মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপকভাবে আলোচিত তার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো এনসিবি। কিন্তু তাকে হেনস্থা করায় ও দোষ প্রমাণিত হবার আগেই দোষী সাব্যস্ত করে ফেলায় ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছেন চলচ্চিত্র তারকারা। এর পেছনে ক্ষমতাসীন বিজেপি’র স্বার্থ হাসিলের রাজনীতি দায়ি বলে মনে করছেন অনেকেই।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তের অংশ হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার ভারতের নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো এনসিবি যখন মিস চক্রবর্তীকে ডেকে পাঠায়, তখন তিনি সেখানে পৌঁছলে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক হুড়োহুড়ি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তিনি সাংবাদিকদের ঘেরাও-এর মধ্যে পড়ে যেভাবে হয়রানির শিকার হন তার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরেই বলিউড তারকা ও চলচ্চিত্র নিমার্তারা রিয়ার প্রতি ভারতীয় সাংবাদিকদের আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। সংবাদমাধ্যমে, বিশেষ করে কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে রিয়া চক্রবর্তীকে নিয়ে যে ধরনের কভারেজ দেয়া হচ্ছে, তাতে সংবাদমাধ্যমের নিরপেক্ষতা যেমন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তেমনই বিচারের দায়িত্ব সঙ্গতভাবে আইনের হাতে তুলে দিতে তাদের ব্যর্থতা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। এনসিবি দফতরের বাইরে করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার এবং রিয়া চক্রবর্তীকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগও ওঠে। এই ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাও।
প্রসঙ্গত, সুশান্ত সিং রাজপুতকে গত ১৪ জুন মুম্বাইতে তার ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ বলে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। সিবিআই তার বান্ধবী রিয়া, পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা দায়ের করে। তিনি দোষী কিনা তা নিয়ে আদালতের বিচার এখনও শুরুই হয়নি। এমনকী তদন্তের কাজ যখন প্রাথমিক পর্যায়ে তখনই সুশান্তকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার দায়ে রিয়াকে রীতিমতো দোষী বানিয়ে ফেলেছে সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি এক শ্রেণির গণমাধ্যমও।
টেলিভিশনের উপস্থাপকরা তাকে ‘ধান্দাবাজ’ বলে বর্ণনা করে বলেছেন ‘সুশান্তকে তিনি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিলেন’। সিবিআই-য়ের হাতে এই মামলার তদন্তভার তুলে দেবার পর একটি টিভি চ্যানেলের সুপরিচিত একজন উপস্থাপক বলেন, ‘এটা ভারতের ইতিহাসে একটা অসামান্য মুহূর্ত।’ এ বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিক শিখা মুখার্জি জানান, তার চল্লিশ বছরের সাংবাদিক জীবনে তিনি টিভি চ্যানেলগুলোকে ‘এভাবে একজনকে দোষী প্রমাণ করার জন্য উঠে-পড়ে লাগতে দেখেননি’। তিনি বলেন, ‘যেখানে পুলিশ, সিবিআই এবং বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে, সেখানে সাংবাদিক হিসাবে আমার কাজ হবে তদন্তে কী বেরিয়ে আসছে তা রিপোর্ট করা। তা না করে চ্যানেলগুলো নিজেদের আঁচ অনুমান, বা শোনা কথার ভিত্তিতে তথ্য দিচ্ছে, নানা অভিযোগ এনে সাজিয়ে গুছিয়ে এমনভাবে তথ্য পরিবেশন করছে যাতে মনে হবে সুশান্তের মৃত্যুর জন্য রিয়াই দায়ী।’
আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইনের সম্পাদক অনিন্দ্য জানা বলেন, রিয়া চক্রবর্তীকে দোষী প্রমাণিত করার মধ্যে দিয়ে কিছু টিভি চ্যানেল ‘তাদের রাজনৈতিক প্রভুদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘সামনে বিহারের নির্বাচন এবং সুশান্ত বিহারের ভূমিপুত্র। বিহারের ক্ষমতাসীন দল কেন্দ্রে বিজেপির শরিক এবং সেখানে নির্বাচনী প্রচারে সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনাকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত ‘কদর্য’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
বলিউড তারকারা সংবাদমাধ্যমের এই আচরণকে ‘ন্যাক্কারজনক এবং জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। অভিনেত্রী তাপসী পান্নু তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘এই সাংবাদিকরা একজন মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার হিংস্রভাবে কেড়ে নিয়েছে, সে দোষী প্রমাণিত হবার আগেই।’ ভারতীয় প্রযোজকদের গিল্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘একজন তরুণ তারকার মর্মান্তিক মৃত্যুকে হাতিয়ার করে, গোটা চলচ্চিত্র শিল্প ও এর সাথে জড়িতদের সম্মান ধুলায় টেনে নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে সিনেমা জগতকে বাইরের মানুষের কাছে একটা ‘কলঙ্কময় অন্ধকার জগত হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে যা শুধুই নির্যাতন আর অপরাধের একটা জগত’। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।