বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পরিবেশ উন্নয়নে বিশ^ব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে রাজশাহী মহানগরী। সবচাইতে পরিবেশ বান্ধব শহর হিসেবে রাজশাহী অর্জন করেছে “এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি সিটি অফ দ্যা ইয়ার-২০২০” সম্মাননা। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। চ্যানেল আই প্রকৃতি মেলা ১০ম বর্ষে পদার্পণে ১ম বারের মত এ পদক প্রদান করা হয়। জিরো সয়েল প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরোপনসহ বহুমুখী উদ্যোগের কারণে ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকারণ ধূলিকণা কমাতে বিশ্বের সেরা শহর নির্বাচিত হয় রাজশাহী।
দেশের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ও পরিচ্ছন্ন শহর রাজশাহী মহানগরী। বাতাসে ভাসমান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কণা দ্রæত কমিয়ে এনেছে রাজশাহী মহানগরী। যে নগরবাসী দুর্গন্ধমুক্ত নির্মল বাতাসে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারেন। সড়ক বিভাজক, সড়ক দ্বীপে এবং ফুটপাথে লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির নানান রঙের ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে মহানগরী। যা রাজশাহীতে ঘুরতে আসা দেশি-বিদেশী পর্যটকসহ সকলেই নজর কাড়ছে, শহরের সৌন্দর্য্য মুগ্ধ করছে সবাইকে। আর এই সাফল্যের রূপকার হচ্ছেন বৃক্ষপ্রেমী নগরপিতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। তার দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন, উন্নত ও বাসযোগ্য শহর পেয়েছেন মহানগরবাসী। মহানগরীকে সবুজায়ন,পরিবেশ সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম সরাসরি তদাকরি করছেন তিনি।
রাসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রথমবার মেয়র থাকাকালে রাজশাহী মহানগরীকে সবুজের মহানগরীতে পরিণত করতে দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে ‘জিরো সয়েল প্রকল্প’ নামক সবুজায়ন প্রকল্প করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব ঠেকাতে, শহরের রাস্তা ও ফুটপাথ বাদে অবশিষ্ট ফাঁকা জায়গা সবুজ গাছে ঢেকে দিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সবুজ ও ফুলে ফুলে নবরূপ পেয়েছে গ্রিন সিটি খ্যাত রাজশাহী মহানগরী। ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয়বারের মতো মেয়রের দায়িত্বগ্রহণের পর প্রথমেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, শহরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও সবুজায়ন ও ফুলে ফুলে সাজাতে নানাবিধ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। এরফলে রাজশাহী মহানগরী এখন ক্লিনসিটি, গ্রিন সিটি ও ফুলের সিটিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সবুজ হয়েছে শহরের প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তার সড়ক বিভাজক ও সড়ক দ্বীপ। নগরীর প্রধান সড়ক বিভাজক, সড়ক দ্বীপে এবং ফুটপাথে লাগানো হয়েছে সৌন্দর্য্যবর্ধক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এইগুলোর মধ্য উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পাম, রঙ্গন, কাঠ করবি, চেরি, এ্যালামুন্ডা , জারুল, সোনালু, বকুল, কৃষ্ণচূড়া, মহুয়া, হৈমন্তী, রাধাচূড়া, কাঞ্চন ইত্যাদি। এর ফলে বাতাসে ভাসমান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ক্ষুদ্র ধুলিকণা মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি পুরো নগরীর সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।
জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় রাসিক সবুজায়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। নগরের চারদিকে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে এবং পদ্মা নদীর চরে সবুজ বনায়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বায়ু দূষণরোধে নগরীর মধ্যে ডিজেলচালিত অটোরিকশার বদলে ইলেকট্রিক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালুর ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া কিছু কিছু সড়কে ইতোমধ্যে পরিবেশবান্ধব সোলার সিস্টেমের সড়ক বাতির মাধ্যমে রাতে আলোকিত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার্থে নগরীর সকল পুকুর সংরক্ষণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাসিক। ইতোমধ্যে দুইটি পুকুর সংরক্ষণ করে বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নির্দিষ্ট আরও ২২টি পুকুর ঘিরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। শুধু সংরক্ষণই নয় এসব পুকুরের পাড় বাঁধানো, সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে সেগুলোকে বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে রূপ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা যেমন হবে, নগরীর সৌন্দর্যও বাড়বে।
সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারি, শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের মাধ্যমে নগরীতে প্রচুর পরিমাণ বৃক্ষরোপন ও গ্রিনজোন সৃষ্টি করা হচ্ছে। ২০১৯ সালের জুন মাস হতে ডিসেম্বর’ ২০১৯ পর্যন্ত রাসিকের উদ্যোগে ৩২ হাজার ৪৪৬ টি গাছ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও লক্ষাধিক হেজ জাতীয় গাছ রাস্তার আইল্যান্ড ও শহরের ফাঁকা জায়গায় লাগানো হয়েছে। শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় লাগানো হয়েছে বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির গাছ। গাছগুলো হচ্ছে বৈলাম, তেলসুর, ধারমারা, উদাল, ঢাকিজাম, তিতপাই, গুটগুটিয়া, হলদু, বাটনা, গর্জন, বনজলপাই, ছাতিয়্,া শ্বেত চন্দন ও আগর। ২০২০ সালে ফাঁকা জায়গা এবং রাস্তার বিভাজন ও ফুটপাতে বৃক্ষরোপণের কার্যক্রম চলছে। ইতোমধ্যে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত সড়ক বিভাজন ও ফুটপাতে প্রায় ৬০০০টি বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে পলাশ, শিমুল, জারুল, কাঞ্চন, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, বকুল,ছাতিম ও মহুয়া ইত্যাদি। আলিফ লাম মিম ভাটার মোড় থেকে বুধপাড়া পর্যন্ত নবনির্মিত সড়ক বিভাজকে ও ফুটপাথে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। অন্যান্য নতুন সড়ক বিভাজক ও ফুটপাথে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া সামাজিক বনায়ন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করার জন্য ৪০ জন কাউন্সিলরদের মাধ্যমে প্রায় ৭৫২০ টি ফলজ ও ঔষুধি গাছ জনগণের মাঝে বিতরণ করে রোপন করা হয়েছে।
২০১২ সালের ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পরিবেশ পদক গ্রহণ করেন তৎকালীন রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম.খায়রুজ্জামান লিটন। একই বছর বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার এবং ২০০৯ সালেও বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করে রাসিক।
রাসিকের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ-উল-ইসলাম জানান, মেয়র মহোদয়ের পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় একটি পরিকল্পিত পরিচ্ছন্ন, সবুজ, পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত টেকসই মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পরিবেশ উন্নয়ন শাখা কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নাগরিকদের বাসাবাড়ির ছাদে ছাদ বাগান করার উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।