২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের দেশের মানুষ তেমন স্বাস্থ্য সচেতন নয়। সভ্যতার অগ্রগতির সাথে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ । এদের মধ্যে কিছু কিছু অসুখ আমাদের সবার জন্য খুব বিপদজনক। এসব অসুখে প্রাণহানিরও আশংকা থাকে। স্ট্রোক তাদের মধ্য অন্যতম।
আমাদের দেহে রক্তে অনেক সময় চর্বি বেড়ে যায়। এমন হলে তখন তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন কারণেই এরকম হতে পারে। তবে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে আছে অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণ এবং ব্যায়াম না করা। কারণ যাই হোক রক্তে চর্বি বেশি থাকলে ধমনীর গায়ে চর্বি জমা হতে থাকে। এর ফলে ধমনী সরু হতে থাকে। ধমনী সরু হলে রক্তের সঞ্চালন সীমিত হতে থাকে। কখনও কখনও রক্ত সঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই বন্ধ হওয়া যদি হার্টের করোনারি ধমনীতে হয় তখন দেখা দেয় হার্ট অ্যাটাক। হার্ট এটাক খুব বিপদজনক। এর ফলে বিভিন্ন জটিলতা সহ তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে। আর যদি মস্তিষ্কের মধ্যে এই ঘটনা হয় তখন হয় স্ট্রোক।
যেহেতু চর্বির আধিক্যের কারণেই বিভিন্ন জটিলতা ঘটে তাই চর্বির ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। চর্বি গ্রহণ কমাতে হবে। ফলমূল এবং শাকসবজি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। তেলে ভাজা খাবার কম খেতে হবে। বছরে অন্তত একবার রক্তের চর্বি মাপতে হবে। এর জন্য লিপিড প্রোফাইল টেস্ট বলে একটি পরীক্ষা আছে। এই পরীক্ষা করাতে হবে। রক্তের বিভিন্ন ধরনের চর্বি থাকে। এর মধ্যে আছে কোলেস্টেরল , ট্রাইগ্লিসারাইড, এলডিএল ও এইচডিএল। রক্তে এসবের নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। প্রতিবছর পরীক্ষা করে দেখতে হবে এই মাত্রা স্বাভাবিক আছে কিনা। এগুলোর আদর্শ মাত্রা হচ্ছে কোলেস্টেরল ২০০ মিলিগ্রামের কম, ট্রাইগ্লিসেরাইড ১৫০ মিলিগ্রামের কম, এলডিএল ১০০ মিলিগ্রমের কম এবং এইচডিএল ৪০ মিলিগ্রামের বেশি। এই মাত্রার বেশি হলেই হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার ফ্যাটি লিভারসহ নানারকম রোগ দেখা দেয়।
খাবারে যত বেশি চর্বি থাকবে রক্তের চর্বি তত বেশি বেড়ে যাবে। তাই সচেতন হতেই হবে। আবার হোটেল-রেস্টুরেন্টের খাবার, দাওয়াতের খাবারে প্রচুর তেল চর্বি থাকে। এসব বেশি খেলে রক্তের চর্বির পরিমাণ বেড়ে যায়। কোন কোন পরিবারে বংশানুক্রমিকভাবে চর্বির মাত্রা বেশি থাকতে দেখা যায়। মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলেও রক্তে চর্বি বেড়ে যায় ।
স্ট্রোক এবং হৃদরোগের হাত থেকে বাঁচতে অবশ্যই চর্বি গ্রহণ কমাতে হবে। নাহলে যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা ।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাবনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।