মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
হিন্দু জাতীয়তাবাদী মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি সপ্তাহে দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের সেখানে একই জেলায় দুই মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এবার ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় সেই রাজ্যে খুন করা হলো এক মুসলমান ট্যাক্সিচালককে।
নিহত ট্যাক্সিচালকের নাম আফতাব আলম বলে জানা গেছে। বয়স ৪৫ বছর। তিনি প্রথমে ট্যাক্সিতে একজন যাত্রী নিয়ে বুলন্দশহর যান। তাকে নামিয়ে রাতে ফেরার পথে দুই জন যাত্রীকে তোলেন। তাদের হাতেই খুন হন তিনি। আফতাবের ছেলে সারিব জানিয়েছেন, রাত আটটা নাগাদ আফতাব তাকে ফোন করেন। তিনি তখন একটি টোল প্লাজার কাছে ছিলেন। তার ধারণা হয়েছিল, তিনি ভুল লোককে ট্যাক্সিতে তুলেছেন। তারপর ফোনটা চালু অবস্থাতেই পাশে রেখে দেন। সারিব কল রেকর্ড করতে শুরু করেন। সেখানেই শোনা যায়, একজন বলছেন, ‘জয় শ্রীরাম বল’। আরেকজন বলছে, ‘ভাই তু জয় শ্রীরাম বোল’। এর মিনিট পনেরো পরে আফতাবের ফোনের ব্যাটারি শেষ হয়ে যায়। সারিব প্রথমে দিল্লি পুলিশে ফোন করেছিলেন। তারা জানায়, নয়ডায় গৌতম বুদ্ধ নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। সেইমতো তিনি নয়ডা পুলিশকে ফোন করেন।
গ্রেটার নয়ডা পুলিশ তারপর গাড়িটি উদ্ধার করে। তখন আফতাব চালকের সিটে। তার মাথায় ভারি জিনিস দিয়ে মারা হয়েছিল। চিকিৎসা করার সময়ই তার মৃত্যু হয়। গাড়ির যাত্রীরা কেউ ছিল না। সারিবের দাবি, ‘জয় শ্রীরাম’ না বলার জন্যই তার বাবাকে মারা হয়েছে। অডিও ক্লিপ তার কাছে আছে। সেই অডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
পুলিশ অবশ্য সারিবের কথা মানতে চায়নি। তাদের দাবি, ওই দুই সওয়ারি মাতাল ছিল। তারা ট্যাক্সি চুরি করার মতলবে উঠেছিল। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশের ধারণা, দুই জনই পাকা অপরাধী। অপরাধ ছাড়া এর পিছনে অন্য কোনো মোটিভ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দুই অপরাধী যদি গাড়ি চুরি করার মতলবে উঠে থাকে, তা হলে তারা গাড়ি চুরি করল না কেন?
ওই দুই ব্যক্তি কাকে জয় শ্রীরাম বলতে বলছিল? পুলিশের ব্যাখ্যা, দুই অপরাধী অন্য কাউকে জয় শ্রীরাম বলতে বলছিল। আফতাবকে নয়। নয়ডার জোন ২-এর এসিপি রাজীব কুমার বলেছেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে জানতে পারার পরই দাদরি পুলিশকে সতর্ক করে দেয়া হয়। দাদরির পুলিশই আফতাবের সুইফট ডিজায়ার গাড়ির সন্ধান পায়। চালকের মাথায় আঘাত ছিল। অভিযুক্তরা পলাতক। একটা অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে, জয় শ্রীরাম বলা নিয়ে। কিন্তু সেটা চালককে বলা হয়নি। গাড়ি যখন থেমেছিল তখন দুই অভিযুক্ত অন্য কাউকে ওই কথা বলছিল। এর মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক বিষয় নেই।’
পুলিশ অস্বীকার করলেও এর আগেও বিভিন্ন সময়ে উত্তর প্রদেশে ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় অনেক মুসলিমকে হত্যার খবর সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি’র নেতা যোগী আদিত্যনাথ। তিনি আবার একজন পুরোহিত। সরকারি মদদেই সেখানে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বেশিরভাগ ঘটনারই কোন বিচার হয়না। চলতি সপ্তাহে রাজ্যটির বরেলি জেলায় কয়েকদিনের ব্যবধানে ২ মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কোন ঘটনাতেই পুলিশ এখনো অপরাধী ‘খুঁজে’ পায়নি।
উত্তর প্রদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরা বেশ কিছুদিন ধরে প্রশ্ন তুলছে। এর আগে পুলিশের ফেক এনকাউন্টার নিয়েও প্রচুর প্রশ্ন উঠেছিল। এখন সাংবাদিক, দলিত, সংখ্যালঘু তো বটেই সব বর্ণের মানুষকে হত্যার অভিযোগ সামনে আসছে। ফলে যোগী আদিত্যনাথের আমলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন বিরোধীরা। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।