ষু দেখিয়ে দিয়েছেন।
এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ শশী তারুর-সহ দলের ৩০ জন সাংসদকে নিয়ে হাথরসের উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা। বহরের নেতৃত্বে রূপালি টয়োটা ইনোভার স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন খোদ প্রিয়ঙ্কা। আর বোনের পাশেই ছিলেন রাহুল। পিছনে একটি বাসে ছিলেন দলের সাংসদরা। কিন্তু দিল্লি-নয়ডা ফ্লাইওয়ে-তে ওঠার মুখে তাদের রাস্তা আটকাবার চেষ্টা চালায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এদিনও দাবি ঐ একই, কংগ্রেস নেতারা ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করছেন। কিন্তু এক পা-ও পেছাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর সেখানেই গাড়ি থামিয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা শুরু করেন রাহুল। এর ঘণ্টাখানেক পরই তাদের হাথরসে যাওয়ার অনুমতি দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। সূত্র : আনন্দবাজার



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ