মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আজারবাইজানের বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনী। এ ঘটনায় সোমবার দেশটিকে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে আজারবাইজান। বাকুর প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজারবাইজানীয় শহর টেরটারে সোমবার সকাল থেকেই আর্মেনিয়ান বাহিনীর হামলায় আগুন লেগেছে। এতে বলা হয়, আর্মেনিয়াকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শেষ বারের মতো সতর্কতা দেয়া হচ্ছে, যদি প্রয়োজন হয় তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধম‚লক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংঘর্ষের সময় আর্মেনিয়ার ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংসের ছবিও শেয়ার করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তুর্কি সংবাদ মাধ্যম আনাদোলুর খবরে বলা হয়, রোববার সীমান্তে আর্মেনিয়ার বাহিনী আজারবাইজানের বেসামরিক এলাকায় স্থানীয় বসতিতে হামলা চালায়। পাশাপাশি কারবাখ অঞ্চলে দেশটির সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়। রোববারে শুরু হওয়া সংঘর্ষে অনন্ত ২৩ জন নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। বলা হচ্ছে, প্রকৃত পক্ষে নিহতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। একসময় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান– উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর দেশ দুটি স্বাধীন হয়। তার পর থেকে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে গত চার দশক ধরে বিরোধে জড়িয়ে আছে দুই প্রতিবেশী। অপর এক খবরে বলা হয়,নাগোর্নো-কারাবাখ বিতর্কিত এলাকা নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আর্মেনীয়দের দেশটির শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। রবিবার তিনি আর্মেনীয়দের ভবিষ্যতের জন্য যেসব নেতারা তাদের বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের পুতুলের মতো ব্যবহার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান। প্রতিবেশী দুই দেশের সংঘাতে আর্মেনিয়ার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। দেশটির পক্ষ থেকে এই হামলাকে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে উসকানি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। টুইটারে এরদোগান আরও লিখেছেন, দখল ও নির্মমতার বিরুদ্ধে বিশ্বকে আজারবাইজানের পাশে থাকার আহবান জানাচ্ছি। আজারবাইজানের পাশে ক্রমবর্ধমান সংহতি তুরস্ক অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছেন এরদোগান। বিরোধপ‚র্ণ নাগোরনো-কারাবাখ এলাকা নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া এ লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে। প্রতিবেশী দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার লড়াই বন্ধের আহবান জানিয়েছে ইরান। দেশটির মুখপাত্র জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত রয়েছে তেহরান। এদিকে সংঘর্ষ শুরু হতেই বিবৃতি দেয় রাশিয়া। মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, উভয় দেশকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি করে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধান করতে হবে। অপরদিকে, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানকে সীমান্ত সংঘাত বন্ধ করে অবিলম্বে কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংলাপে বসার আহবান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। রোববারের সংঘর্ষে বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে মহাসচিব বলেছেন, খুব শিঘ্রই তিনি দু’দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবেন। এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল ওই দুই দেশের মধ্যে সংঘাত বন্ধ করে নিঃশর্ত আলোচনায় বসার জন্য আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। এর আগে কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ওই অঞ্চলে রোববার সকালে দু’দেশের সেনাবাহিনী পরস্পরের উদ্দেশ্যে ভারী গোলাবর্ষণ করে। গত কয়েক মাস ধরে সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ না নেয়ার পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয় দেশ ‘বিনা উসকানিতে আগে গোলাবর্ষণ’ করার জন্য পরস্পরকে অভিযুক্ত করেছে। এর আগে গত জুলাই মাসে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষে বেশ কিছু মানুষ হতাহত হয়। ১৯৮০’র দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এ সংঘর্ষে ৩০,০০০ মানুষ প্রাণ হারায়। কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভেতরে হলেও ইয়েরেভান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করছে আর্মেনীয় বংশোদ্ভূতরা। এদিকে প্রতিবেশী দুই দেশ আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যকার লড়াই বন্ধের আহবান জানিয়েছে ইরান। রবিবার এক বিবৃতিতে ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদেহ জানিয়েছেন, আলোচনা ও যুদ্ধবিরতির জন্য মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত আছে তেহরান। আনাদোলু, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।