Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মোট অর্থনীতির আকারকে ছাড়াবে মার্কিন ঋণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের যে পরিমাণ ব্যয় হচ্ছে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সর্বোচ্চে দাঁড়িয়েছে। আগামীতে সরকারি ঋণের পরিমাণ দেশটির পুরো অর্থনীতির আকারকে ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন নীতিনির্ধারকরা। কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস (সিবিও) সতর্ক করছে চলতি বছরে সরকার যে বাজেট ঘাটতির মধ্য দিয়ে যাবে, তা ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান-পরবর্তী সর্বোচ্চ হতে পারে। আগামী বছরে কেন্দ্র সরকারের ঋণ দেশটির পুরো অর্থনীতির আকারের সমান হতে পারে। ১৯৪৬ সালের পর প্রথমবারের মতো এত বিশালাকার ঋণে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র। শুনতে অবাক লাগতে পারে যে বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ মনে করছেন ঋণ যত বড়ই হোক না কেন, অর্থ ভালো কাজেই ব্যয় হচ্ছে বা অন্তত যথাযথ প্রয়োজনেই লাগছে। ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া মার্কিন পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। কিছু অর্থনীতিবিদ আবার বলছেন, সরকারের ঋণের পরিমাণ তত বেশি নয়। বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রমে গতি নিয়ে আসতে সরকার থেকে আরো ঋণ গ্রহণ করতে মুখিয়ে রয়েছে। সিবিওর প‚র্বাভাস, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া চলতি অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ব্যয় ও সংগৃহীত করের পার্থক্য বা বাজেট ঘাটতি ৩ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। এটা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৬ শতাংশ। গত ৭৫ বছরের মধ্যে এত বড় বাজেট ঘাটতি দেখেনি মার্কিন অর্থনীতি। আগামী বছর দেশটির এ ঘাটতি জিডিপির ১০০ শতাংশে দাঁড়াবে। ২০২৩ সালে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ২৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে, যা জিডিপির ১০৭ শতাংশ হতে পারে। এতে ১৯৪৬ সালে করা জিডিপির ১০৬ শতাংশ ঘাটতির রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। মার্চে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই মার্কিন সরকার গভীর ঋণে ছিল। তার পরে মহামারীটি আসায় শাটডাউনের ফলে অর্থনীতিতে দ্রæত পতন শুরু হয়। এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে জিডিপি ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ পতন হয়, যা ১৯৪৭ সালের পর রেকর্ড সর্বোচ্চ প্রান্তিকীয় পতন। মার্চ ও এপ্রিলের মধ্যে রেকর্ড ২ কোটি ২০ লাখ কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। এ সংকটে আমেরিকানদের সহায়তায় মার্চে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি সহায়তা বিল পাস করেছিল কংগ্রেস। অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে প্যাকেজটি আমেরিকানদের এককালীন ১ হাজার ২০০ ডলারের চেক প্রেরণ করেছিল এবং সাময়িক বেকারদের রাজ্যের বেকার সুবিধার বাইরেও সপ্তাহে সপ্তাহে ৬০০ ডলার করে দিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দ্রæতগতিতে দেশটির ঋণ বাড়তে থাকে। ১৯৬১ সালের মধ্যে তা অবশ্য জিডিপির ৪৪ শতাংশে নেমে আসে। সেই সাফল্যের পেছনে ছিল একটি দ্রæত বর্ধনশীল অর্থনীতি, যা সরকারকে ক্রমবর্ধমান রাজস্ব প্রদান করে এবং সরকারি ঋণ কমিয়ে ফেলে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি স¤প্রসারিত হয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ করে। আর্থিক ব্যবস্থাটি সরকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিল। নীতিনির্ধারকরা সুদহার কৃত্রিমভাবে কম রাখার এবং ঋণ পরিশোধের ব্যয় হ্রাস করার অনুমতি দেন। পরিস্থিতি এখন কিছুটা আলাদা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ