মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
অনেক চেষ্টা করেও ইরান ইস্যুতে অন্য দেশগুলোকে পাশে পেল না যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া, চীনের সাথে মঙ্গলবার ভিয়েনায় ইরানের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে উপেক্ষা করলো তাদের অন্যতম মিত্র ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি। ফলে, ইরানের সাথে অন্যান্য দেশগুলোর পরমাণু চুক্তি বহাল থাকল। মাঝখান থেকে বাদ পড়ে গেল যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল চাপের মুখেও ইরান ও আন্তর্জাতিক সমাজের মধ্যে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি টিকে গেল। বাকি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও চীন পরমাণু চুক্তি চালু রাখতে বদ্ধপরিকর। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে তেহরান কিছু শর্ত লঙ্ঘন করলেও এখনো পুরোপুরি চুক্তি বর্জন করে নি। মঙ্গলবার ভিয়েনায় এক বৈঠকে সব পক্ষ এমন অঙ্গীকার করেছে। ইরানের উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রচেষ্টার বিরোধিতার প্রশ্নেও ঐক্য অটুট রইলো।
আলোচনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি হেলগা স্মিড এক টুইট বার্তায় লেখেন, যে অংশগ্রহণকারীরা ইরান চুক্তি বাঁচিয়ে রাখতে ঐক্যবদ্ধ এবং বর্তমান চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বোঝাপড়া পুরোপুরি কার্যকর করার পথ খুঁজতে বদ্ধপরিকর।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে এলেও সেই চুক্তিকেই হাতিয়ার করে ইরানের উপর কার্যত জাতিসংঘের সব নিষেধাজ্ঞা আবার কার্যকর করতে চাইছে। ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করছে, এমন যুক্তি দেখিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সে দেশের বিরুদ্ধে ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া চালু করতে চাইছে ওয়াশিংটন। তবে, চুক্তির বাকি স্বাক্ষরকারী দেশ মার্কিন প্রশাসনের এক্তিয়ার ও যুক্তি মানতে নারাজ। ফলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে চলতি মাসেই বিষয়টিকে ঘিরে আবার সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে। প্রায় কোনো দেশই এই প্রশ্নে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একমত না হওয়ায় সেই উদ্যোগ বিফল হবে বলে পূর্বাভাষ দিয়েছেন আগস্ট মাসে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি দেশ ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডিয়ান ত্রিয়ানসিয়া জানি। চলতি মাসে সভাপতি হিসেবে নাইজারও সে বিষয়ে একমত।
নিরাপত্তা পরিষদে বিফল হলেও ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের উপর চাপ বাড়াতে রাখতে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে। পরমাণু চুক্তির অংশগ্রহণকারী দেশগুলির ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েও ট্রাম্প সে সব দেশের বিরুদ্ধে কী মনোভাব নেন, সে বিষয়েও জল্পনাকল্পনা চলছে।
ওয়াশিংটনের চাপের মুখে ও বাকিদের উপর চাপ বাড়াতে ইরান প্রকাশ্যে চুক্তির কিছু শর্ত লঙ্ঘন করলেও সার্বিকভাবে চুক্তি মেনে চলছে। আন্তর্জাতিক পরিদর্শনকারীদেরও সে দেশের বেশিরভাগ পরমাণু স্থাপনায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইরানী কর্তৃপক্ষ। সদিচ্ছা দেখাতে গত সপ্তাহে ইরান এমনকি দুটি গুদামে ইনস্পেকটরদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। সেখানে অঘোষিত পরমাণু উপাদান রাখা আছে বলে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। পরমাণু চুক্তির আগে সেই সব গুদাম চালু ছিল বলে ইরান এতকাল পরিদর্শনকারীদের সেখানে প্রবেশের সুযোগ দেয় নি।
পরমাণু চুক্তি সার্বিকভাবে মেনে চললেও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হচ্ছে না। বিশেষ করে অন্য দেশকে পরমাণু উপাদান সরবরাহের প্রশ্নে সংশয় দেখা দিচ্ছে। সে দেশ নাতানৎস পরমাণু কেন্দ্র থেকে উন্নত সেনট্রিফিউজ পাচার করেছে বলে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। জুলাই মাসে সেই কেন্দ্রে অন্তর্ঘাতের ঘটনা ঘটেছিল। ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ বলে তিনি দাবি করেন। সূত্র: এপি, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।